বাঙালির 'নস্টালজিয়া' সুচিত্রা সেন প্রয়াত
টানা ২৬ দিন যমে-মানুষে টানাটানির পর অবশেষে অন্তরালেই বিদায় নিলেন মহানায়িকা। শেষ হয়ে গেল বাংলা চলচ্চিত্রের এক অধ্যায়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। গত ২৩ ডিসেম্বর কলকাতার বেল ভিউ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অসুস্থ সুচিত্রা সেন। অবশেষে শুক্রবার সকাল ৮-২৫ মিনিটে মহানায়িকার জীবনাবসান হয়।
সুচিত্রা সেনের আসল নাম রমা দাশগুপ্ত। ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল তৎকালীন পূর্ববঙ্গের পাবনায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। বাবা ছিলেন স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক। বাঙালি শিল্পপতি আদিনাথ সেনের ছেলে দিবানাথ সেনকে বিয়ে করার পর ১৯৫২ সালে নাম বদলে প্রথম বাংলা চলচ্চিত্রে পা রাখেন তিনি। নাম হয় সুচিত্রা সেন।
'শেষ কোথায়' ছবিতে প্রথম আত্মপ্রকাশ সুচিত্রা সেনের। ১৯৫৩ সালে মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে জুটি বেঁধে প্রথম ছবি 'সাড়ে চুয়াত্তর'। তার পর পুরোটাই ইতিহাস। একে অপরের সঙ্গে জুটি বেঁধে 'হারানো সুর', 'সপ্তপদী', 'সবার উপরে', 'চাওয়া পাওয়া'-র মতো হিট ছবি উপহার দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে কিংবদন্তি জুটি হয়ে উঠেছিলেন উত্তম-সুচিত্রা।
শুধু বাংলা নয়, হিন্দি ছবিতেও নিজের অভিনয়ের ছাপ রেখে গিয়েছেন সুচিত্রা। 'মমতা', 'আঁধি' ছবির জন্য পুরস্কৃত হন তিনি। এছাড়াও শিল্পকলায় অনবদ্য অবদানের জন্য 'পদ্মশ্রী' উপাধিও পেয়েছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের থেকে পেয়েছেন 'বঙ্গবিভূষণ'-ও।
১৯৭৮ সালে 'প্রণয়পাশা' ছবিতে শেষবার দেখা দিয়েছিলেন মহানায়িকা। তারপর থেকেই নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। বাঙালিদের মধ্যে কৌতূহল উসকে দিয়ে আত্মনির্বাসনের জীবনই বেছে নিয়েছিলেন মহানায়িকা। মেয়ে মুনমুন, দুই নাতনি রিয়া-রাইমা ও হাতে গোনা চিকিৎসক-নার্স ছাড়া গত সাড়ে তিন দশক ধরে কারও সামনে আসতে নারাজ ছিলেন তিনি।
শেষ প্রহরেও সেই অন্তরালেই মহাপ্রস্থান হল মহানায়িকার।
<center><iframe width="100%" height="360" src="//www.youtube.com/embed/_RcViQrK0OQ?feature=player_detailpage" frameborder="0" allowfullscreen></iframe></center>