পাহাড়ে পালাবদল হতেই ‘খেল’ শুরু বিজেপির, ২০২৪-এর আগে নয়া ছকে কামব্যাকের চেষ্টা
পাহাড়ে পালাবদল হতেই ‘খেল’ শুরু বিজেপির, ২০২৪-এর আগে নয়া ছকে কামব্যাকের চেষ্টা
দার্জিলিংয়ে ক্ষমতায় সম্প্রতি হাতবদল হয়েছে। অজয় এডওয়ার্ডের হাত ঘুরে পুরসভার শাসনভার উঠেছে অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ও তৃণমূল জোটের হাতে। আর পালাবদলের দিনেই ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল ছেড়েছেন বিনয় তামাং। ফলে পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের জল্পনা তৈরি হয়েছে।
বিজেপি তাল ঠুকছে পাহাড়ে
বিনয় তামাং তৃণমূল ছাড়তেই পাহাড়ে ফের পুরনো জুটির জেগে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিনয় তামাং ফের বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোর্খাল্যান্ডের লড়াইকে উচ্চাসনে তুলে ধরতে পারেন। তাঁদের সঙ্গে এই লড়াইয়ে শামিল হতে পারেন হামরো পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এডওয়ার্ডও। আর এই পরিস্থিতিতে বিজেপি তাল ঠুকছে পাহাড়ে ফের জনভিত্তি গড়ে তোলার।
বিনয়ের ভাষ্যকে হাতিয়ার
বিজেপির কথায়, বিনয় তামাংয়ের পাহাড়ে কোনও জনভিত্তি নেই। তাঁকে আমরা ধর্তব্যের মধ্যে আনছি না। আমরা বলতে চাই, তিনি যে কথা বলেছেন, তা সর্বৈব সঠিক। পাহাড়ের মানুষের গণতন্ত্রকে হত্যা করছে তৃণমূল। পাহাড়কে অস্থির করার জন্য সম্পূর্ণরূপে তৃণমূল দায়ী। পাহাড়ের সমস্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে তৃণমূল।
পাহাড়ের ভবিষ্যৎ বিজেপিই!
এই অবস্থায় পাহাড়ের মানুষকে স্থায়িত্ব দিতে পারে একমাত্র বিজেপি। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, পাহাড়ের মানুষ জানে বিজেপি তাঁদের জন্য কতটা উপযোগী। তাই পাহাড়ের ভবিষ্যৎ বিজেপিই। কে কোথায় গেল, কে কোথায় এল তা নিয়ে আমাদের কোনও মাথাব্যথা নেই। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের লক্ষ্য, যা তৃণমূলের দ্বারা সম্ভব নয় কখনই।
পদত্যাগ ও বার্তা তাৎপর্যপূর্ণ
দার্জিলিং পুরসভায় পালাবদলের দিনেই জিটিএর প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিনয় তামাং তৃণমূল ছেড়ে দেন। তিনি বুধবার প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানান, তৃণমূলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন। পাহাড়ে গণতন্ত্র বিপন্ন। গণতন্ত্র ফেরাতে রক্ত ঝরাতেও তিনি তৈরি। তাঁর এই পদত্যাগ ও বার্তা পাহাড়ের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ।
তৃণমূলে পথ চলা শেষ বিনয়ের
মাত্র এক বছর আগে যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূলে। এই এক বছরের মধ্যেই কী হল, যে তৃণমূলের প্রতি তাঁর মোহভঙ্গ হল? তৃণমূলের সঙ্গে জোট থাকাকালীনই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ছেড়ে সরাসরি যোগ দিয়েছিলেন বাংলার শাসকদলে। ২০২১-এর ২৪ অক্টোবরের পর ২০২২-এর ২৮ ডিসেম্বর। তৃণমূলে পথ চলা শেষ হল বিনয় তামাংয়ের।
বিনয় তামাং বিরোধী-মঞ্চে যান
এদিনই দার্জিলিং পুরসভা হাতছাড়া হয় অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টির। হামরো পার্টির হাত থেকে অনীত থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ও তৃণমূল জোটের হাতে যায়। আর সেদিনেই পাহাড়ে ধাক্কা খায় তৃণমূল। এই ঘটনার পর বিজেপি আবার জেগে উঠতে চাইছে। সম্প্রতি পাহাড়ে রাজনীতিতে ফের গোর্খাল্যান্ড ইস্যু মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সম্প্রতি গুরুংয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে বিনয় তামাং বিরোধী-মঞ্চে শামিলও হয়েছেন।
পাহাড় রাজনীতি অন্য খাতে
ফলে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুকে সামনে রেখে পাহাড়ের নেতারা ফের এক হতে পারেন। আর বিজেপি সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাহাড়ে আবার জেগে উঠতে পারেন। বিজেপি ২০২৪-এর আগে সেই ছকই কাজে লাগাতে চাইছে। পাহাড়ের দলগুলিকে এক করে তাঁরা সমীকরণ বদলাতে চাইছে আবারও। এমনিতেই তাদের সঙ্গে রয়েছে জিএনএলএফ-সহ অনেকগুলি ছোটো দল, এবার যদি গুরুং-তামাংদের ভেড়ানো যায়, তাহলে ফের তৃণমূলকে কঠিন চ্যালেঞ্জে ফেলে দেওয়া যাবে। সম্প্রতি পঞ্চায়েত নির্বাচন আবারও পাহাড় রাজনীতিতে অন্য খাতে বইয়ে দিতে পারে।
মমতার মুখে সরকারি মঞ্চে শোভনের প্রশস্তি, ফের উসকে দিল রাজনীতিতে কামব্যাকের জল্পনা