ট্যাক্সিতে দু’দিকে লেখা দু’টি নম্বর, সন্দেহের জেরায় ফাঁস অপহরণের ফন্দি
রাসেল স্ট্রিট স্টেট ব্যাঙ্কের কাছে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েছিল একটি ট্যাক্সি। তা দেখে সন্দেহ হতেই পুলিশের টহলদারি ভ্যান এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
অপহরণের ছক বানচাল করে আন্তঃরাজ্য অপহরণকারীদের গ্রেফতার করল পুলিশ। কলকাতার রাসেল স্ট্রিটে ট্যাক্সি থেকে উদ্ধার করা হল অস্ত্রও। ওই ট্যাক্সির নম্বর নিয়েও আবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এক ট্যাক্সির দু'দিকে লেখা দু-দু'টি নম্বর। তাতেই সন্দেহ দৃঢ় হয়। ট্যাক্সি আরোহী তিনজনকে জেরা করতেই জানতে পারা যায় অপহরণের ছকের কথা।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাতে। রাসেল স্ট্রিট স্টেট ব্যাঙ্কের কাছে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়েছিল একটি ট্যাক্সি। তা দেখে সন্দেহ হতেই পুলিশের টহলদারি ভ্যান এগিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তখনই পুলিশে জেরার মুখে ভেঙে পড়ে অপহরণকারীরা। ফাঁস করে দেয় তাদের চক্রান্তের কথা। জানা যায়, মুম্বই থেকে তাঁরা এসেছিল নকল অস্ত্র দেখিয়ে কলকাতার দুই নামী ব্যবসায়ীকে অপহরণ করতে।
এরপরই পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করা হয় ট্যাক্সিচালক মহম্মদ আলি আজাদকেও। পুলিশের জেরায় ধৃতরা জানায়, তাদের লক্ষ ছিল কলকাতার নামী দুই শিল্পপতিকে অপহরণ করে মোটা মুক্তিপণ আদায় করা। সেইমতোই পরিকল্পনা প্রস্তুত করেছিল তারা।
পুলিশ এরপর ট্যাক্সিটিতে তল্লাশি চালায়। ট্যাক্সিটির ডিকি থেকে উদ্ধার হয় একটি বন্দুক, দুটি ছুরি, একটি পলিমার টেপ, একটি বিছানার চাদর ও একটি মানচিত্র। তাদের দু'টি মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পরে অবশ্য পরীক্ষা করে জানা যায়, উদ্ধার হওয়া বন্দুকটি নকল অর্থাৎ খেলনা বন্দুক।
ধৃতদের থেকে পাওয়া মানচিত্রে রাসেল স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণির বর্ণনা ছিল। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মুম্বই-এর এই গ্যাং অপহরণের ছক কষেছিল। ধৃতরা সবাই-ই মুম্বইয়ের। সেইমতো তদন্তের স্বার্থে মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছে কলকাতা পুলিশ।
পাশাপাশি ট্যাক্সিতে দু'টি নম্বরের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য ট্যাক্সির পিছনে লেখা ছিল ডব্লুবি-০৪ ডি-১৬৮২। আর সামনে লেখা ডব্লুবি-০৪ ডি-১৫৯২। ব্ল্যাকটেপ লাগিয়ে ট্যাক্সির নম্বরে ধোঁয়াশা তৈরি করা হয়েছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
ধৃত চারজনেরই বিরুদ্ধে অপহরণের চেষ্টার পাশাপাশি অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। অপহরণের উদ্দেশ্যেই মুম্বই থেকে এসেছিল তিনজন। তাদের নাম শেখ আরমান, জাভেদ খান ও মহসিন খান। আর মহম্মদ আলি আঅজাদ বেন্টিক স্ট্রিটের বাসিন্দা। শুক্রবার ধৃতদের ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পেশ করা হয়। তাদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।