তৃণমূলের অস্ত্রেই তৃণমূলকে ঘায়েল করার প্ল্যান, নয়া কর্মসূচিতে মাস্টারস্ট্রোক সিপিএমের
তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছতে জনসংযোগের জন্য নানা পন্থা অবলম্বন করেছিল। সরকারি দল সরকারকেও নিয়ে গিয়েছিল মানুষের দুয়ারে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলকে সক্রিয় করেছিল পাড়ায় পাড়ায়।
তৃণমূল মানুষের কাছে পৌঁছতে জনসংযোগের জন্য নানা পন্থা অবলম্বন করেছিল। সরকারি দল সরকারকেও নিয়ে গিয়েছিল মানুষের দুয়ারে। মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলকে সক্রিয় করেছিল পাড়ায় পাড়ায়। দুয়ারে সরকার, পাড়ায় পাড়ায় সমাধান কর্মসূচিতে যখন মাত দিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে, তখন তৃণমূলকে মাত দিতে সিপিএম নামল সম্মুখ সমরে।
সিপিএমের প্ল্যান তৃণমূলের অস্ত্রে তৃণমূলকে ঘায়েল করার। সেজন্য তাঁরা নতুন কর্মসূচি আনছে। শুনতে অনেকটা তৃণমূলের কর্মসূচির মতোই। কিন্তু আঙ্গিক আলাদা। বর্তমানে রামপুরহাটের ঘটনাকে সামনে রেখে সিপিএম নামছে রাজ্যব্যাপী অভিযানে। পাহারাদারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে সিপিএম। আর স্পষ্ট করে বললে পাবলিক পাহারায় নামছে সিপিএম।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ জমা হয়েছে। দুর্নীতিবাজদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে তৃণমূল। রামপুরহাটে খুন হওয়া তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ হোক বা গণহত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আনারুল শেখদের যেভাবে রাতারাতি উত্থান ঘটেছে, গাড়িচালক বা রাজমিস্ত্রি থেকে নেতা হয়ে উঠেছেন, তা-ই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ঢাল করে লড়াইয়ের ময়দানে নামছে সিপিএম।
তৃণমূলের এই পদস্ফলনের পথ ধরে সিপিএম আবার চাইছে নিজেদের বঙ্গ রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা করতে। কোন পথে হেঁটে সিপিএম ফের প্রাসঙ্গিক হবে বাংলার রাজনীতিতে তা দেখিয়ে দিয়েছেন সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। 'পাহারায় পাবলিক' নামে একটি কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে সিপিএমের পক্ষ থেকে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁরা পাড়ায় পাড়ায় ভাদু শেখদের খুঁজে বের করবেন।
সূর্যকান্ত মিশ্র এ বিষয়ে একটি পোস্ট করেছেন নিজের ফেসবুক ওয়ালে। তিনি এই পোস্টে লিখেছেন-রাজ্যজুড়ে তৃণমূলী নৈরাজ্যের অবসান ঘটাতে প্রতিটি এলাকায় ভলান্টিয়াররা এগিয়ে আসুন। পশ্চিমবঙ্গের বুকে দ্বিতীয় রামপুরহাট হওয়ার আগে, আপনার অঞ্চলে ভাদু শেখের মতো আঙুল ফুলে কলাগাছ হওয়া তৃণমূল নেতাদের চিহ্নিত করতে এই ফর্মটি ফিলাপ করে জমা দিন।
সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক আরও লিখেছেন- এই ফর্মফিলাপ করলে আপনার নাম ও অন্যান্য যাবতীয় তথ্য সম্পূর্ণভাবে গোপন ও সুরক্ষিত থাকবে। রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের নেতাদের তোলাবাজি, বেলাগাম দুর্নীতি রুখে দিতে, বে-আইনি অস্ত্র কারবারে লাগাম টানতে সিপিএম এই পন্থা অবলম্বন করেছে। আপনারা এগিয়ে আসুন, সাহায্য করুন সিপিএমকে। ফর্ম ফিলাপ করে আপনার অভিযোগ নথিভুক্ত করুন। ছবি বা ভিডিও পোস্ট করার জন্যও Email Id দেওয়া হয়েছে। তা হল[email protected]।
সূর্যকান্ত মিশ্রের এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, সিপিএমের নিজস্ব কোনও কর্মসূচি বা অ্যাজেন্ডা নেই বলে তৃণমূলের দুর্নীতি রুখতে এ ধরনের প্রয়াস নিয়েছে। আবার অনেকে বলেছেন, শাসকদলের ত্রুটি খুঁজে বের করে জনসংযোগে জোর দিতে চাইছে সিপিএম। কেউ কেউ বলেছেন বিরোধী দল হিসেবে সিপিএম এই কর্মসূচি নিয়ে বাংলার রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছে। এই পাহারায় পাবলিককে অনেকই সঠিক পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেছেন। লিখেছেন, এতদিন পরে সিপিএম ঠিকঠাক সিদ্ধান্ত নিল আন্দোলন ও জনসংযোগ চালানোর মতো।