কেন্দ্র চাইলেও মমতা সরকারকে বরখাস্ত করা সহজ নয়, কী বলছে সংবিধান
মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের দ্বন্দ্বে কেন্দ্র ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করতে চাইলেও,অঙ্কের জেরে তা বাধাপ্রাপ্ত হবে। লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও, রাজ্যসভায় তা না থাকায় একমাসের মধ্যে সরকার ফেরতে হবে কেন্দ্রকে
মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের দ্বন্দ্বে অনেকেই মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা অবনতির অভিযোগে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন অর্থাৎ ৩৫৬ ধারা জারি হতে পারে। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী এই ধারা প্রয়োগ করলেও একমাসের মধ্যে তা লোকসভা এবং রাজ্যসভায় পাশ করাতে হবে।
তবে লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও রাজ্যসভায় তা না থাকায় সরকার ভেঙে দিলেও একমাস পরেই তা ফিরিয়ে আনতে হবে। তবে এই একমাসে নিজেদেরকে কিছুটা গুছিয়ে নেওয়ার সময় পাবে বিজেপি।
১৯৯৪ সালে কর্নাটকে জনতাদলের এসআর বোম্বাইকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে সরকার খারিজ করে দেয় কেন্দ্রের নরসীমা রাও সরকার। সেই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। মামলার জেরে সর্বোচ্চ আদালত সরকার ভাঙার একমাসের মধ্যে তা লোকসভা ও রাজ্যসভার পাশ করানোর পক্ষে মত দেন।
২৫ জুলাই ১৯৭৫-এর মধ্য়রাতে জারি হওয়ার সময় থেকে ১৯৭৭-এর ২১-এ মার্চের মধ্যে জরুরি অবস্থার মধ্যে অবশ্য কোনও সরকার ভাঙেনি ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। তবে সংবিধানের ৪২ তম সংশোধনীর মাধ্যমে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মেয়াদ ৫ থেকে বাড়িয়ে ৬ করে দেন।
বিষয়টি নিয়েও সর্বোচ্চ আদালতে মামলা হলে সেই মামলায় জিতে যান চরণ সিং। ফলে মোরারজি দেশাই সরকার ক্ষমতায় আসার পর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় পদত্যাগ করেন। কিন্তু বাকি সাত রাজ্যে কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও সরকারগুলি ভেঙে দেওয়া হয়।
স্বাধীনতার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গে ৪ বার রাষ্ট্রপতি শাসন অর্থাৎ সংবিধানের ৩৫৬ ধারা জারি করা হয়েছিল।
দেশে প্রথম ৩৫৬ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছিল কেরালায়। ১৯৫৯ সালের ৩১ জুলাই কেরলের ইএমএস নাম্বুদ্রিপাদের নেতৃত্বাধীন বাম সরকারকে খারিজ করে কেন্দ্রের জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। এখনও পর্যন্ত সারা ভারতে ১১৪ বার এই ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে।