For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

২০২২ খ্রিস্টাব্দ: নতুন বছরে বাংলাদেশের সামনে যে সাতটি চ্যালেঞ্জ

  • By Bbc Bengali

ফানুস
Getty Images
ফানুস

নিরাপত্তার প্রবল কড়াকড়ি থাকার পরেও রাত ১২টা এক মিনিটে আতশবাজি, ফানুস উড়িয়ে খ্রিস্টীয় নতুন বছর ২০২২ সালকে বরণ করে নিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ।

গত দুই বছরের মতো এবারও নতুন বছর এসেছে বিশ্ব জুড়ে করোনা মহামারির মধ্যে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশাবাদ জানিয়েছে যে, ২০২২ সালে করোনাভাইরাস মহামারিকে পরাস্ত করতে পারবে বিশ্ববাসী। তবে সেজন্য বিশ্বের দেশগুলোকে একত্রে কাজ করতে হবে।

কিন্তু নতুন বছরে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে বাংলাদেশকে?

করোনাভাইরাস ও অমিক্রন

গত দুই বছর ধরে করোনাভাইরাসের আক্রমণের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। নতুন করে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে অমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ।

এই পর্যন্ত বাংলাদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ২৮ হাজার ৭২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন প্রতিদিন নতুন করে শনাক্ত হচ্ছে পাঁচশো জনের বেশি কোভিড রোগী। বাংলাদেশে মোট শনাক্ত হয়েছে ১৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫৩৯ জন।

করোনাভাইরাস
Getty Images
করোনাভাইরাস

তবে নতুন বছরেও করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে সরকারের জন্য, বলছেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন শারমীন ইয়াসমিন।

তিনি বলছেন, ''একটার পর একটা করোনাভাইরাসের নতুন ধরন আসছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ার পর সেটা বাংলাদেশেও আসছে। এটা ঠেকাতে পারাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যেভাবে আমাদের সব বন্দর খোলা আছে, তাতে এটা করা কঠিন।''

বর্তমান ভ্যারিয়েন্ট অমিক্রন যেহেতু অতি দ্রুত বিস্তার লাভ করতে সক্ষম তাই এই ভ্যারিয়েন্টের মোকাবেলা করা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

''আমরা পদক্ষেপগুলো অনেক দেরিতে নেই। বর্তমানে জনসাধারণের মধ্যে একধরনের শিথিলতা দেখা যাচ্ছে। সব ধরনের পাবলিক অনুষ্ঠান হচ্ছে, কিন্তু সরকারের এই ব্যাপারে কোন নজরদারি আছে বলে দেখা যাচ্ছে না। আমাদের নিয়মনীতিগুলো পালনের ব্যাপারে আরও সোচ্চার হতে হবে। প্রয়োজনে সরকারকে আইনের প্রয়োগও করতে হবে। '' বলছেন শারমীন ইয়াসমিন।

শতভাগ মানুষকে টিকাদান

বাংলাদেশের শতভাগ মানুষের জন্য করোনাভাইরাসের টিকা নিশ্চিত করা বাংলাদেশের জন্য এখনো একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

টিকার জন্য বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হয় কোভ্যাক্স সহায়তার ওপর।

বাংলাদেশের অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষকে ২০২২ সালের জুন মাসের মধ্যে টিকার আওতায় আনতে চায় বাংলাদেশের সরকার। কিন্তু ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৬শে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের মাত্র ২৮.৪৪ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন।

করোনাভাইরাসের টিকা
Getty Images
করোনাভাইরাসের টিকা

বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি মি. শেলডন ইয়েট বলেন, "মহামারি থেকে পরিত্রাণের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হল টিকা পাবার সমঅধিকার নিশ্চিত করা এবং বিশ্বব্যাপী টিকা দেওয়ার হার বাড়ানো।''

বাংলাদেশে প্রায় ১০ কোটি মানুষকে টিকা দেয়ার পর সরকার এখন বুস্টার ডোজের কার্যক্রম শুরু করেছে। বুস্টার ডোজ হিসাবে দেয়া হচ্ছে ফাইজার, মর্ডানা এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।

কিন্তু জনসংখ্যার বিচারে তা এখনো সন্তোষজনক নয় বলে মনে করছেন পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন শারমীন ইয়াসমিন।

তিনি বলছেন, ''টিকার কার্যক্রম আরও বাড়াতে হবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমরা কিন্তু এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছি। করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে হলে আমাদের দেশের সব জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আর আমার মতে, এটাই সরকারের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।''

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

গত বছরের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি ছিল বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বিশেষ বাহিনী র‍্যাব এবং প্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান ছয় জন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তরের নিষেধাজ্ঞা।

নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, র‍্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে।

সেই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো, মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ প্রকাশ বাংলাদেশের জন্য নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে একতরফা বলে বর্ণনা করা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে। কীভাবে এমন সিদ্ধান্ত এলো-এই প্রশ্ন তুলেছেন মন্ত্রীদের অনেকে।

র‍্যাবের টহল দল
Getty Images
র‍্যাবের টহল দল

বাংলাদেশ সরকার এই নিষেধাজ্ঞায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদও জানিয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার এখনও মনে করছে, আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন সম্ভব হতে পারে।

বিশ্লেষক আলী রিয়াজ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিবর্তন করা সম্ভব। তবে নিষেধাজ্ঞার পেছনে যেসব কারণ দেখানো হয়েছে, সেগুলোর ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।

মি. রিয়াজ বলেছেন, "পরিবর্তনের সুযোগ অবশ্যই থাকে, যদি এখন বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হয়। যে অভিযোগগুলো এসেছে, সেগুলোর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া এবং প্রতিষ্ঠান হিসাবে র‍্যাবের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাসহ কাঠামোগত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। বিষয়গুলোতে পদক্ষেপ নিতে হবে। শুধু আলোচনা করলে হবে না।"

বাক স্বাধীনতা ও মুক্ত চিন্তা

গত কয়েক বছরের মতো বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক চর্চা ও মুক্তচিন্তার প্রশ্নে উদ্বেগ থেকে যাচ্ছে ২০২২ সালেও।

গত কয়েক বছরের মতো গত বছরেও গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখির কারণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে মামলা দেয়ার বিষয়টি দেশ জুড়ে সাংবাদিকদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদের মুখে কয়েকদিন পরে তাকে জামিন দেয়া হলেও এখনো তার পাসপোর্ট জব্দ রয়েছে।

কর্তৃত্ববাদী সরকার ব্যবস্থা নিয়ে নির্মিত বিদ্রুপাত্মক চলচ্চিত্র দ্যা গ্রেট ডিক্টেটর-এ অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন। চলচ্চিত্রটি ১৯৪০ সালে মুক্তি পায়।
Getty Images
কর্তৃত্ববাদী সরকার ব্যবস্থা নিয়ে নির্মিত বিদ্রুপাত্মক চলচ্চিত্র দ্যা গ্রেট ডিক্টেটর-এ অভিনেতা চার্লি চ্যাপলিন। চলচ্চিত্রটি ১৯৪০ সালে মুক্তি পায়।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ফ্রিডম হাউজের 'ফ্রিডম অন দ্য নেট ২০২১' প্রতিবেদনে ইন্টারনেটে বাকস্বাধীনতার সূচকে ১০০তে বাংলাদেশকে দেয়া হয়েছে মাত্র ৪০ পয়েন্ট। সেই বিবেচনায় বাংলাদেশে ইন্টারনেটে বাকস্বাধীনতা আংশিক মুক্ত বলে অভিহিত করা হয়েছে।

বাকস্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আর্টিকেল নাইনটিনের বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ফারুখ ফয়সাল বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''গত বছরগুলোয় বাংলাদেশের যেমন উন্নতি হয়েছে, অনুন্নত দেশ থেকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত হয়েছে, অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু একটাও প্রশ্ন উঠেছে যে এটা টেকসই কিনা? এই প্রশ্নটি উঠছে দুইটি কারণে। এদেশে গণতন্ত্রের মূল্যবোধ কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে? এবং তারই সাথে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা এবং মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা জড়িত। ''

আর্টিকেল নাইনটিন বছর শেষ হবার আগে তাদের সংগৃহীত তথ্য উপাত্ত পেশ করে জানিয়েছে যে, ২০২১ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বাংলাদেশে যত মামলা হয়েছে, তার মধ্যে ৪০ শতাংশ মামলাই হয়েছে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীসহ সরকারি দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নামে কটূক্তির কারণে।

সরকারি দলের এসব নেতাদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কিংবা মন্ত্রীরা ছাড়ারও আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের মতো সংগঠনের নেতারাও রয়েছেন, যাদের নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হয়েছে।

যদিও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় আইন বিষয়ক সম্পাদক বলেন যে, মামলার উপাদান ছিলো বলেই এসব মামলা হয়েছে।

'ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে কটূক্তির' অভিযোগেই ৪০ শতাংশ মামলা

বাকস্বাধীনতা এবং মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার প্রশ্নে ফারুখ ফয়সাল আরও বলছেন, ''যদি বর্তমান সরকার বিষয়টির মীমাংসা না করে, তাহলে এ বছরের চেয়ে আগামী বছর ভালো হবে, তার কোন লক্ষণ আমরা দেখছি না।''

নির্বাচন কমিশন ও গণতন্ত্র

নতুন বছরের শুরুতে সবার চোখ থাকবে সম্ভবত নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়ার দিকে। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠনে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করেছেন।

কিন্তু শুরুতেই অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও সিপিবি সংলাপে না যাওয়ার ঘোষণা দেয়ায় এই উদ্যোগ বড় ধাক্কা খেয়েছে।

সামনের বছরেই বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশন
BBC
নির্বাচন কমিশন

তার আগে গণতন্ত্র নিয়ে ভাবমূর্তি সংকটে থাকা বাংলাদেশের জন্য একটি যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

সব দলের আলোচনার ভিত্তিতে একটি নিরপেক্ষ ও বিতর্কহীন নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব না হলে সামনের বছরের জাতীয় নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।

খাদ্য পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ

বাংলাদেশে ডিজেল ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে পরিবহন ভাড়া বেড়েছে। কিন্তু তার আগে থেকেই চাল, সয়াবিন তেল, চিনির মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব পণ্যের দাম বেড়ে চলেছে।

বর্তমানে মোটা চালের দাম জায়গা ভেদে ৪২ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে রয়েছে।

ঢাকার কলাবাগানের একজন গৃহবধূ সোহানা ইয়াসমিন বলছেন, আগে বাজারে টাকা নিয়ে গেলে যতটুকু পণ্য কিনতে পারতাম, এখন তার দেড়গুণ বেশি খরচ করতে হচ্ছে। সাংসারিক বাজেটে অনেক টান পড়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশে ২০২১ সালের শেষে মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৮ শতাংশে।

চিনি
Getty Images
চিনি

বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সাধারণ মূল্যস্ফীতি বাড়ার পেছনে মূল প্রভাবক হিসাবে কাজ করেছে খাদ্য বহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি। যেমন পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, বাড়িভাড়া, আসবাব, পোশাক ইত্যাদি।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলছেন, ''সাধারণ মানুষের যেসব পণ্য দরকার হয়, যেমন, চাল, ডাল, তেল, নুন, চিনি, সেসব পণ্যের দাম যাতে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে, সরকারের সেদিকে বিশেষ নজর দেয়া উচিত।

''আমরা দেখতে পাই ভরা মৌসুমেও চালের দাম বাড়ছে। এর কারণ হলো, উৎপাদক আর ভোক্তার মধ্যে একটি গোষ্ঠী বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারকে এইখানে ভূমিকা রাখতে হবে, যাতে বাজার স্থিতিশীল থাকে।'' তিনি বলছেন।

কর্মসংস্থান (দেশে ও বিদেশে)

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর দীর্ঘদিন লকডাউন কার্যকর থাকায় তার একটা বড় প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে, অসংখ্য মানুষ চাকরি হারিয়েছেন।

প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ তরুণ-তরুণী বাংলাদেশের চাকরির বাজারে যোগদান করে। এদের বড় একটি সংখ্যক স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শেষ করে সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে প্রবেশের চেষ্টা করেন।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ ২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী ৬ কোটি ৩৫ লাখ। এর মধ্যে কাজ করেন ৬ কোটি ৮ লাখ নারী-পুরুষ আর ২৭ লাখ বেকার।

আর সম্ভাবনাময় কিন্তু সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ পান না এরকম ব্যক্তি (লেবার আন্ডার ইউটিলাইজেশন), যাদের ছদ্ম-বেকার বর্ণনা করা হয়, এরকম মানুষ রয়েছেন প্রায় ৬৬ লাখ। এরা চাহিদা মাফিক কাজ না পেয়ে টিউশনি, রাইড শেয়ারিং, বিক্রয় কর্মী ইত্যাদি খণ্ডকালীন কাজ করেন।

বাংলাদেশে বেকারত্বের হার ৪.২% হলেও যুব বেকারত্বের হার ১১.৬ শতাংশ। করোনাভাইরাসের কারণে জুন ২০২০ সাল নাগাদ সেটি কয়েকগুণে বেড়ে গেছে।

চাকরির বাজার নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা বসে আছে।
Getty Images
চাকরির বাজার নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত শিক্ষার্থীরা বসে আছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সংকটে বিশ্বে প্রতি ছয়জনের একজন বেকার হয়েছে আর বাংলাদেশের প্রতি চারজন যুবকের মধ্যে একজন কর্মহীন বা বেকার রয়েছে (২৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ)। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই এই বেকারত্ব বাড়ছে।

সেই সঙ্গে প্রবাসী অনেক শ্রমিক চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন।

নতুন বছরেও সেই ক্ষতের মুখোমুখি হতে হবে বাংলাদেশকে।

এই বিষয়ে গ্রিন এইচআর প্রফেশনালের রওশন আলী বুলবুল কিছুদিন আগে বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, ''সরকার এককভাবে তো সব বেকারকে চাকরি দিতে পারবে না। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হলে নতুন চাকরি তৈরি হবে। সেই সঙ্গে তরুণদেরও তাদের কোয়ালিটি বৃদ্ধির চেষ্টা করতে হবে।''

বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর:

ক্যাশ সার্ভার স্থানান্তরের কী প্রভাব পড়বে ইন্টারনেট সেবায়?

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পেছনে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নাকি ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ?

স্কুলে যৌন শিক্ষার সহায়ক পরিবেশ কতোটা আছে?

নতুন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্ক ছিন্ন করতে পারে, বাইডেনকে পুতিনের হুঁশিয়ারি

English summary
Year 2022: Challenges Bangladesh will face in coming days
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X