স্ট্রাইক ফ্রি জোন-হোর্ডিংয়ে নেপালি ভাষা থাকা বাধ্যতামূলক, দার্জিলিং নিয়ে একের পর এক বড় ঘোষণা হামরো পার্টির
স্ট্রাইক ফ্রি জোন-হোর্ডিংয়ে নেপালি ভাষা থাকা বাধ্যতামূলক, দার্জিলিং নিয়ে একের পর এক বড় ঘোষণা হামরো পার্টির
অপ্রত্যাশিত জয়। মাত্র আড়াই মাসের সংগঠন হামরো পার্টি। তারমধ্যে পাহাড়বাসীর আস্থা অর্জন করে নিয়েছে গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। সেই আস্থা জিইয়ে রাখতে বড় ঘোষণা করল হামরো পার্টি। দার্জিলিংকে স্ট্রাইক ফ্রি জোন করার কথা ঘোষণা করেছে তারা। সেই সঙ্গে নেপালি ভাষার গুরুত্ব বাড়াতে পাহাড়ের সব হোর্ডিংয়ে নেপালি ভাষা থাকবে বলে জানিয়েছেন হামরো পার্টির প্রথান অজয় এডওয়ার্ড।
পাহাড়ের রাজনীতির সমীকরণ বদলে দিয়েছে পুরসভার ভোট। তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, মোর্চা কারোর উপরেই আর আস্থা নেই। সেটা বুঝিয়ে দিয়েছেন পাহাড়বাসী। সব রাজনৈতিক দলই এসেছে কিন্তু কেউ তাঁদের কথা ভাবেনি। পাহাড়বাসীর মন বুঝতে পেরেই অজয় এডওয়ার্ড নভেম্বর মাসে তৈরি করেছিলেন হামরো পার্টি। দার্জিলিঙের জনপ্রিয় কফিশপ গ্লেনারিজের মালিক অজয় এডওয়ার্ড।
নভেম্বর মাস থেকে মাত্র কয়েকটা মাস। এর মধ্যেই পাহাড়বাসীর আস্থা অর্জন করে বিপুল ভোটে পুরসভায় জয়ী হয়েছে হামরো পার্টির সব প্রতিনিধিরা। মোর্চা থেরে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি সকলকে ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। পাহাড়বাসীর মন রাখতে তাই গতকাল বড় ঘোষণা করেছেন হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ড। তিনি জানিয়েছেন দার্জিলিঙে আর কোনও বনধ তাঁরা হতে দেবেন না। পাহাড়কে স্ট্রাইক ফ্রি জোন হিসেবে ঘোষণা করেছেন তিনি। গতকয়েক বছর ধরে পাহাড় উত্তাল হয়েছে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে। লাগাতার বনধে বিপুল ক্ষতি স্বীকার করেছেন পাহাড়ের বাসিন্দারা। পাহাড়ের পর্যটন শিল্প যাকে বলে একেবারে ধসে পড়েিছল। সেই পরিস্থিতি আর কোনও ভাবেই পাহাড়ে হতে দেবেন না বসে ঘোষণা করেছেন অজয় এডওয়ার্ড। হামরো পার্টির প্রধান বলেছেন পাহাড়ে আর বনধের রাজনীতি তিনি হতে দেবেন না।
শুধু দার্জিলিংকে স্ট্রাইক ফ্রি জোন করার কথাই ঘোষণা করেননি তিনি সেই সঙ্গে নেপালি ভাষার গুরুত্ব বাড়ানোর কথাও বলেছেন অজয় এডওয়ার্ড। তিনি বলেছেন পাহাড়ে সবকটি সরকারি হোর্ডিঙে থাকবে নেপালি ভাষায় লেখা। ভাষা নিয়ে প্রথম থেকেই পাহাড়ে রাজনীতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা ভাষা জানতে হবে বলার পরেই তোলপাড় হয়েছিল পাহাড়। গত পাঁচ বছর ধরে নেপালি ভাষার গুরুত্ব বাড়ানোর রাজনীতিও করেছে।
গত পাঁচ বছর ধরে দার্জিলিং এবং পাহাড় গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে উত্তাল থেকেছে। বিধানসভা ভোটের আগে হঠাৎ করে পাহাড়ের রাজনীতিতে নতুন করে উথালপাথাল শুরু হয়েছিল। মোর্চা নেতা বিমল গুরুং দীর্ঘদিন ফেরার থাকার পর হঠাৎ করে কলকাতায় এসে বিজেপিতে যোগ দেন। তারপরে তিনি আবার পাহাড়ে ফিরে আসেন। সেখানে মোর্চা কার্যত দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়। গুরুং পন্থীরা ফের পাহাড় গরম করতে শুরু করেন। এদিকে বিনয় তামাক কিছুতেই বিমল গুরুংকে মোর্চায় ফিরিয়ে নিতে রাজি হননি। তারমধ্যেই আবার বিনয় তামাং মোর্চা ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল পাহাড়ের মোর্চার সংগঠন। এই অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে নতুন আশার আলো দেখিয়েছে অজয় এডওয়ার্ড। এবার এই হামরো পার্টির হাত ধরেই পাহাড় ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে।