যে পঞ্চবাণে মুকুলকে নিশানা করলেন কুণাল, দেখে নিন এক নজরে
পর পর বাণ ছাড়লেন তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণাল ঘোষ। চিটফান্ডকাণ্ডে রাজ্য সরকারকে তো বিঁধলেনই। সেইসঙ্গে বিঁধলেন বিজেপিকেও। ছাড়লেন না তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে সদ্য যোগ দেওয়া মুকুল রায়কেও।
এবার বাণ ছাড়লেন তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণাল ঘোষ। চিটফান্ডকাণ্ডে রাজ্য সরকারকে তো বিঁধলেনই। সেইসঙ্গে বিঁধলেন বিজেপিকেও। ছাড়লেন না তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে সদ্য যোগ দেওয়া মুকুল রায়কেও। এক এক করে পঞ্চবাণে বিদ্ধ করে ছাড়লেন তিনি।
রাজ্যে পুলিশরাজ থেকে শুরু করে চিটফান্ড তদন্তে সিআইডির ভূমিকা, জনপ্রতিনিধি কেনাবেচা এবং তৃণমূলের কালো টাকা নিয়ে সরব তিনি। এমনকী তিনি দাবি করলেন মুকুল রায়কেই জবাব দিতে হবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগের। তাঁকেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে নিয়েও এদিন প্রতিবাদে মুখর কুণাল।
আর মুকুল রায় তাঁর ছোট্ট জবাবে শুধু এই টুকুই বললেন। অপেক্ষা করুন, তাঁর গোপন ফাইলের 'পার্ট টু' আর 'পার্ট থ্রি' খুব শীঘ্রই প্রকাশ্যে আসছে। তাতেই সব উত্তর পেয়ে যাবেন। সেই পর্যন্ত আপনাদের ধৈর্য্য করতে হবে। ধৈর্য্যের বাঁধ এত তাড়াতাড়ি ভাঙলে চলবে না।
পুলিশের দলতন্ত্রে মুকুলের ভূমিকা
মুকুল রায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে পুলিশ-রাজ নিয়ে ভুরি ভুরি অভিযোগ করছেন। মিথ্য মামলায় ফাঁসানোর কথা তুলছেন। এতদিন পর তিনি পুলিশের উপর দলতন্ত্র কায়েম করার কথা বলছেন। এই প্রসঙ্গ তুলে ধরেই কুণাল ঘোষ বলেন, 'তাহলে আমি যেদিন গ্রেফতার হয়েছিলাম, সেদিন মুকুল রায় প্রতিবাদ করেননি কেন? কেন পুলিশের দলতন্ত্রের বিরুদ্ধে সেদিন গর্জে ওঠেনি তাঁর প্রতিবাদী কণ্ঠ। আজ তিনি বিজেপির মঞ্চ পেয়েছেন বলেই কি এত ভারী ভারী কথা?' এদিন মুকুলের বাণেই মুকুল রায়কে বিদ্ধ করলেন কুণাল ঘোষ।
জনপ্রতিনিধি
কেনা-বেচা
কীসের
বিনিময়ে
কুণাল ঘোষ বলেন, রাজ্যে দেদার জনপ্রতিনিধি কেনাবেচা হয়েছে। তা হয়েছে কার স্বার্থে। এবং কীসের বিনিময়ে। তা করেছেন মুকুলদা। মুকুলদা ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক। তিনিই পুরো সংগঠন দেখতেন দলে। তাঁকেই এবার জবাব দিতে হবে এই প্রশ্নের। ঠিক এই প্রশ্নই শুক্রবার তুলেছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথার সুরেই সুর মিলিয়ে এবার কুণাল ঘোষ জবাবদিহি চাইলেন মুকুল রায়ের কাছে। সেইসঙ্গে তিনি বাড়তি সংযোজন করলেন, এত যে দল ভাঙালেন, বিনিময়ে তিনি কী পেতেন? এই দল ভাঙানোর খেলায় তাঁর স্বার্থ কী ছিল? তারও জবাব দিতে হবে।
কেন
শুধু
সারদা,
অ্যালকেমিস্ট
নয়
কেন?
এতদিন চিটফান্ডের তদন্ত মানে শুধু সারদা আর সারদা করা হয়েছে। কেন অ্যালকেমিস্ট বা পিনকন, এমপিএসের মতো অন্যান্য চিটফান্ডগুলি নিয়ে সে অর্থে তদন্ত হয়নি। রোজভ্যালি নিয়েও তদন্ত সেভাবে এগোয়নি। কেন রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডিও চুপ থেকেছে? সারদা ছাড়া অন্য চিটফান্ডগুলি নিয়ে কেন মাথাব্যাথা নেই গোয়েন্দাদের। কুণাল ঘোষ বলেন, অ্যালকেমিস্ট কর্ণধার তৃণমূল সাংসদ কেডি সিংয়ের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ হয়েছে। তা সত্ত্বেও তদন্তে কোনও গতিপ্রকৃতি আসেনি। কেন বেছে বেছে শুধু এক-আধটা চিটফান্ড বেছে নেওয়া হবে তদন্তের জন্য?
তৃণমূলের
কালো
টাকার
জবাবদিহি
মুকুলকেই
করতে
হবে
একেবারে কোম্পানি ধরে তৃণমূলের কালো টাকার হিসেব তুলে ধরেন কুণাল ঘোষ। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এর কৈফিয়ৎও দিতে হবে মুকুল রায়কে। সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী ৯ কোটি ১৮ লক্ষ ৮৪ হাজার ১১৫ টাকা তৃণমূলের ফান্ডে ঢুকে রয়েছে। এর ফলে যে কোনও সময় বিপদে পড়তে পারে তৃণমূল। এই টাকার একটা পার্টের ডিক্লেরেশনে সই রয়েছে মুকুল রায়েরই। তিনি তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক থাকার সময়ই এই টাকার অধিকাংশ ঢুকেছিল। তাই জবাবদিহি তো তাঁকেই করতে হবে। এই বেহিসেবি টাকাকে তৃণমূল অনুদান বলে দাবি করে। আর যে তিনটি সংস্থা এই টাকা দিয়েছিল তারা ঋণ বলে উল্লেখ করে। কিন্তু ওই টাকা তৃণমূলের কালো টাকা বলেই গণ্য হবে।
দিলীপের
দল
ভাঙানোর
টোপ
শুক্রবার বিজেপির ধর্মতলার মঞ্চ থেকে দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ টোপ দিলেন, ভুবনেশ্বর বা পাটনার টিকিট কাটার আগে তৃণমূল ছেড়ে চলে আসুন বিজেপিতে। তাঁর কথাতেই প্রমাণ হয়ে গেল, বিজেপিতে এলেই মামলায় রেহাই। তার মানে বিজেপি সারদা-নারদ বা অন্যান্য মামলা চালাচ্ছে তৃণমূলের অভিযুক্তদের দল ভাঙিয়ে আনতেই, তা প্রমাণ করে দিলেন দিলীপ ঘোষ নিজেই। এদিন আনুষ্ঠানিক ভাবেই তিনি ঘোষণা করে দিলেন, বিজেপিতে এলেই মামলায় মুক্তি। এদিন দিলীপ ঘোষের ওই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি।