১০টি মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন, হাইকোর্টে সংঘাতে নয়া মোড়
কলকাতা হাইকোর্টে সংঘাত শুরু হয়েছিল বিচারব্যবস্থা নিয়ে। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
কলকাতা হাইকোর্টে সংঘাত শুরু হয়েছিল বিচারব্যবস্থা নিয়ে। বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের বেঞ্চের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এবার গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি ও নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ-সহ ১০টি মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন। ফলে হাইকোর্টে বিচারপতিদের সংঘাত নয়া মোড় নিল।
কলকাতা বিচারব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় তির ছুড়েছিলেন বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চের দিকে। তাঁর অভিযোগ ছিল, সিঙ্গল বেঞ্চের হাত বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। সিঙ্গল বেঞ্চ যা রায় দিচ্ছে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ তাতে স্থগিতাদেশ জারি করছে। সেই কারণেই উষ্মা প্রকাশ করে দ্বিচারিতার অভিযোগ এনেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিচারপতিদের কাজ করার এক্তিয়ার নিয়েও। বলেছিলেন এখন সময় এসেছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণ চেম্বারে এসে আইনজীবীরা প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতার নাম নিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন আইনজীবীরা।
এই সংক্রান্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার আবেদন জানিয়েছিলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে আবোদন জানান তিনি। সম্প্রতি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, এসএসসির নবম ও দশম শ্রেণির নিয়োগ মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চে যেতেই সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে দুর্নীতির আদতে কোনও তদন্ত শুরু হয়নি।
উল্লেখ্য, বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ ওই সব মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর ডিভিশন বেঞ্চের দিকে আঙুল তোলার পর বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন মামলাগুলি থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। তিনি মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের পিছনে ব্যক্তিগত কারণ রয়েছে বলে জানান। কিন্তু ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে তাঁর সরে দাঁড়ানোর কারণ হাইকোর্টে বিচারব্যবস্থা নিয়ে সংঘাত।
সোমবার বিচারপিত হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলাগুলির শুনানির কথা ছিল। কিন্তু শুনানির শুরুতেই বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন জানিয়ে দেন, তিনি আর এই মামলা শুনবেন না। এসএসসি, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি-সহ ১০টি মামলা থেকে তিনি তাঁর বেঞ্চকে সরিয়ে নিচ্ছেন। উল্লেখ্য, এসএসসি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় কমিটির আহ্বায়ক শান্তিপ্রসাদ সিনহা ও বাকি চার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেইমতো সিবিআই শান্তিপ্রসাদ সিনহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। বাকি চার সদস্য সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করেন। তার শুনানি এদিন হচ্ছে না। মঙ্গলবার অন্য কোনও বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হতে পারে।