তৃণমূলের দুই নেতাকে খুনের হুমকি কেএলও-র, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবি আবারও
তৃণমূলের দুই নেতাকে খুনের হুমকি কেএলও-র, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্যের দাবি আবারও
একুশের ভোট পরবর্তী সময়ে উত্তরবঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্য করার দাবি উঠেছে। বিজেপির সাংসদ থেকে থেকে শুরু করে বিধায়ক-মন্ত্রী-মহোদয়রা প্রত্যক্ষ ও পরক্ষোভাবে এই দাবি তুলে আসছেন। এবার সেই দাবির সমর্থনেই সরব হল কেএলও জঙ্গিগোষ্ঠী। কেএলও জঙ্গি গোষ্ঠীর তরফে এবার তৃণমূল প্রাক্তন সাংসদ ও প্রাক্তনমন্ত্রীকে খুনের হুমকি দেওয়া হল।
কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উত্তরবঙ্গ পৃথক রাজ্যের দাবি জানিয়ে হুমকি দেন জঙ্গিরা। মায়ানমারের গোপন ডেরা থেকে সেই হুমকি দেওয়া হয়। এরপর কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় ও প্রাক্তনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পোস্টার দিল কেএলও জঙ্গিগোষ্ঠী।
জঙ্গিরা পোস্টারে লিখেছে- নির্বাচনের নামে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে। সবথেকে প্রতারিত হচ্ছে কোচ জনজাতি। সেই কারণেই তৃণমূলের ওই দুই নেতার চরম পরিণতি হবে। প্রাণে মেরে ফেলা হবে। প্রথম মুখ্যমন্ত্রীকে হুমকি, তারপর দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে খুনের হুমকি দিয়ে পোস্টারের পর চিন্তায় পড়েছে প্রশাসন।
কেএলও এদিন তৃণমূলকেই কাঠগড়ায় তুলেছে। কেএলও জঙ্গিগোষ্ঠীর হুমকি পোস্টারের পর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ প্রশাসন। এই প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, বেশ কিছু নেতা-নেত্রীদের আগে থেকেই নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। সেই নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি প্রয়োজন হয় আরও নিরাপত্তা বাড়িয়ে দেওয়া হবে তাঁদের।
পুলিশ পুরনো রেকর্ড খতিয়ে দেখছে। ৯০-এর দশকে কামতাপুরী আন্দোলন সামলানো বিভিন্ন থানার পুলিশকর্মীদের সঙ্গে নতুন করে কথাবার্তা চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার। দলের সংগঠনের কাজে গোটা উত্তরবঙ্গ ঘুরে বেড়ান পার্থপ্রতিম রায় ও বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। তাঁদের নামে প্রাণনাশের হুমকি পোস্টারে চিন্তা বেড়েছে রাজ্যের শাসকদলেরও।
তৃণমূলের অভিযোগ, কেএলও জঙ্গিদের এই হুমকির পিছনে রয়েছে বিশেষ কোনও রাজনৈতিক দলের মদত। কেননা একটা শ্রেণি কিছুদিন ধরেই বঙ্গভঙ্গের পক্ষ সওয়াল করতে শুরু করেছে। উত্তরবঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। সম্প্রতি বাংলা ভেঙে উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করতে হবে, এটা মানুষের দাবি বলে চালাতে চাইছে বিজেপি।
বিজেপির সাংসদ অধুনা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা প্রথম তোলেন উত্তরবঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের কথা. তারপর বিজেপির কতিপয় বিধায়ক তা সমর্থন করেছিলেন। তাঁর দেখাদেখি দক্ষিণবঙ্গ থেকে বিদেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁও রাঢ়বঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি তোলেন। হালে তাঁদের সেই দাবিকে ঘুরিয়ে সমর্থন জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও আর এক কেন্দ্রীয়মন্ত্রী তথা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। এবার বিজেপির সমর্থন পেয়ে কেএলও জঙ্গিগোষ্ঠী দাবি তুলকতে শুরু করেছ পৃথক রাজ্যের।