হাজার কেজি পিতলের প্রতিমা! প্রাচীন ঐতিহ্য আর আধুনিকতার মেলবন্ধনে চমক বাছরীতে
একাধারে প্রাচীন ঐতিহ্য আর সর্বধর্ম সমন্বয়, অন্যদিকে আধুনিকতার মেলবন্ধন এবার ধরা পড়েছে হাওড়ার শ্যামপুরের বাছরী ফুটবল মাঠের দুর্গাপুজোয়।
আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে বাংলার পুজোয়। বিগত বেশ কয়েক দশক ধরেই থিম-বৈচিত্র্যে সেজে উঠছে মণ্ডপ। তা বলে সাবেকিয়ানাকে কি আর বিদায় দেওয়া যায়! সাবেকিয়ানা আর প্রাচীন ঐতিহ্য ঠিক রয়েই যায়। তাই একাধারে প্রাচীন ঐতিহ্য আর সর্বধর্ম সমন্বয়, অন্যদিকে আধুনিকতার মেলবন্ধন এবার ধরা পড়েছে হাওড়ার শ্যামপুরের বাছরী ফুটবল মাঠের দুর্গাপুজোয়।
বিষয়-ভাবনায় এসেছে নতুন চমক। প্রতিবারই থিম আর বিষয় ভাবনায় নতুন কিছু পরিবেশন করার প্রচেষ্টা থাকে এই পুজোয়। এবারও তার অন্যথা হয়নি। এবার বাছরীর এই পুজোয় মণ্ডপসজ্জায় যখন প্রাচীন ঐতিহ্যকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, প্রতিমা-সজ্জায় আনা হয়েছে আধুনিকতা।
পুজো কমিটির পক্ষে তরুণ মেটিয়া বলেন, গ্রাম বাংলার বুকে পিতল ছিল ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। যে কোনও মাঙ্গলিক কাজে পিতলের ব্যবহারের প্রথা ছিল। সেই ঐতিহ্যবাহী পিতল ব্যবহার করেই আমরা এবার আমাদের পুজোর থিম বানিয়েছি। এবার প্রতিমাসজ্জার ব্যবহৃত হচ্ছে ১০০০ কেজি পিতল। বাছরী ফুটবল মাঠের দুর্গা-আরাধনায় এবারের চমক ১০০০ কেজি পিতলের প্রতিমা।
তিনি বলেন, একইসঙ্গে মণ্ডপসজ্জাতেও থাকছে বিশেষ চমক। ভারত মন্দিরের দেশ। স্থাপত্য, ভাস্কর্য, সংস্কৃতি দ্বারা নির্মিত মন্দির এ দেশে শোভাবর্ধন করছে বহুকাল ধরে। তেমনই এক মন্দির এবার উঠে এসেছে বাছরীর পুজোর থিমে। দিল্লির বিড়লা লক্ষ্মী-নারায়ণ মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। যা এবার পিতলের দুর্গা প্রতিমার পাশাপাশি অন্যতম আকর্ষণ হয়ে উঠেছে এই গ্রামে।
তরুণবাবুর কথায়, এই ঐতিহ্যশালী মন্দির উদ্ঘাটনে গান্ধীজি ১৯৩৯ সালে শর্ত রেখেছিলেন 'এই মন্দির কেবল হিন্দু সমাজের উচ্চ শ্রেণির জন্য হবে না। উচ্চ-নীচের বাধা সরিয়ে এই মন্দিরের দ্বার সবার জন্য খোলা থাকবে। 'বিড়লা মন্দিরের আদলে এ বছরে বাছরী ফুটবল মাঠের মণ্ডপও যেন সেই সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলবে এবার। জগৎজননী দেবী দুর্গার আরাধনায় সকল জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মহামানবের মিলনতীর্থ হয়ে উঠেছে বাছরী ফুটবল মাঠের দুর্গাপুজো মণ্ডপ।
বাছরী গ্রামে আরও একটি দুর্গাপুজো সকলের মন কেড়ে নেয়। বাছরী যুব সংঘের মাতৃ প্রতিমা এবার পরিবেশ বান্ধব রেশম সুতোর সুক্ষ কারুকার্যে নির্মিত হয়েছে। সেইসঙ্গে ভারতবর্ষের হেরিটেজ লাল কেল্লার আদলে মণ্ডপ তৈরি করেছেন পুজো উদ্যোক্তারা।