অসমের এনআরসি নিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা, 'হিন্দুত্ব তাস' খেললেন মমতা
অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জী নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ফের একবার গর্জে উঠলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জী নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ফের একবার গর্জে উঠলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জোর করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভারতীয় নাগরিকদের উদ্বাস্তু, অনুপ্রবেশকারী বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি সরকারের এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে মানুষের হয়ে তিনি প্রতিবাদে সরব হয়েছেন ও আগামিদিনেও হবেন বলে জানিয়ে দিলেন মমতা।
লালকেল্লায় বুধবার সকালে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। গত কয়েকদিনে অসমে যা চলেছে তা নিয়ে কেন্দ্র মাথা গলালেও উদ্বেগ দেখায়নি। পাল্টা বিরোধীদের আক্রমণ করে গিয়েছে। এদিন ফের একবার সুযোগ পেয়েই হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপিকে সেই অস্ত্রেই ঘায়েল করার চেষ্টা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, অসমের ৪০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ২৫ লক্ষ হিন্দু বাঙালি, ১৩ লক্ষ মুসলমান বাঙালি ও ২ লক্ষ মানুষ বিহারি, নেপাল ও অন্যান্য মিলিয়ে রয়েছেন। এদের চক্রান্ত করে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
মমতার অভিযোগ, বিজেপি দেশ ভাগাভাগির খেলায় নেমেছে। জোর করে মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। যারা প্রতিবাদ করছে তাদের নামে মিথ্যা মামলা করে জেলে ভরে দিচ্ছে। এভাবে জোর করে অনুপ্রবেশকারীর তকমা দেগে দেওয়া হচ্ছে। তার উপরে ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি করে রাখা হয়েছে। ১২০০ মানুষকে সেখানে আটকে বাকীদের ভয় দেখানো হচ্ছে।
বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, বহু মানুষ রয়েছেন যাঁরা তাঁদের বাবা-মা বা পূর্বপুরুষের জন্মের সার্টিফিকেট দেখাতে পারেননি। কারণ আগে এসব ছিল না। সবাই খেয়াল করে এসব রাখত না। তাদের কাছে যদি পুরনো প্রমাণ চাওয়া হয় তাহলে কোত্থেকে তাঁরা দেবেন? এমন মানুষদের অনুপ্রবেশকারী বলে নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও মমতা অভিযোগ করেছেন।
শরণার্থীদের কথা বলে জাতিসংঘের রেজোলিউশনের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, অন্য কোথাও সমস্যা হলে অন্য দেশে বা রাজ্যে যদি কেউ আশ্রয় গ্রহণ করে তাহলে তাদের আশ্রয় দিতে সরকার বাধ্য থাকে। আর অসমে যে মানুষদের বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁরা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ কাট অব ডেটের আগেই এসেছেন। রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিজেপি অসমে এসব করে গন্ডগোল পাকাচ্ছে।
এই প্রসঙ্গে দেশ স্বাধীনের সময়ে জওহরলাল নেহরুর সময়ে চুক্তি ও ১৯৭১ সালে ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির কথা উল্লেখ করেন মমতা। বলেন, যাঁরা ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের আগে এদেশে এসেছেন তাঁরা অবশ্যই ভারতীয় নাগরিক। বিজেপির কথায় তাঁরা নাগরিকত্ব হারাতে পারেন না। এভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন মমতা।