For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ভারতে ডিএনএ ডেটাব্যাঙ্ক নিয়ে বিরোধীদের আপত্তি কেন

জাতীয় নিরাপত্তার যুক্তি দিয়ে ভারতের পার্লামেন্টে পেশ করা হয়েছে এই ডিএনএ প্রযুক্তি বিল। বিরোধী কংগ্রেস ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, যে দেশে ডেটাই সুরক্ষিত নয় সেখানে এই বিল অনভিপ্রেত।

  • By Bbc Bengali

ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে। ফাইল ছবি
Getty Images
ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে। ফাইল ছবি

ভারতে নাগরিকদের দেহ থেকে সরকারকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ ও সংরক্ষরণের অনুমতি দেবে, এমন একটি বিল গতকাল সোমবার পার্লামেন্টে পেশ করা হয়েছে।

সরকার দাবি করছে, এই ডিএনএ টেকনোলজি রেগুলেশন বিল জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও অপরাধ দমনে বিরাট সাহায্য করবে।

তবে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এই বিলটির তীব্র বিরোধিতা করছে, মানবাধিকার কর্মীরাও বলছেন, ডিএনএ-র মতো সংবেদনশীল ডেটা সুরক্ষিত রাখার জন্য কোনও পদক্ষেপ না নিয়ে সরকার এই ধরনের আইন প্রণয়ন করতে পারে না।

ভারতে একটি তথাকথিত ডিএনএ প্রোফাইলিং বিল আনার লক্ষ্যে তৎপরতা শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন তদানীন্তন বিজেপি সরকারের আমলেই।

ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন
Getty Images
ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন

এরপর বিলটিকে পার্লামেন্টে পাস করানোর একাধিক চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে, তবে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধন বলছেন এবার তারা বিলটিকে নিয়ে যথেষ্ঠ আঁটঘাট বেঁধেই নেমেছেন।

লোকসভায় তিনি আরও জানিয়েছেন, "অনেকে যেমনটা ভাবছেন দেশের সব মানুষের ডিএনএ প্রোফাইলিং করা হবে, ব্যাপারটা কিন্তু আদৌ তা নয়।"

"আদালতে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি, খুনী বা ধর্ষণকারীর মতো দাগী অপরাধী, বড় কোনও অপরাধে জড়িত সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা, কিংবা কোনও নিখোঁজ লোকের আত্মীয়স্বজন - এরাই কেবল এর আওতায় আসবেন।"

"আর ডিএনএ ডেটা ব্যাঙ্কে যে তথ্য জমা থাকবে তা থেকে কারও ধর্ম-বর্ণ-জাতি বা এ ধরনের কোনও বৈশিষ্ট্যই জানা যাবে না।"

ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সিও প্রবলভাবে এই বিলটি চাইছে
Getty Images
ভারতের ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সিও প্রবলভাবে এই বিলটি চাইছে

মন্ত্রী আরও বলছেন, ব্রিটেন-আমেরিকাসহ দুনিয়ার অন্তত ষাটটি দেশে ইতিমধ্যেই এধরনের আইন আছে।

তিনি এও বলেছেন, ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সির মতো দেশের শীর্ষ তদন্তকারী সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারাও না কি অনেকদিন ধরেই এই বিলটি পাস করানোর জন্য তাদের তাগাদা দিয়ে আসছেন।

আর বিলটির খসড়া তৈরিতে যে বিশেষজ্ঞরা জড়িত ছিলেন তারাও জানাচ্ছেন, মানবদেহ থেকে ডিএনএ সংগ্রহটা আসলে তেমন কোনও জটিল প্রক্রিয়াও নয়।

এই বিশেষজ্ঞদের অন্যতম দিল্লিতে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসে ফরেনসিক মেডিসিনের প্রধান সুনীল গুপ্তা।

তার কথায়, "মুখের ভেতর থেকে খুব সহজে একটা সোয়াব নিয়ে, বা চুলের গোড়ার ফলিকল থেকে, কিংবা রক্ত, টিস্যু বা পেশীর ছোট্ট নমুনা থেকেই আমরা কোনও ব্যক্তির ডিএনএ নিতে পারি।"

গবেষণাগারে ডিএনএ পরীক্ষার কাজ চরছে। ফাইল ছবি
Getty Images
গবেষণাগারে ডিএনএ পরীক্ষার কাজ চরছে। ফাইল ছবি

"সেই ডেটা পরে আনায়াসেই দেশের নিরাপত্তার কাজে, পুলিশের কাজে বা ফরেনসিক উদ্দেশ্য ব্যবহার করা সম্ভব।"

বিরোধী কংগ্রেস পার্লামেন্টে এই বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেছে - লোকসভায় তাদের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, এই বিলটি মানুষের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।

"কারণ এর মাধ্যমে কোর্টের নির্দেশ ছাড়াই সরকার বিচারাধীন ব্যক্তিদের ডিএনএ সংগ্রহ করতে পারবে", বলেছেন তিনি।

কংগ্রেস এমপি ও সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শশী থারুরও মনে করছেন, কোনও ডেটা প্রোটেকশন আইন ছাড়াই এই বিলটি আনার অর্থ হল "ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেওয়া"।

আরো পড়তে পারেন:

ক্লিনিকের ভুলে ভুল শিশুর জন্ম দিয়েছে দম্পতি

জিনোম সিকোয়েন্সিং: শিশু রোগ নির্ণয়ে 'বিপ্লব’ আসছে

তিন জনের ডিএনএ থেকে শিশুর জন্ম

পার্লামেন্টে বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর
Getty Images
পার্লামেন্টে বিলটির তীব্র বিরোধিতা করেছেন কংগ্রেস নেতা শশী থারুর

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়া অধিকর্তা মীনাক্ষি গাঙ্গুলিও এ বিষয়ে মি থারুরের সঙ্গে একমত।

মিস গাঙ্গুলি বিবিসিকে বলছিলেন, "যে কোনও দেশেই আমরা বলি ডেটাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য একটা নিরপেক্ষ তদারকি ব্যবস্থা বা ওভারসাইট মেকানিজম দরকার হয়। ওটা না-থাকলেই সেই ডেটা অ্যাবিউজ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।"

"যেমন, উদাহরণস্বরূপ খোদ আমেরিকাতেও দেখা গেছে পুলিশবাহিনীতে পুরুষ সদস্যরা তাদের মহিলা সহকর্মীদের ফাইল ঘেঁটে ঘেঁটে ব্যক্তিগত তথ্য বের করেছে।"

"সেই ডেটায় তাদের অ্যাক্সেস ছিল, আর তার সুযোগ নিয়েই তারা নারী কলিগদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছিল।"

মীনাক্ষি গাঙ্গুলি
Getty Images
মীনাক্ষি গাঙ্গুলি

"আর ভারতেও আমরা জানি সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন হয় বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতনের মতো শর্টকাট নেওয়ার কারণে। আইনের শাসন বজায় রাখার সঠিক রাস্তায় কেউ যেতে চায় না।"

"যেখানে আমরা জানি ভারতীয় সিস্টেমে এই ধরনের ত্রুটি আছে, সেখানে কঠোর দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করে ডেটা সুরক্ষিত করার পদক্ষেপ না নিয়ে এই আইন আনা মোটেও উচিত হবে না", বলছেন মীনাক্ষি গাঙ্গুলি।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষবর্ধন কিন্তু পার্লামেন্টে প্রতিবেশী বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেছেন, তারা ভারতের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে গিয়ে সে দেশে এর মধ্যেই ডিএনএ আইন চালু করে ফেলেছে।

"কাজেই ভারত নিজেরা এ ব্যাপারে আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না," লোকসভায় জানিয়েছেন তিনি।

আরো পড়তে পারেন:

৫৮৬ কেন্দ্রে সব ভোট নৌকা মার্কায়

'ক্রিস্টাল মেথ বা আইস' শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর?

নকল কণ্ঠস্বর ব্যবহার করে 'অর্থ চুরি'

ঢাকার তিন সড়কে রিকশা বন্ধ নিয়ে পাঠকের প্রতিক্রিয়া

English summary
Why the objection to the DNA database in India by the opposition
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X