মেদিনীপুরের ৭ আসনেই কি ফুটবে পদ্মফুল? নাকি হাওয়া ঘুরিয়ে ঘাসফুল জন্মাবে লালমাটিতে
মেদিনীপুরের ৭ আসনেই কি ফুটবে পদ্মফুল? নাকি হাওয়া ঘুরিয়ে ঘাসফুল জন্মাবে লালমাটিতে
বাংলার রাজনৈতিক রাজধানী এখন নন্দীগ্রাম। তাছাড়া অভিবক্ত মেদিনীপুর জুড়েই এখন কাঁটায় কাঁটায় টক্কর দুই ফুলের। এহেন অবস্থায় তৃণমূলের বিশেষ নজর রয়েছে খড়্গপুর সহ মেদিনীপুর লোকসভার অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র। উল্লেখ্য ২০১৯ সালে এই মেদিনীপুর লোকসভা আসন থেকেই জিতেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মানস ভুঁইয়া।
খড়্গপুরে পিছিয়ে বিজেপি
মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি আশন হল, এগরা, দাঁতন, কেশিয়াড়ি, খড়্গপুর, খড়্গপুর সদর, নারায়ণগড়, মেদিনীপুর। এবারে এই আসনগুলি থেকে লড়ছেন বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা। নারায়ণগড় আশন থেকে বাম প্রার্থী হচ্ছেন তপন সিনহা। উল্লেখ্য, ২০১১ সালের আগে এই জেলা বামেদের দূর্গ ছিল। তবে ২০১৬ সালে এই নারায়ণগড় থেকেই হেরে গিয়েছিলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। এদিকে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী একমাত্র খড়্গপুর আসন ছাড়া অন্য সবকটি আসনে এগিয়ে বিজেপি।
বিজেপির কাছে প্রেসটিজ ফ্যাক্টর
২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দিনেন রায় জয়ী হয়েছিলেন। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ৮৫,৬৩০ হাজার। দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন সিপিএম প্রার্থী শেখ শাজাহান। এবারে খড়্গপুর সদর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী পদে চমক৷ সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে খড়গপুর সদরের প্রার্থী করা হয়েছে ৷ সাংসদ হওয়ার আগে খড়্গপুর সদরের বিধায়ক ছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ ফলে এই কেন্দ্রটি বিজেপি নেতৃত্বের কাছে একটি প্রেসটিজ ফ্যাক্টর৷
খড়্গপুর সদর কেন্দ্রটি বিজেপির হাতছাড়া হয়
প্রসঙ্গত, দিলীপ ঘোষ সাংসদ হওয়ার পর খড়্গপুর সদর কেন্দ্রটি বিজেপির হাতছাড়া হয়৷ উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী ওই আসন থেকে জয়লাভ করেন৷ ফলে হারানো কেন্দ্র ফিরে পেতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব৷ তবে, সেই কাজটা খুব একটা কঠিন হবে বলে মনে করছে না রাজনৈতিক মহল৷ কারণ, উপনির্বাচনের সময় ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের হয়ে ভোট করিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ আর এবার খোদ শুভেন্দু বিজেপিতে৷ ফলে খড়গপুর কেন্দ্র পুনরুদ্ধার করা বিজেপির কাছে খুব বড় চ্যালেঞ্জ নয় বলেই মনে করা হচ্ছে৷
শুভেন্দু ফ্যাক্টর
এদিকে শুভেন্দু শুধু খড়্গপুর নয়, বরং গোটা মেদিনীপুরেই বড় ফ্যাক্টর। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের প্রায় সব বিধানসভাই তৃণমূলের হাতের বাইরে চলে যায়। এরপর যদি পূর্ব মেদিনীপুরের অধিকাংশ সংখ্যাগুরু ভোট এবং কিছু অংশের সংখ্যালঘু ভোট অধিকারী ফ্যাক্টরে বিজেপিতে যায়, তাহলে ২০২১-এর নির্বাচনে দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে গেরুয়া শিবিরের ফলাফল অভূতপূর্ব হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একটি অংশ।
সংখ্যালঘু ভোট টানতে পারবেন শুভেন্দু?
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের সংখ্যালঘু ভোটারদের মধ্যে বিশেষ প্রভাব তৈরি করতে সক্ষম হন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলে ২০১১-র পর শান্তি প্রক্রিয়ার সময় শুভেন্দু অধিকারীই হয়ে ওঠেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ। সেই সময় পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের বেশ কিছু সংখ্যালঘু ভোটারদের মধ্যে শুভেন্দু অধিকারী একটা নিজস্ব প্রভাব সৃষ্টি করতে সক্ষম হন।
তৃণমূল-বিজেপির 'টাফ ফাইট' এবার বাঁকুড়া জেলার পর পর আসনে, একনজরে এলাকার রাজনৈতিক মানচিত্র