For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

সন্ধ্যে নামলেই ট্রেনের সঙ্গে ছোটে ভূত! ৪২ বছর কোনও ট্রেন থামেনি বাংলার এই স্টেশনে

সন্ধ্যে নামলেই ট্রেনের সঙ্গে ছোটে ভূত! ৪২ বছর কোনও ট্রেন থামেনি বাংলার এই স্টেশনে

  • |
Google Oneindia Bengali News

এ কাহিনি এমন এক রেল স্টেশনের, যেখানে ৪২ বছর কোনও ট্রেন থামেনি। বরং এই স্টেশন পার করার সময় ট্রেনের গতি আরও বাড়িয়ে দেন চালক। কিন্তু কেন এই স্টেশন কোনও ট্রেন দাঁড়ায় না, কেনই বা এই স্টেশন পার করার সময় ট্রেনের কামরার জানলা পর্যন্ত বন্ধ করে দেন যাত্রীরা। কারণ শুনলে চমকে উঠবেন।

এ এক ভুতুড়ে স্টেশনের গল্প, গায়ে কাঁটা দেয়

এ এক ভুতুড়ে স্টেশনের গল্প, গায়ে কাঁটা দেয়

প্রতি রাজ্যে, এমনকী প্রতিটি শহরেই এমন কিছু জায়গা থাকে, যাকে ভুতুড়ে আখ্যা দেওয়া হয়। তেমনই এটি হল এক ভুতুড়ে স্টেশন। এই স্টেশনকে ঘিরে ভূতের গল্প আছে। যেমন ভুতুড়ে জায়গা নিয়ে কিছু গল্প থাকে, যার কারণে মানুষ সেই স্থানকে পরিত্যক্ত করে দেয়, তেমনই এই স্টেশনের ক্ষেত্রেও এমন এক গল্প রয়েছে, যার জন্য এই স্টেশনে কোনও ট্রেন থামে না। সবাই এড়িয়ে যায় স্টেশনটিকে। ভুলেও এ পথে আসেন না কেউ।

৪২ বছর ধরে এই স্টেশনে কোনও ট্রেন থামেনি

৪২ বছর ধরে এই স্টেশনে কোনও ট্রেন থামেনি

এক-আধ দিন নয়, ৪২ বছর ধরে এই স্টেশনে কোনও ট্রেন থামেনি। স্টেশনের নাম শুনলেই মানুষ এখনও ভয় কেঁপে ওঠে। কিন্তু কেন এই রেলস্টেশনকে ভুতুড়ে স্টেশনের আখ্যা দেওয়া হয়েছিল এবং সেই গল্পটি এতটাই বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠেছিল যে, স্টেশনটিকে ৪২ বছর ধরে বন্ধ রেখেছে রেল কর্তৃপক্ষ। বন্ধ রাখার পিছনে ভূতের ভয়কে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পরিত্যক্ত স্টেশনে কোনও ট্রেন থামে না, কোনও যাত্রীও স্টেশনমুখো হয় না।

ওই ভুতুড়ে স্টেশনটি রয়েছে এই বাংলাতেই

ওই ভুতুড়ে স্টেশনটি রয়েছে এই বাংলাতেই

জানেন কি এই স্টেশনটি কোথায় অবস্থিত? আর কোথাও নয়, স্টেশনটির অবস্থান আমাদের বাংলাতেই। পুরুলিয়া জেলার বেগুনকোদর স্টেশন। পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়গ্রামকে জুড়েছে এই স্টেশনটি। এক ভূতের গল্পের জন্য জনপ্রিয় হয়ে ওঠে স্টেশনটি। স্টেশনটি ৪২ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে একটি মেয়ের কারণে। হ্যাঁ, একটি মেয়ের কারণে স্টেশনটিতে কোনও ট্রেন থামে না। স্টেশনটি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সুদীর্ঘকাল।

পুরুলিয়ার বেগুনকোদর স্টেশনে নাকি একটি মেয়ের ভূত থাকে!

পুরুলিয়ার বেগুনকোদর স্টেশনে নাকি একটি মেয়ের ভূত থাকে!

পুরুলিয়ার এই বেগুনকোদর স্টেশনে নাকি এক মেয়ের ভূত থাকে। সন্ধ্যা হলেই তাকে দেখা যায়। তার ভয়ে কেউ আর স্টেশনমুখো হয় না। সকাল থেকে বিকেল তবু এক-আধ জন লোকের আনাগোনা থাকে। কিন্তু সন্ধ্যা নামলেই নিঃঝুম স্টেশন। নিস্তব্ধ চারধার। গ্রামবাসীরা ভুলেও ওপথ মাড়ান না। সন্ধ্যের পর আজও গা ছমছমে পরিবেশ স্টেশন চত্বরে।

সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায় ওই ভূত স্টেশন

সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যায় ওই ভূত স্টেশন

এই বেগুনকোদর রেলওয়ে স্টেশন চালু হয় ১৯৬০ সালে। কিন্তু সাত বছর পরই তা বন্ধ করে দিতে হয়। এরপর ২০০৭ সালে গ্রামবাসীরা তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি লিখে স্টেশনটি চালু করার আবেদন করেছিলেন। তার ২ বছর পর খুলে দেওয়া হয় স্টেশনটি। সেই থেকে স্টেশনে ট্রেন থামে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। তারপর ফের অন্ধকারে ডুবে যায় ভুতুড়ে স্টেশন।

সাদা শাড়ি পরা একটি মেয়ে ট্রেনের পিছু পিছু ছুটছে

সাদা শাড়ি পরা একটি মেয়ে ট্রেনের পিছু পিছু ছুটছে

গল্পটি সেই ১৯৬৭ সালের। বেগুনকোদর স্টেশনে এক রেলকর্মী একজন মহিলার ভূতকে দেখতে পান। রাতের অন্ধকারে ট্রেনের আলোয় তিনি দেখেন, সাদা শাড়ি পরা একটি মেয়ে ট্রেনের পিছু পিছু ছুটছে। তারপরই হঠাৎ সে মিলিয়ে গেল। কোনওরকমে বাসায় ফিরে তিনি রাত কাটিয়েছিলেন ভয়ে ভয়ে। পরের দিনই স্টেশন মাস্টারকে জানিয়েছিলেন বিষয়টি। প্রথমে উপেক্ষা করে উড়িয়ে দিলেও, তাঁর মনেই বাসা খটকা লেগেছিল। এতদিন তো এমন কিছু শোনা যায়নি। হঠাৎ করে ওই কর্মী কেনই বা বলল ভুতের কথা।

ট্রেন লাইনের দিকে তাকিয়ে বিস্মিত হয়ে যান স্টেশন মাস্টার

ট্রেন লাইনের দিকে তাকিয়ে বিস্মিত হয়ে যান স্টেশন মাস্টার

এই বেগুনকোদর স্টেশনে কোনও প্ল্যাটফর্ম নেই। একটি কোনায় একটি ১০ ফুট বাই ১২ ফুটের টিকিট কাউন্টার আছে শুধু। তার সঙ্গে রয়েছে একটি কোয়ার্টার। ওই কোয়ার্টারেই থাকেন স্টেশন মাস্টার। রেলকর্মীরাও। একটি মেয়ের ভূত রয়েছে স্টেশনে, রেলকর্মীর মুখে তা শোনার পর স্টেশন মাস্টার পরদিন রাতেই তার সত্যতা জানার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। একটি ট্রেন আসার সময়ই তিনি ট্রেন লাইনের দিকে তাকিয়ে বিস্মিত হয়ে যান।

বুকে সাহস নিয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন, ট্রেনকেও টপকে গেল মেয়েটি!

বুকে সাহস নিয়ে দাঁড়িয়ে দেখেন, ট্রেনকেও টপকে গেল মেয়েটি!

ট্রেনটি স্টেশনের সামনে আসতেই একটি মেয়ে ট্রেনের সঙ্গে সঙ্গে ছুটতে শুরু করে। তিনি নিজের চোখে দেখেন ট্রেনটির পিছু পিছু ছুটছে মেয়েটি। তারপর ভয়ে শিউরে ওঠেন তিনি। তারপর দিনও তিনি বুকে সাহস নিয়ে ফের ট্রেন আসার আগেই রেললাইনের সামনে গিয়ে দাঁড়ান, আরও ভালো করে দেখার জন্য। এবার তিনি যা দেখলেন, তাতে আরও বিস্মিত হতে হয়। এবার তিনি দেখলেন, মেয়েটি ট্রেনের গতিতে ছুটছে। একটা সময় সে ট্রেনকেও টপকে যায়। তারপর বিলীন হয়ে গেল মেয়েটি।

ভুতুড়ে স্টেশনের গল্পে বন্ধ হয়ে গেল বেগুনকোদর স্টেশন

ভুতুড়ে স্টেশনের গল্পে বন্ধ হয়ে গেল বেগুনকোদর স্টেশন

এরপরই ওই স্টেশন মাস্টার অসুস্থ হয়ে পড়েন। এবং কয়েকদিনের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। তখন লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে ওই ভুতুড়ে স্টেশনের গল্প। স্টেশন মাস্টারের মৃত্যুর পর আরও একজন ওই চাকরিতে যোগ দেন। তিনিও দেখেন ওই ভুতুড়ে কাণ্ড। তারপর তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান, এই স্টেশনে চাকরি করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যান। রেল কর্তৃপক্ষ ভূতের উপদ্রবে বন্ধ করে দেয় স্টেশনটি। রেল-বুকে কারণ হিসেবে ওই ভূতের কথা লেখা হয়।

স্টেশন পার করার সময় জানলা বন্ধ করে দেন যাত্রীরা

স্টেশন পার করার সময় জানলা বন্ধ করে দেন যাত্রীরা

আর লোকের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে ভূতুড়ে স্টেশনের ওই কাহিনি। স্থানীয় লোকজনেরাও নাকি সে সময় দেখেছিলেন ওই মেয়ে ভূতকে ট্রেনের সঙ্গে সঙ্গে ছুটতে। এবং ওই মেয়ের ভূতকে প্লাটফর্মে নাচতেও দেখেছেন অনেকে। আবার ওই ভূতকে রেল স্টেশনের সামনে গাছেও বসে থাকতে দেখেছেন অনেকে। মোট কথা তারপর থেকে সন্ধ্যার পর আর কেউ যান না বেগুনকোদন স্টেশনের সামনে। আর ট্রেনের যাত্রীরাও রাতের বেলায় স্টেশন পার করার সময় জানলা বন্ধ করে দেন আগে থেকে।

কিন্তু কে ওই মহিলা, যিনি এক ছুটে হার মানান ট্রেনের গতিকেও

কিন্তু কে ওই মহিলা, যিনি এক ছুটে হার মানান ট্রেনের গতিকেও

কিন্তু কে ওই মহিলা। যাঁকে ট্রেন এলেই দেখা যায় ছুটতে। ট্রেনের সঙ্গে ছুটতে থাকেন তিনি, ট্রেনকেও টপকে যান এক নিমেছে। শোনা যায়, ওই স্টেশনেই ট্রেন দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছিল। ভূতের গল্প ছড়িয়ে পড়ার কিছুদিন আগেই ঘটেছিল ওই দুর্ঘটনা। চালু ট্রেনের পিছনে পিছনে ছুটে ট্রেনে উঠতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। তাঁর আত্মাই ঘুরে বেড়ায় স্টেশনে।

বিজ্ঞানমঞ্চের কর্মীরা রাতে স্টেশনে থেকে সত্যতা যাচাই করেন

বিজ্ঞানমঞ্চের কর্মীরা রাতে স্টেশনে থেকে সত্যতা যাচাই করেন

এরপর থেকে আর ওই স্টেশনে ট্রেন থামেনি। কারও নামা-ওঠার প্রশ্নও নেই। সবার মনেই খটকা ছিল। আজও আছে। তবু দিনের বেলায় কেউ কেউ যেতেন, সন্ধ্যার পর কেউ না। তবে ৪০ বছর কেটে যাওয়ার পর স্থানীয়রা স্টেশনটি চালু করতে আবার চিঠি লেখেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তখনই ফের তোড়জোড় শুরু হয়। বিজ্ঞানমঞ্চের কর্মীরা রাতে স্টেশনে থেকে ভুতের কাহিনি সত্যতা নিরূপণ করতে আসেন। তখন স্থানীয়রা নিষেধ করেছিলেন রাতে ওই স্টেশনে না যেতে। প্রাণ চলে যেতে পারে। তবু ১১ জন বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মী স্টেশনে রাতভর কাটিয়ে কোনও ভুতুড়ে কাণ্ড-কারখানা দেখতে পাননি।

আজও কি ট্রেনের সঙ্গে ছুটে বেড়ায় সেই মেয়ের ভূত!

আজও কি ট্রেনের সঙ্গে ছুটে বেড়ায় সেই মেয়ের ভূত!

তাঁরা রিপোর্ট দেওয়ার পরই ফের চালু হয় স্টেশন। ১৯৬৭-র পর ২০০৯ সালে ফের বেগুনকোদর স্টেশনে ট্রেন থামে। খড়গপুর থেকে হাটিয়া যাওয়ার লাইনে বেলা ১১টা নাগাদ ট্রেনটি থেমেছিল। শুরু হয়েছিল যাত্রী ওঠা-নামা। তারপর থেকে ট্রেন থামছে স্টেশনে। তবে সকাল থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত। বিকেল পাঁচটার পর আর কোনও ট্রেন ওই স্টেশনে থামে না। কোনও যাত্রীও আর স্টেশনমুখো হন না। আজও চলে আসছে সেই ধারা। একটি মেয়ের জন্য ৪২ বছর বন্ধ ছিল স্টেশন, আজও বিকেল পাঁচটা বাজলেই ছুটির ঘণ্টা পড়ে যায়। কেউ ও পথ মাড়ায় না আর। আজও ট্রেন গেলেই তার সঙ্গে হয়তো ছুটে বেড়ায় সেই মেয়ের ভূত!

English summary
Any train can’t stop on this railway station of West Bengal due to a ghost tale during 42 years
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X