বড় সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক পদে অভিষেক
দোসো পার করে বঙ্গ গড় বাঁচানোর লড়াইয়ে নেপথ্য থাকা নায়ক। মাঠে নেমে খেলে একের পর এক গোল করেছেন। তৃতীয়বার নজির গড়ে বাংলার মসনদে তৃণমূল। আর জয়ের কৃতিত্বের সিংহভাগই ব্র্যান্ড মমতার পাশাপাশি 'ভাইপো' অভিষেককেই দেন রাজনৈতিক বি
দোসো পার করে বঙ্গ গড় বাঁচানোর লড়াইয়ে নেপথ্য থাকা নায়ক। মাঠে নেমে খেলে একের পর এক গোল করেছেন। তৃতীয়বার নজির গড়ে বাংলার মসনদে তৃণমূল। আর জয়ের কৃতিত্বের সিংহভাগই ব্র্যান্ড মমতার পাশাপাশি 'ভাইপো' অভিষেককেই দেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ থেকে তৃণমূল নেতারা স্বয়ং।
এমনকি যেভাবে দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাতে খোদ তাঁর উপর ভরসা বেড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। শোনাই যাচ্ছিল যে, তাঁকে হয়তো পুরস্কৃত করতে পারেন পিসি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই মতো দলে গুরু দায়িত্ব পেলেন তিনি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অর্থাৎ মুকুল রায় এককালে যে পদে আসিন ছিলেন, সেই আসনই পেলেন অভিষেক। শনিবার তৃণমূলের দলীয় বৈঠকের পর তাতেই সিলমোহর পড়ল। উল্লেখ্য, এর আগে যুব তৃণমূল সভাপতির পদ ছাড়েন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেই তিনি পদত্যাপত্র জমা করেন।
তাঁর বদলে এই পদে নিয়ে আসা হয় অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে। সূত্রের খবর, 'এক ব্যক্তি, এক পদ' নীতি মেনেই এই ইস্তফা। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই অভিষেককে দলের বড়সড় দায়িত্ব দেওয়া হল। এই সিদ্ধান্তের পরেই তৃণমূলে বিশেষ করে অভিষেক অনুগামীদের মধ্যে খুশির হাওয়া।
অনেকেই বলছেন, এতাই হওয়ার ছিল। অন্যদিকে নতুন প্রজন্মকে আগামীদিনে এগিয়ে দিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই কারণেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে নিয়ে আসলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিকমহলের একাংশ। ইয়াসের পর থেকেই কার্যত বদলাচ্ছিল ছবিটা।
অনেকেই 'মমতার ভাইপো' বলে কটাক্ষ করেন তাঁকে। আর সেই ইমেজটা ঝেড়ে ফেলে জননেতা হতে চাইছেন অভিষেক। আর সেই লক্ষ্যেই ইয়াসের পরেই মানুষের কাছে পৌঁছে যান ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ। কথা বলেন এলাকার মানুষের সঙ্গে। পাশে থাকার বার্তা দেন।
কার্যত এই ছবি দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। উল্লেখ্য, এবার ভোটে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোদী থেকে শাহ, রাজনাথ -স্মৃতির আক্রমণের নিশানায় ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সারা ভোটপর্বে যতবার বিরোধীদের মুখে শোনা গিয়েছে 'দিদি' কটাক্ষ, তার থেকে অন্তত কয়েকগুণ বেশি বার উচ্চারিত হয়েছে ভাইপোর নাম।
এবার ২১ এর নির্বাচন মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তো বটেই তার থেকেও বেশি ছিল অভিষেকের কাছে ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় কার্যত ভরাডুবি একাধিক বিধাণসভা আসনে। আর এরপরেই ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের শরণাপন্ন হন অভিষেক।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবুজ সঙ্কেত দিতেই দলের মধ্যে কাজ শুরু করেন প্রশান্ত। কিন্তু যে কৌশলে দলের মধ্যে কাজ শুরু করেন ভোট কৌশলী তাতে খুব অল্পদিনের মধ্যেই দলের মধ্যে কার্যত বিস্ফোরণ ঘটে। একের পর এক তৃণমূল বিধায়ক-সাংসদ বিস্ফোরক হয়ে অল ছাড়ার ঘোষণা করে।
ভোট যত এগিয়ে আসে তত লম্বা হয় বিদ্রোহীদের তালিকা। ভোট যত এগিয়ে এসেছে অভিষেকের উপর আক্রমণও বেড়েছে। তৃণমূল ছেঁড়ে আসা নেতারা তো বটেই, দিল্লির নেতারাও লাগাতার আক্রমণ শানিয়েছেন তাঁকে। একাধিক ইস্যুতে আক্রমণ হয়েছে।
স্ত্রী সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জেরা করতে সোজা বাড়িতে পৌঁছেছে সিবিআই। ঘন্টার পর ঘন্টা জেরা করেছে। কিন্তু মাথা ঠান্ডা রেখে প্রত্যেকটা অভিযোগের যোগ্য জবাব দিয়েছেন।
পালটা বহিরাগত সহ একাধিক ইস্যুতে বিরোধীদের জবাব দিয়েছেণ মুখ্যমন্ত্রী ভাইপো। আর যার ফল ভোট প্রকাশের পর পেয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো!
তবে পদ দিয়ে অভিষেকের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ দিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেটা রক্ষা করাই গুরু দায়িত্ব হবে অভিষেকের কাছে।