স্বল্প টেস্ট সঙ্গে দেশে সর্বাধিক মৃত্যুর হার তিলোত্তমায়, আশঙ্কায় প্রহর গুনছে শহর কলকাতা
ব্যস্ত ট্রাফিক, গড়িয়াহাট, নন্দন, ভিক্টোরিয়ার ভীড়, ময়দান,গড়ের মাঠে ছেলেদের খেলার আসর, পার্ক স্ট্রিটের হইহই, উত্তর কলকাতার ঘিঞ্জি গলি আর দক্ষিণ কলকাতার সদা ব্যস্ত রাস্তা- এসব চিত্রই গত তিন মাসে প্রায় ভুলতে বসেছে রাজ্যবাসী। এখন তিলোত্তমা অন্যভাবে খবরের শিরোনামে। দেশের অন্যান্য সর্বাধিক জনবহুল শহর গুলির মধ্যে মৃত্যুহারের সবার উপরে জায়গা করে নিয়েছে কলকাতা।
করোনার প্রকোপে কাবু কলকাতা, আক্রান্ত প্রায় ২ হাজার
খোদ শহর কলকাতাতেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২হাজারের কাছাকাছি, এবং মৃত প্রায় ১৯৪ জন। দেশের যেই ১৬ টি জনবহুল শহরের করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে তার মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যুহার কলকাতাতেই। বর্তমানে কলকাতার মৃত্যুহার ৯.৯৮ শতাংশ যা গোটা দেশের মৃত্যুহারের থেকে প্রায় সাড়ে তিন গুণ বেশি। বর্তামানে গোটা দেশে মৃত্যু হার ২.৮৭ শতাংশ।
রাজ্যে করোনা পরীক্ষার মাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে কম
রাজ্যে করোনা পরীক্ষা কম হওয়ায় প্রথম দিকে মৃত্যু হারও কমই ছিল। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য ও কেন্দ্রের দ্বন্দ্ব অব্যাহত ছিল। এরপর পরীক্ষা হতেই ক্রমেই বাড়তে থাকে আক্রান্তের সংখ্যা। গতকাল অবধি রাজ্যে করোনা ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ২৫৭৩ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ২৭৭ জন আক্রান্ত হওয়ায় শুক্রবার সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ২৭৩৬, এবং মৃত্যু হয়েছে ৭জনের। যার ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২৭০। এই কম পরীক্ষা হওয়ার পেছনে রাজ্যে প্রশাসনকেই দায়ী করছে বিরোধীরা। যদিও রাজ্য এই দায় ঝেড়ে আঙুল তুলছে কেন্দ্রের দিকেই।
শিকেয় বিধিনিষেধ, শহরের আনাচেকানাচে উপচে পড়ছে ভীড়
'দ্য সিটি অফ জয়ের' শহর কলকাতায় খুশি কোথায়? উচ্চ মৃত্যুহার, ২০০০ আক্রান্তের সংখ্যা নিয়েও বিধিনিষেধ শিকেয় তুলে আমেজেই দিন কাটাচ্ছেন শহরবাসী। পাশাপাশি রাজ্য সরকার লকডাউন শিথিল করতেই সোনায় সোহাগা। বাজার, দোকান পাট, খেলার মাঠ, রাস্তাঘাটে ইতিমধ্যেই উপচে পড়ছে ভীড়। যার জেরে আরও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। অন্যদিকে, লক্ষণ থাকলেও কোয়ারেন্টাইনের ভয়ে অনেকেই লুকিয়ে যাচ্ছেন তাদের অসুবিধে,আর এতেই বাড়ছে বিপদ।
খোদ মহানগরেই ২৮৬ টি কনটেনমেন্ট জোন
গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় আগামী পয়লা জুন থেকেই রাজ্যের সমস্ত ধর্মস্থান, ও ৮ ই জুন থেকে সরকারি বেসরকারি সমস্ত অফিস খোলার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু, খোদ কলকাতার দিকে তাকালেই আতঙ্কে শিউরে উঠছে রাজ্যবাসী। রাজ্যে ইতিমধ্যেই ১০৭১ টি কনটেনমেন্ট জোন রয়েছে,যার মধ্যে খোদ কলকাতাতেই রয়েছে ২৮৬ টি। এই অবস্থায় কীভাবে করোনা মোকাবিলায় এখনই ঘুরে দাঁড়াবে তিলোত্তমা? প্রশ্ন থেকেই যায়।