কেকের পর কালী পুজোয় সুর সম্রাজ্ঞী, মণ্ডপ সাজছে পূর্ব কলকাতায়
কেকের পর কালী পুজোয় সুর সম্রাজ্ঞী, মণ্ডপ সাজছে পূর্ব কলকাতায়
দুর্গাপুজোয় উত্তর কলকাতার কবিরাজ বাগানের থিম ছিল বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী কেকে। দুর্ঘটনায় শিল্পীর মৃত্যুর ঘটনায় উথালপাথাল হয়েছিল কলকাতা থেকে শুরু করে সারা দেশ। বিখ্যাত শিল্পীকে স্মরণ করে তাঁকেই প্যান্ডেলের থিম বানিয়েছিল কবিরাজ বাগান। অনেকটা সেই ভাবনা থেকেই এবার কালীপূজোর মণ্ডপে শ্রদ্ধা জানানো হবে লতা মঙ্গেশকরকে।
শ্যামা পুজোর থিম
সুরসম্রাজ্ঞী আমাদের এই বছরেই ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তাই তাঁর শ্রদ্ধায় সুকান্তনগর সেন্টার ফর কালচার এন্ড স্পোর্টস এর উদ্যোগে শ্যামা পুজোর আয়োজন করা হয়েছে। সম্পাদক অমিত সেনগুপ্ত বলেন, 'পুজোর ৩১ তম বর্ষ উপলক্ষ্যে এবার আমাদের থিম সম্রাজ্ঞী কোকিল কন্ঠী স্বর্গীয় লতা মঙ্গেশকর, গীতশ্রী স্বর্গীয় সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, সুরের জাদুকর স্বর্গীয় বাপি লাহিড়ী, এঁদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে সংগীতের বাদ্যযন্ত্র দিয়ে মণ্ডপ তৈরি।'
উদ্বোধন
চিংড়িঘাটা ক্রসিংয়ের কাছে, সুকান্তনগর বাস স্টপেজের বিপরীতে আজ রবিবার সন্ধ্যে ৭টায় আমাদের প্রতিমার আবরণ উন্মোচন করা হবে। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে পুজোর উদ্বোধন করবেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী তথা ১১৬ বিধাননগর বিধানসভার সম্মানীয় বিধায়ক মাননীয় শ্রী সুজিত বোস এবং ভারত সেবাশ্রম মহাসংঘের সম্মানীয় মহারাজ।
লতা মঙ্গেশকর
লতা মঙ্গেশকর ভারতীয় সঙ্গীতজগতের এক জীবন্ত কিংবদন্তী। দীর্ঘ ছয় দশকেরও বেশি কর্মজীবনে গান গেয়েছেন ২০টি আঞ্চলিক ভাষায়, কণ্ঠ দিয়েছেন ১০০০ এরও বেশি ভারতীয় ছবির গানে। সন্মানিত হয়েছেন Padma Bhushan, Dadasaheb Phalke Award এবং Padma Vibhushan পুরস্কারে। ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান "ভারতরত্ন" পাওয়া তিনিই দ্বিতীয় সঙ্গীতশিল্পী।
সুরসাধিকা
সুরসাধিকা লতা মঙ্গেশকরের জন্ম ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯২৯। অমিতাভ বচ্চন যার কন্ঠকে তুলনা করেছেন ঈশ্বরের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে। তিনি এক হাজারের বেশি ছবিতে গান করেছেন। এছাড়া ভারতের ২০টি অঞ্চলিক ভাষাতেও গান গাওয়ার একমাত্র রেকর্ডটি তারই। বাংলাতেও তিনি অনেক গান করেছেন। ১৯৫৯ সালে সলিল চৌধুরীর পরিচালনায় প্রথম বাংলা গানে কণ্ঠ দেন লতা মঙ্গেশকর। গানটি ছিল 'না যেওনা, রজনী এখনো বাকি।' সলিল চৌধুরীর সুরে এরপর অনেক জনপ্রিয় গান গেয়েছেন তিনি। তাঁর গাওয়া রঙ্গিলা বাঁশিতে, ও মোর ময়না গো, সাত ভাই চম্পা - এই গানগুলি এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে। ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারত রত্ন পাওয়া তিনিই দ্বিতীয় সঙ্গীতশিল্পী। কৃষ্ণপ্রেমে সমর্পিত লতাজী বিশ্বাস করেন, ভালোবাসা পাওয়াটাই জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। মা একদিন বলেছিলেন, দুঃখ যতো বাড়ে, ততোই উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠে শিল্প। ১৯৭৪ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি গান রেকর্ড করার জন্য তাঁর নাম গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস এ স্থান পায়। এ সময় তিনি প্রায় ৩০,০০০ গান রেকর্ড করেছিলেন। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, বর্তমানে তাঁর গানের সংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার।