বিজেপির অস্ত্র এবার মমতার ঝুলিতে! শরণার্থীদের জমির অধিকার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা, বেঁধে দিলেন সময়
রাজ্যের তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিনেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্যাবিনেটের। সোমবার রাজ্য ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১৯৭১-এর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পবর্তী সময়ে যাঁরা এদেশে
রাজ্যের তিন কেন্দ্রে উপনির্বাচনের দিনেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য মন্ত্রিসভার। সোমবার রাজ্য ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ১৯৭১-এর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পবর্তী সময়ে যাঁরা এদেশে আশ্রয়ের আশায় এসেছিলেন, তাঁদেরকে জমির অধিকার দেওয়া হবে। কেন্দ্রের সারা দেশে এনআরসি ঘোষণার মোকাবিলায় এটি মমতার সরকারের মোক্ষম অস্ত্র বলে মনে করছেন অনেকেই।
শরণার্থীদের জমির অধিকার
১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে কিংবা পরে অনেক শরণার্থী এসেছিলেন এরাজ্যে। তাঁরা কেন্দ্র, রাজ্য কিংবা বেসরকারি জমিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে সেখানেই তাঁদের বাসস্থান হয়েছে। কিন্তু সেইসব মানুষগুলো জমির অধিকার পাননি। এবার সেইসব মানুষদের জন্যই সিদ্ধান্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
১.২৫ লক্ষ পরিবারের উপকার
ক্যাবিনেট বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অনেক শরণার্থী পরিবারেরই জমির অধিকার নেই। অনেকেই বাস করেন কেন্দ্র কিংবা রাজ্য সরকারি জমির ওপর। অনেকে বেসরকারি জমির ওপরেও রয়েছেন। এই ধরনের পরিবারের সংখ্যা ১.২৫ লক্ষ বলে জানিয়েছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এঁদের মধ্যে ৫৫ হাজার পরিবার কেন্দ্রীয় সরকারি জমির ওপর এবং ১৩,৩৫৩ টি পরিবার রাজ্য সরকারের জমির ওপর বসবাস করছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এর আগে ৯৪ টি শরণার্থী কলোনিকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এবার ৩ একর পর্যন্ত জমিতে থাকা শরণার্থী কলোনিকে স্বীকৃতি দেওয়া হল বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজ্যের জমিতে কোনও অসুবিধা না হলেও, অনেক সময়েই কেন্দ্রীয় সরকারি এবং বেসরকারি জমিতে থাকা কলোনিগুলিকে উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়। সেইসব জমিকে এবার আলাদা করে চিহ্নিত করে তাঁদের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যা
নির্বাচনের দিনেই সিদ্ধান্ত
শরণার্থীদের জমির অধিকার নিয়ে সিদ্ধান্ত এমন একটা দিনে নেওয়া হল, সেদিন রাজ্যের তিনটি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন চলছিল। যার মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের কালিগঞ্জ এবং নদিয়ার করিমপুর একেবারেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থিত। এই দুটি কেন্দ্রের বহু পরিবার ১৯৭১ সালের যুদ্ধের আগে কিংবা পরে এসেছেন। রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের মধ্যে অনেকেই বলছেন, নির্বাচনের দিনে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২০-র পুরসভা নির্বাচন এবং ২০২১-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে ভোটের মেরুকরণ রুখতে চাইলেন।
সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ বিজেপির
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শরণার্থীদের জমির অধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্তকে গিমিক বলেছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু। কেননা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল শীঘ্রই সংসদে পাশ হয়ে যাবে। এরপর সাধারণ মানুষকে তাদের নাগরিকত্বের অধিকার প্রমাণ করতে হবে। তিনি বলেন, অনেক বছর ধরেই তারা শুনে আসছেন শরণার্থীদের জমির অধিকার দেওয়া হবে। যা হয়নি। এই ঘোষণাতেও তা হবে না, মন্তব্য করেছেন তিনি।
কলকাতাতেও সেঞ্চুরি হাঁকাল পেঁয়াজের দাম