মুকুল-ঘনিষ্ঠ নেতার উপর থেকে মামলা তুলল রাজ্য! ভোটের মুখে চাপে শুভেন্দু
পুজোর আগে হঠাৎ করে প্রকাশ্যে আসেন বিমল গুরুং। প্রকাশ্যে তৃণমূলে সমর্থন করার কথা জানান তিনি। গত কয়েকদিন আগেই সমস্ত মামলা বিমল গুরুংয়ের উপর থেকে তুলে নেয় রাজ্য সরকার। যা নিয়ে চরম বিতর্কের তৈরি হয়েছে।
পুজোর আগে হঠাৎ করে প্রকাশ্যে আসেন বিমল গুরুং। প্রকাশ্যে তৃণমূলে সমর্থন করার কথা জানান তিনি। গত কয়েকদিন আগেই সমস্ত মামলা বিমল গুরুংয়ের উপর থেকে তুলে নেয় রাজ্য সরকার। যা নিয়ে চরম বিতর্কের তৈরি হয়েছে।
এরপর দীর্ঘদিন ধরে জেলে থাকা বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করল রাজ্য সরকার। তাও আবার তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্ত ছিলেন আনিসুর রহমান। ভোটের মুখে হঠাৎ কেন এই বিজেপি নেতার উপর থেকে মামলা প্রত্যাহার করতে চলেছে রাজ্য? তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
কুরবান শাহ খুনের মামলায় অভিযুক্ত আনিসুর!
তৃণমূল নেতা কুরবান শাহ খুনের মামলায় জেলে থাকা বিজেপি নেতা আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করল রাজ্য সরকার। ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর নবমীর দিন রাতে খুন হন পাঁশকুড়ার তৃণমূল ব্লক সভাপতি কুরবান শাহ। এই মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে উঠে আসে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বিজেপি নেতা আনিসুরের নাম। গ্রেফতার হন মুকুল ঘনষ্ঠ এই নেতা। এরপর থেকে জেলেই রয়েছেন আনিসুর। কিন্তু হঠাৎ কেন ভোটের মুখে আনিসুরের উপর থেকে সমস্ত মামলা রাজ্য সরকার প্রত্যাহার করে নিচ্ছে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা!
নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়ে আনিসুরের প্রসঙ্গ আনেন মমতা
জানুয়ারি মাসে নন্দীগ্রামের তেখালিতে বিশাল একটি জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র আক্রমণ শানান তিনি। আর সেই সময় নেত্রীর মুখে উঠে আসে আনিসুরের নাম। মমতা বলেছিলেন, ''আনিসুরকে অত্যাচার করে জেলে রেখে দিয়েছে।' এহেন মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। প্রশ্ন উঠতে থাকে তাঁর হাতে প্রশাসন। তিনি পুলিশমন্ত্রী। এমনকি তাঁর দলের কর্মীর খুনের ঘটনায় গ্রেফতার আনিসুর। বিজেপি নেতার প্রশংসা শুনে মৃত কুরবানের পরিবারও সেদিন বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন। তবে রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা ছিল আনিসুরকে অত্যাচার এবং তাঁকে জেলে বন্দি রাখার বিষয়ে তৃণমূল নেত্রী নাম না করে আসলে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীকেই নিশানা করেছেন। আনিসুর মুকুল-ঘনিষ্ঠ হলেও শুভেন্দু বিরোধী! শুভেন্দুর সঙ্গে একাধিক বিষয়ে মতানৈক্য আছে তাঁর। সেখানে দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় যে শুভেন্দুই সে আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
যোগ দিতে পারেন তৃণমূলে
বাংলায় ধীরে ধীরে নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করছে বিজেপি। সেই সময় তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেন আনিসুর। মুকুল রায়ের হাত ধরেই বিজেপিতে আসে। সেই সময় তৃণমূলে শুভেন্দু। এরপর এক নেতা খুনে আনিসুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে মমতার এহেন মন্তব্যের পরেই সমস্ত মামলা তুলে নিল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, ল থেকে বেরিয়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দেবেন বলেই ভোটমুখী বঙ্গে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে। খুব শিঘ্রই আনিসুর দলবদল করবেন বলে জানা যাচ্ছে। সম্ভবত কলকাতাতেই তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন আনিসুর।
কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার চেষ্টা!
ইতিমধ্যে নন্দীগ্রামে তাঁর নাম ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত চ্যালেঞ্জ একপ্রকার। পালটা সেখানে নেত্রীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। এমনটাই শোনা যাচ্ছে। সেখানে দাঁড়িয়ে আনিসুরকে সামনে রেখে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় প্রচারে ঝড় তুলতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামের সভা থেকে সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ''সেদিন কিছুতেই আমাকে নন্দীগ্রামে যেতে দেবে না। আমি তখন আমার এক সহকর্মী যাকে অত্যাচার করে আজও জেলে রেখে দিয়েছে, পাঁশকুড়ার ছেলে আনিসুর, তাকে বললাম তোর স্কুটার বা বাইক আছে? কী করব বললাম না। বাইকে করে আমি আর ও বেরিয়ে পড়লাম।'' এখনও সেই ছবি স্পষ্ট। সেই ছবি, আবেগে তৃণমূল ফের ব্যবহার করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।