মালবাজার বিপর্যয়ের পর মাস্টারস্ট্রোক মমতার, ৪৫ জীবন বাঁচানো ৭ উদ্ধারকারীকে ‘পুরস্কার’
মালবাজার বিপর্যয়ের পর মাস্টারস্ট্রোক মমতার, ৪৫ জীবন বাঁচানো ৭ উদ্ধারকারীকে ‘পুরস্কার’
বিজয়া দশমীর দিন মাল নদীতে বিসর্জন চলাকীলান হড়পা বানে ভেসে গিয়েছিলেন স্থানীয়রা অনেকেই। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ৮ জনের। আর ৪৫ প্রাণ বেঁচেছিল সাত উদ্ধারকারীর সাহসিকতায়। সেই সাত উদ্ধারকারীকে পুরস্কৃত করল তৃণমূল সরকার। মালবাজার বিপর্যয়ের পর মাস্টারস্ট্রোক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির মালবাজারে প্রশাসনিক বৈঠকে ডেকে মালবাজার বিপরযয়ে উদ্ধারকারী সাতজনকে আর্থিক পুরস্কার প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁদের চাকরির দরকার, তাঁদের চাকরির ব্যবস্থাও করেন তিনি। প্রত্যেককে মঞ্চে ডেকে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন, তারপর তাঁদের হাতে তুলে দেন সাহসিকতার শংসাপত্র এবং পুরস্কারস্বরূপ ১ লক্ষ টাকার চেক। সেইসঙ্গে চাকরির অফারও করেন সবাইকে। পাঁচ জন চাকরির অফার নিয়েছে, দুজন চাকরি করছেন, তাঁরা নিজেদের কাজ চালিয়ে যেতে আগ্রহী বলে জানান। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের অভিনন্দন জানান।
বিজয়া দশমীতে ভাসানের দিন হড়পা বানে যখন স্থানীয় মানুষজন তলিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন সাতজন নিজের জীবনের পরোয়া না করে তাঁদের বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন নদীতে। সৌমেন চৌধুরী, মহম্মদ মানিক, মনোজ মুন্ডা, দারা সিং, বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, দীপক বোদকা, অমিয়া মাহাতোরা মলা নদীতে প্রবল বানে ভেসে যাওয়া মানুষদের একে একে উদ্ধার করে আনেন। এঁদের সাহসিকতায় প্রায় ৪৫ প্রাণ বেঁচে যায়। কিন্তু ৮ জনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
সোমবার মালবাজারে পৌঁছে স্বজনহারা পরিবারের সঙ্গে দেখা করে সমবেদনা জানান তিনি। তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দেন। সেইসঙ্গে সাত উদ্ধারকারীরও ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা যেভাবে জীবন বাজি রেখে বহু মানুষের জীবন বাঁচান, তাতে কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন মমতা।
মঙ্গলবার মালবাজারের আদর্শ বিদ্যাভবনে প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চে সাতজনকে ডেকে নিয়ে সংবর্ধিত করেন। তাঁদের হাতে শংসাপত্র ও লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। এক এক করে মঞ্চে ডেকে সকলের সঙ্গে পরিচয়ও করেন মুখ্যমন্ত্রী। উৎসাহও দেন এমন সাহসী কাজের জন্য। তাঁদের জন্যই এতগুলো প্রাণ বেঁচেছে। তাঁরা যাতে আরও সাহসী কাজের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে পারেন, সমাজের জন্য নিজেদের এগিয়ে দিতে পারেন, সেজন্যই তাঁদের সংবর্ধিত করা হল এদিন।
মালবাজারের বিপর্যয়ের পর মুখ্যমন্ত্রী সোমবার উত্তরবঙ্গে পা রেখেই মালবাজারে ছোটেন। মালবাজারের মাল নদীতে হড়পা বানে ভেসে গিয়ে যাঁরা মারা গিয়েছিলেন তাঁদের বাড়িতে যান মুখ্যমন্ত্রী। মৃতদের পরিবারের খোঁজ খবর নেন। তাঁদের সমবেদনা জানান। আর্থিক সাহায্য হিসেবে দু-লক্ষ টাকা করে পরিবার পিছু দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এককথায় একের পর এক মাস্টারস্ট্রোক দিয়ে চলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।