তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলায় লেখার শাস্তি, ৩ মাসের জন্য অনিল কন্যা অজন্তাকে সাসপেন্ড করল সিপিএম
তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলায় লেখার শাস্তি, ৩ মাসের জন্য অনিল কন্যা অজন্তাকে সাসপেন্ড করল সিপিএম
তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রে মমতার হয়ে সম্পাদকীয় লিখেছিলেন অনিল বিশ্বাসের কন্যা এবং সিপিএমের সক্রিয় সদস্য অজন্তা বিশ্বাস। বিরোধী দলের মুখ পত্রে লেখার জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাবেই অবশেষে সিলমোহর দিল আলিমুদ্দিন। ৩ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হল অনিল কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে।
সাসপেন্ড অনিল কন্যা অজন্তা
গত কয়েকদিন ধরেই আলিমুদ্দিনে শোরগোল ফেলে িদয়েছিলেন দলের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাস। প্রবল বিরোধী রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র জাগো বাংলায় সম্পাদকীয় লিখেছিলেন তিনি। তাও আবার মমতার বন্দনা করেই। বামেরা অজন্তার এই লেখা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি। তাকে সাসপেন্ড করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে আলোচনার পর অবশেষে সাসপেন্ড করার প্রস্তাবেই সিলমোহর দেয় আলিমদ্দিন। ৩ মাসের জন্য সিপিএম থেকে সাসপেন্ড করা হল অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাসকে। দলের এরিয়া কমিটির সদস্য অজন্তা। তৃণমূলের মুখপত্রে সম্পাদকীয় লিখে দলবিরোধী কাজ করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে।
নতুন রূেপ জাগোবাংলা
একুেশর ভোটে বিপুল সাফল্যের পরেই দলের মুখপত্র জাগো বাংলা নিয়ে বিশেষ করে ভাবতে শুরু করে তৃণমূল কংগ্রেস। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে জাগো বাংলার ডিজিটাল সংস্করণের উদ্বোধন করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। প্রথম চমক ছিল জাগোবাংলায় সিপিএম নেত্রী অজন্তা বিশ্বাসের লেখা প্রকাশ করা। অনিল বিশ্বাসের কন্যা অজন্তা বিশ্বাস। তিনি বঙ্গ রাজনীতিতে নারীশক্তি বিষয়ক একটি প্রতিবেদন সম্পাদকীয় হিসেবে লিখেছিলেন। তাতে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা লেখা হয়েছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করেই সম্পাদকীয় লিখেছিলেন তিনি। এমনকী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেরা বাঙালি মহিলা রাজনীতিবিদ বলেও উল্লেখ করেছিলেন অজন্তা তাঁর লেখনীতে।
নন্দীগ্রাম লড়াইয়ের প্রসঙ্গ
বাম শাসনের পতনের অন্যতম পটভূমি ছিল নন্দীগ্রাম এবং সিঙ্গুর। সিপিএম নেত্রী অজন্তা বিশ্বাসের লেখনীতে নন্দীগ্রাম আন্দোলনে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল। তাতেই চমকে ওঠে আলিমুদ্দিন। প্রবল রাজনৈিতক প্রতিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রশংসা করে অজন্তার এই লেখা কিছুতেই মেনে নিতে পারেনি সিপিএম। তিনি দলবিরোধী কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। কারণ নন্দীগ্রাম আন্দোলন হয়েছিল বামের বিরুদ্ধেই। আর নিজে বাম নেত্রী হয়ে কীভাবে মমতার প্রশংসা করে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের কথা লিখলেন এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সিপিএম নেতারা। এর জন্য অজন্তাকে শোকজ করা হয়েিছল। সিপিএম নেত্রী জানিয়েছিলেন,দলমত নির্বিশেষে বাংলার রাজনীতিতে মহিলাদের লড়াইয়ের কথা তুলে ধরাই ছিল তাঁর মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু অজন্তার জবাবে সন্তুষ্ট হয়নি আলিমুদ্দিন। এরিয়া কমিটির সুপারিশ মেনেই সাসপেন্ডের প্রস্তাবে সিলমোহর দেওয়া হয়।
নিশ্চিহ্ন বামেরা
কংগ্রেস, আব্বাস সিদ্দিকিদের সঙ্গে জোট বেঁধে লড়তে গিয়ে এক প্রকার নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বামেরা। একুশের ভোটে একটি আসনও পায়নি বাম দলগুলি। কংগ্রেসেরও সেই দশা। প্রচারে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাম কর্মীসমর্থকদের তাঁদের ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। বিজেপিকে রুখতে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দিন বলে অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি। তারপরেই এই বিপর্যয়ের কারণ অনুসন্ধানে তৎপর হয় আলিমুদ্দিন। দলের অন্দরেই বিদ্রোহ জেেগ ওঠে। অবশেষে সিদ্ধান্ত হয় ৬০ বছরের উর্ধ্বে থাকা নেতাদের অবসর নিতে হবে।