'আমি মনিপুরী নই, ভারতীয়', এই দিনটাই জন্যে পাঁচ বছর অপেক্ষা করেছিলেন চানু
কর্ণম মালেশ্বরী প্রথম ভারোত্তোলক হিসেবে সিডনি অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন! অলিম্পিকের ভারোত্তোলনে ২১ বছর পর কোনও পদক জিতল ভারত। মীরাবাঈয়ের হাত ধরে সেই খরা কাটল ভারতের। প্রথম ভারোত্তোলক হিসেবে অলিম্পিকে রুপো জিতলেন মীরাবা
কর্ণম মালেশ্বরী প্রথম ভারোত্তোলক হিসেবে সিডনি অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন! অলিম্পিকের ভারোত্তোলনে ২১ বছর পর কোনও পদক জিতল ভারত। মীরাবাঈয়ের হাত ধরে সেই খরা কাটল ভারতের। প্রথম ভারোত্তোলক হিসেবে অলিম্পিকে রুপো জিতলেন মীরাবাঈ চানু। এদিন স্ন্যাচ বিভাগের শেষে ৮৭ কেজি ভার তুলে দ্বিতীয় ছিলেন মীরাবাঈ। ক্লিন অ্যান্ড জার্কে তিনি ১১৫ কেজির বেশি আর তুলতে পারেননি।
অলিম্পিকের রেকর্ড গড়ে সোনা জিতেছেন চিনের হাউ ঝিউই। তবে দীর্ঘ এতগুলি বছর পর ভারতকে ভারোত্তোলনে পদক এনে দিয়ে আরও আত্মবিশ্বাসী মীরাবাঈ। পদক জেতার পর থেকে একটা তৃপ্তির হাসি মীরার মুখে।
এইদিনটি দেখার জন্যে স্বপ্ন দেখিছে
আর এই জয়ের পর মীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, গত পাঁচবছর ধরে এইদিনটি দেখার জন্যে স্বপ্ন দেখিছে। আর সেই স্বপ্ন সত্যি বাস্তব হওয়ার পর থেকে আপ্লুত মীরাবাঈ। বাঁধ ভেঙেছে তাঁর আবেগ। মীরা সাংবাদিকদের আরও জানিয়েছেন, তবে সোনা পাওয়ার জন্যেই প্রথম থেকে লড়াই করেছিলাম। কিন্তু অলিম্পিকে রুপো পাওয়াটাও তাঁর কাছে অনেক বলে জানিয়েছেন মীরা।
২০১৬ সালে খালি হাতে ফিরতে হয়
২০১৬ সালে প্রথমবার অলম্পিকে এসে কার্যত খালি হাতেই ফিরতে হয়েছিল চানুকে। কিন্তু আজ চার বছর পর চানু মুখে চোখে কোথাও অশ্চিয়তার ছাপ চোখে পড়েনি। বরং অনেক বেশি কনফিডেন্ট লেগেছে তাঁকে। শুধু তাই নয়, এই পোডিয়াম ওই মুহূর্তের জন্যে শুধু তাঁর এটাই যেন চানুর চোখেমুখে সেই সময় ধরা দিয়েছে।
মনিপুরের মেয়ে নয়, গোটা দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছি
চানু আরও জানিয়েছেন, অলিম্পিকে প্রথম মেডেল ভারতকে দিতে পেরে আমি গর্বিত। শুধু তাই নয়, আনন্দিত তিনি। তাঁর মতে, আমি একজন মনিপুরের মানুষ নয়, এই মুহূর্তের গোটা ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছি। শনিবার প্রথম থেকে মীরার চোখ মুখে ছিল আত্মবিশ্বাসীর হাসি। যা মেডেল পাওয়া পর্যন্ত তাঁর চোখেমুখে ধরা দিয়েছে। অন্যদিকে চানুর এই সাফল্যের পরেই মনিপুর জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে অকাল উৎসব। বাজি ফাটাচ্ছে কেউ আবার নাচ করছেন। আজ সকাল থেকে ঘরের মেয়ের দিকে নজর ছিল চানুর পরিবারের। আশেপাশের প্রতিবেশীরা মুহূর্তের সাক্ষী থাকতে চানুর বাড়িতেই জড়ো হয়েছিলেন। ভারোত্তোলে ভারতকে প্রথম পদক চানু এনে দেওয়ার পরেই খুশির বাঁধ ভাঙে সে রাজ্যের ছোট্ট বাড়িটায়...!!
অভিনন্দনের বন্যা
ক্লিন অ্যান্ড জার্কে প্রথমে ১১০ কেজি ও পরে ১১৫ কেজি তোলেন চানু। তাঁর সফল দ্বিতীয় প্রয়াসেই নিশ্চিত হয়ে যায় ভারতের পদক। এরপর কয়েক মিনিটেই স্পষ্ট হয়ে যায় অলিম্পিক ভারোত্তোলনে ভারতের ঐতিহাসিক রুপো জয়। ইতিহাস গড়ার আনন্দে কোচকে জড়িয়ে ধরে অল্প কিছুক্ষণ নাচতেও দেখা যায় মণিপুরের মীরাবাঈ চানুকে। তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে লিখেছেন, এই সাফল্য বাকিদেরও প্রেরণা দেবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং, অনুরাগ ঠাকুর-সহ দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট মানুষজন সোশ্যাল মিডিয়ায় চানুকে অভিনন্দিত করেছেন।