রেড জোনে কনটেনমেন্ট এলাকা সিল রাজ্যের! ২০ এপ্রিল থেকে যা খোলা ও বন্ধ থাকবে
হাওড়ায় পরিস্থির নিয়ন্ত্রণে নামানো হয়েছে কমব্যাট ফোর্স। অন্যদিকে কলকাতাতেও নির্দিষ্ট এলাকাগুলিকে লকডাউন সম্পূর্ণভাবে মানতে বাধ্য করতে নেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা।
১৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফার লকডাউন বাড়ানোর সময় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন থাকলেও ২০ এপ্রিলের পর বেশ কিছু ক্ষেত্রে লকডাউন শিথিল করা হবে। শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্বিগ্ন দেখিয়েছে হাওড়া ও কলকাতার পরিস্থিতি নিয়ে। হাওড়ায় পরিস্থির নিয়ন্ত্রণে নামানো হয়েছে কমব্যাট ফোর্স। অন্যদিকে কলকাতাতেও নির্দিষ্ট এলাকাগুলিকে লকডাউন সম্পূর্ণভাবে মানতে বাধ্য করতে নেওয়া হয়েছে ব্যবস্থা।
রাজ্যের পরিস্থিতি
পশ্চিমবঙ্গের নিরিখে রবিবার সন্ধেয় প্রকাশিত বুলেটিনে বলা হয়েছে, রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯৮। করোনা মুক্তি হয়েছে ৬৬ জনের। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১২। হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি রয়েছেন ৫২৫ জন। রাজ্যের আক্রান্ত এলাকাকে রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোনে ভাগ করা হয়েছে।
রাজ্যে ছাড়
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মিষ্টির দোকান ছাড়াও ইতিমধ্যেই ছাড় দেওয়া হয়েছে কৃষিকাজে। এছাড়াও লকডাউন শুরু হওয়ার সময় থেকেই ছাড় রয়েছে মুদির দোকান, ওষুধের দোকান, মাংস ও মাছের বাজারে। খোলা রয়েছে ব্যাঙ্কও।
কেন্দ্রের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়েছে, নির্দিষ্ট কারণে ব্যক্তিগত গাড়ি, ই-কমার্স, পণ্য পরিবহণ, পরিষেবা, জরুরি পরিষেবা, কৃষিকাজ, নির্মাণ কাজে অনুমতি দেওয়া হয়েছে ২০ এপ্রিল থেকে।
তবে ২০ এপ্রিল থেকে ৩ মে-র মধ্যে চলবে না ট্রেন, মেট্রো, সাধারণের জন্য বাস। আপাতত ভাবে হোটেল, লজ সবই বন্ধ থাকবে। গুটকা ও তামাকজাত দ্রব্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। যেখানে সেখানে থুতু ফেলাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মেনে চলতে হবে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং।
যেসব জায়গায় বাড়তি নজরদারি
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে রাজ্যের ৪ জেলাকে হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জেলাগুলি হল উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর। এইসব জায়গায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিষেবা ছাড়া কোনও যাতায়াত বরদাস্ত করা হবে না বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে।
হটস্পট না হলে রাজ্যের সাত জেলাকে ক্লাস্টার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই জেলাগুলি হল, দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি, নদিয়া ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। এই জেলাগুলি থেকে আক্রান্তের হদিশ পাওয়া গিয়েছে।
রাজ্য এব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনেই কাজ করছে। তরে রাজ্যের তরফে হটস্পট কথাটি ব্যবহার করা হচ্ছে না। রেড জোন, অরেঞ্জ জোন শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন রেড জোন এলাকায় টোটাল লকডাউন হবে। সেক্ষেত্রে বাড়ি থেকে কেউ বেরোতে কিংবা ঢুকতে পারবেন না। ওষুধ কিংবা অন্য প্রয়োজনীয় জিনিস ঘরের দরজায় প্রশাসনের তরফে পৌঁছে দেওয়া হবে। মিডিয়াও এই হটস্পট এলাকায় ঢুকতে পারবে না। হটস্পট এলাকায় সশস্ত্র পুলিশ নামানের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই এলাকাগুলিকে কমব্যাট ফোর্স কাজ করতে শুরু করে দিয়েছে।
বেশ কিছু এলাকায় বাজারে মানুষের ভিড় পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায়, সেগুলিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে পাতিপুকুর মাছের বাজার, বাগুইআটির জগৎপুরের বাজার। হাওড়ার বেশ কিছু জায়গা, মধ্যমগ্রাম, মহেশতলার কিছু এলাকা, কলকাতার রাজাবাজারের মতো এলাকায় গার্ড রেল দিয়ে এলাকা ঘিরে দেওয়া হয়েছে।
দায়িত্ব ১২ নোডাল অফিসারকে
নবান্নের তরফে কলকাতা ও জেলাগুলির নজরদারির দাবিত্ব দেওয়া হয়েছে ১২ জন নোডাল অফিসারকে। একএকজন অফিসারের হাতে একাধিক জেলাও রয়েছে। প্রত্যেক দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে তাদের জেলা পরিদর্শনে যেতে হবে।
ওপরে উল্লিখিত জেলাগুলিকে বাদ দিয়ে বাকি জেলাগুলিকে গ্রিন জোনে রাখা হয়েছে। যে সব জেলায় গত ২৮ দিনে নতুন কোনও সংক্রমণের খবর পাওয়া যায়নি, সেইসব জেলাকে গ্রিন জোনে রাখা হয়েছে। ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এই জেলাগুলিতে নতুন কোনও সংক্রমের খবর না পাওয়া গেলে লকডাউন শিথিল করার সম্ভাবনা রয়েছে।