অলিম্পিকে দু’বারের পদক জয়ী সিন্ধু যা অর্জন করতে পারেননি সেটাই করে দেখালেন গুজরাতের কিশোরী তাসনিম মির
অলিম্পিকে দু’বারের পদক জয়ী সিন্ধু যা অর্জন করতে পারেননি সেটাই করে দেখালেন গুজরাতের কিশোরী তাসনিম মির
পিভি সিন্ধু, সাইনা নেহওয়ালরা যা করতে পারেননি সেটাই করে দেখালেন মাত্র ১৬ বছর বয়সী শাটলার তাসনিম মির। আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টনে জুনিয়রদের ক্রমতালিকায় লক্ষ্য সেন, আদিত্য জোশী বা সিরিল বর্মা'রা শীর্ষস্থান অতীতে অর্জন করলেও কখনও কোনও মহিলা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ভারত থেকে জুনিয়রদের ব়্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ স্থান দখল করতে পারেননি।
ভারতীয় মহিলা ব্যাডমিন্টনের ইতিহাসে অধরা সেই মাইলস্টোন স্পর্শ করলেন গুজরাতের কিশোরী তাসনিম মির। অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা ব্যাডমিন্টন ব়্যাঙ্কিংয়ে তিনিই বর্তমানে শীর্ষ খেলোয়াড়। ১০, ৮১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ স্থান দখল করেছেন তিনি। তাসনিমের রোল মডেল দু'বার অলিম্পিক থেকে দেশকে পদক এনে দেওয়া পিভি সিন্ধুও থমকে গিয়েছিলেন দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছে। ২০১১ সাল থেকে বিশ্ব ব্যাডমিন্টন ফেডারেশন শুরু করে জুনিয়রদের ক্রমতালিকা। এর ফলে সাইনা নেহওয়ালের ব়্যাঙ্কিংয়ে আসার সুযোগ হয়নি। শুধু সিন্ধু একা নন, সাইনাকেও নিজের আদর্শ মানেন তাসনিম মির।
২০২১ সালে তিনটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীতায় (বুলগেরিয়া জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপ, আলপস ইন্টারন্যাশনাল এবং বেলজিয়ান জুনিয়র) পদক পেয়েছিলেন মির। এশিয়ান জুনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে অনূর্ধ্ব-১৫ এবং অনূর্ধ্ব-১৭ বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তিনি। আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্যের ফলে তিন ধাপ উপরে উঠে পয়লা নম্বরে জায়গা করে নিয়েছেন তাসনিম মির। ১৬ বছর বয়সী এই কিশোরীর ব্যাডমিন্টনে হাতেখড়ি হয় বাবা ইরফান মিরের কাছে। ইরফান মির গুজরাতের মেহসানা থাকানার এএসআই পদে রয়েছেন। পুলিশের চাকরিতে একাধিক চাপের মধ্যেও মেয়েকে ব্যাডমিন্টন খেলার বিষয়ে বরাবর উৎসাহিত করে এসেছেন ইরফান। তাঁর হাত ধরেই ছয় বছর বয়সে ব্যাডমিন্টন খেলা শুরু করেন তাসনিম। তাসনিমের ভাই মহম্মদ আলি মির রাজ্য স্তরের চ্যাম্পিয়ন।
দেশকে সম্মানিত করতে পেরে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি ১৬ বছরের এই কিশোরী। তিনি বলেছে, "আজ প্রচণ্ড খুশি আমি। আমার দুই আদর্শ পিভি সিন্ধু এবং সাইনা নেহওয়ালের পদাঙ্ক অনুসরন করার চেষ্টা করব আমি। আমি এখন সিনিয়র খেলোয়াড়রা কী ভাবে খেলে সেই দিকে মনযোগ দিচ্ছি এবং সেই স্তরে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে চাই। পরবর্তী অলিম্পিতে দেশের হয়ে পদক জয়ের আশা করি আ্মি।" কিশোরী শাটলারটি কতটা আবেগপ্রবণ তা বোঝা যায় তাঁর পরবর্তী কথাগুলি থেকে। মির বলেন, "হেরে গেলে আমি প্রচণ্ড কান্নাকাটি করি। আজ আমি যেখানে রয়েছি সেখানে পৌঁছতে অনেক কঠিন পরিশ্রম করেছি আমি। প্রতি দিন ছয় থেকে সাত ঘণ্টা অনুশীলন করি। আমাকে সাহায্যের জন্য আমার বাবা-মা অনেক কিছু ত্যাগ করেছে এবং আমার ভাইও এই খেলার সঙ্গে যুক্ত।"