ভারত জোড়ো যাত্রায় বাংলার করুণ ছবি! অসহায় স্বীকারোক্তিতে তৃণমূলকে খোঁচা অধীরের
পলাশীর প্রান্তর দিয়ে রবিবারই ভারত জোড়ো যাত্রা প্রবেশ করেছে মুর্শিদাবাদে। অধীর-গড়ে ভারত জোড়ো যাত্রা প্রবেশ করতেই একেবারে অন্যরূপ ধরা দিল এদিন।
পলাশীর প্রান্তর দিয়ে রবিবারই ভারত জোড়ো যাত্রা প্রবেশ করেছে মুর্শিদাবাদে। অধীর-গড়ে ভারত জোড়ো যাত্রা প্রবেশ করতেই একেবারে অন্যরূপ ধরা দিল এদিন। বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে ঘিরে উন্মাদনার মধ্যেই উঠে এল এক অন্য চিত্রও।
অধীর চৌধুরীর কাছে অসহায় বৃদ্ধি বার্ধক্যভাতা চেয়েছেন। আর নিজের গড়ে দাঁড়িয়ে 'অসহায়' অধীর তাঁর কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন। শুধু কি বার্ধক্যভাতা, সেইসঙ্গে কত মানুষের কত আবদার! কেউ চেয়েছেন বাড়ি, কেউ চেয়েছেন রুটি-রজির ব্যবস্থা, আবার কেউ চাকরি।
সাংসদ হয়েই তিনি অপারগ। তিনি এক্ষেত্রে পদে পদে তুলে ধরেছেন রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার কথা। সাগর থেকে পাহাড় পদযাত্রায় শামিল হয়ে মুর্শিদাবাদে প্রবেশের পর 'ভারত জোড়ো যাত্রা'র অংশে মানুষের অসহায় আর্তি দেখে ব্যথিত অধীর। অগণিত কংগ্রেস কর্মীকে নিয়ে যত এগিয়েছে পদযাত্রা, ততই মানুষের আর্তিতে ব্যথিত হয়েছেন অধীর।
মুর্শিদাবাদ থেকে এই যাত্রা ফারাক্কায় পৌঁছনোর পর মালদহ জেলার হাতে দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। এদিন ভারত জোড়ো যাত্রা যখন মুর্শিদাবাদের রেজিনগর থেকে শুরু হয় তখন রাস্তার দু'পাশে মানুষ থিক থিক করছে। ভারত জোড়ো যাত্রাকে সমর্থন করার জন্য রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে তাঁরা জয়ধ্বনি দিচ্ছেন।
অধীর চৌধুরী তা দেখে বলেন, মানুষের উচ্ছ্বাস দেখে আমরা অভিভূত হচ্ছি। সর্বত্র মানুষের সমর্থন, দোয়া আমরা পেয়ে চলেছি। তাই বলাই যায়, ভারত জোড়ো যাত্রা রাহুল গান্ধী যে উদ্দেশ্য নিয়ে ঘোষণা করেছিলেন, সেই উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। রাহুল গান্ধীর এই ভারত জোড়ো যাত্রায় সর্বত্রই মানুষের মধ্যে একটা প্রভাব ফেলেছে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসছেন। তাঁরা আশীর্বাদ করছেন।
তিনি আরও বলেন, বহরমপুরের সাংসদ হিসেবে আজ মুর্শিদাবাদের রাস্তায় হাঁটছি। আমাকে সবাই রাস্তায় ধরছেন। কেউ বলছেন রাস্তা ঠিক করে দেওয়ার কথা। কেউ বলছেন আবাস যোজনা ঘরের কথা। উত্তরে তিনি বলছেন, আমি অসহায়, আমার হাতে কোনও ক্ষমতা নাই। কিন্তু আপনাদের কথা যে জায়গায় বলার, সেখানে অবশ্যই বলব।
তিনি আরও বলেন, সারা পশ্চিমবঙ্গে গরিব মানুষের কথা ভাবা হয় না, গরিব মানুষের পাওনাকে লুঠ করা হয়। গরিব মানুষের ঘর, গরিব মানুষের ১০০ দিনের কাজ, চাকরি সর্বোচ্চ বাংলায় লুঠ করা হচ্ছে। এই লুঠের বাংলায় সাধারণ মানুষ আজ বড় অসহায়। সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে।
অধীর বলেন, লুঠ, চুরি, রাহাজানি চলছে বাংলাজুড়ে। যার ফলে সাধারণ মানুষের না আছে রুজি, না আছে রোজগার ,না আছে ঘর, না আছে রাস্তা। তাদের যা সুযোগ সুবিধা দরকার তারা আজ কিছুই পাচ্ছে না। এই বঞ্চনার ইতিহাসের কাহিনি মানুষ আমাদের ধরে ধরে শোনাতে চাইছে। আমরা আমাদের অসহায়তার কথা তাঁদের বলছি। আমাদের অক্ষমতা স্বীকার করছি।
অধীর চৌধুরী বলেন, যখন জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত, পুরসভা আমাদের ছিল, তখন আমরা মানুষের জন্য কাজ করেছি, মানুষ আমাদের কাজের সেই কথা মনে রেখেছে বলে আজ এই ভারত জোড়ো যাত্রা যেখান দিয়ে যাচ্ছে, সেখানেই সাধারণ মানুষ রাস্তার দু' ধারে দাঁড়িয়ে এই যাত্রার সাফল্য কামনা করছেন।