নেট জিরো কী, COP26 সম্মেলনে চিন্তিত রাষ্ট্রনায়করা
নেট জিরো কী, COP26 সম্মেলনে চিন্তিত রাষ্ট্রনায়করা
ক্রমেই বদলে যাচ্ছে গোটাবিশ্বের জলবায়ু, গড় তাপমাত্রা বাড়ছে পৃথিবীর। এই বৈশ্বিক সমস্যা নিয়েই বৈঠকে বসেছেন বিশ্বের তাবড় তাবড় নেতারা৷ জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত রাষ্ট্রসঙ্ঘের বৈঠকে উপস্থিত থেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তবে শুধু নমো নন, এই সমস্যার সমাধানে এবার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন গোটাবিশ্বের জনপ্রতিনিধিরা। 'নেট জিরো' তথা 'গ্লোবাল নেট জিরো'র প্রতি সমর্পণ করলেন প্রত্যেকেই।
কী এই 'নেট জিরো'?
পরিবেশবিদ এবং জলবায়ু সচেতন সমস্ত ব্যক্তিদের কাছে খুব পরিচিত একটি শব্দবন্ধ এটি। এক কথায় গ্রিন হাউস গ্যাসের উৎপাদন এবং পরিবেশ থেকে তা সরানোর সামঞ্জস্য রক্ষাকে 'নেট জিরো' বলেন বিজ্ঞানীরা৷ যাতে উৎপাদিত গ্রিন হাউস গ্যাস কোনওমতেই অপসারিতের চেয়ে বেশি না হয়, তা রক্ষা করার জন্যই এই সূচক। প্রত্যেকটি দেশের দায়িত্ব, যাতে তারা কৃত্রিম গ্রিন হাউস গ্যাসের উৎপাদন কমায়। এর জন্য দেশগুলি কৃত্রিম কার্বন সিঙ্ক তৈরি করে, নিয়ন্ত্রণে থাকে পরিবেশের গড় তাপমাত্রা।
কারা দায়বদ্ধ?
এই মুহূর্তে জিরো নেট এমিশনের প্রতি প্রত্যেকটি দেশই দায়বদ্ধ। এর জন্য কার্বন ডাই অক্সাইড অপসারণের দিকে নজর দিচ্ছেন পরিবেশবিদরা৷ এই মুহূর্তে তাদের লক্ষ্য, গ্লোবাল ওয়ার্মিং কোনওমতে দেড় ডিগ্রির কাছাকাছি নামিয়ে আনা। পরিবেশবিদরা চেয়েছিলেন যাতে ২০৩০ থেকে ২০৫০ এর মধ্যে 'নেট জিরো এমিশন' এর লক্ষ্যে পৌঁছোনো যায়। কিন্তু ভারত এবং চিনের মতো দেশ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা যথাক্রমে ২০৬০ এবং ২০৭০ এর মধ্যে এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে।
কী বলছে ভারত?
প্রসঙ্গত, এর আগে পরিবেশের ক্ষতির জন্য শীর্ষ নির্গমণকারী উন্নত দেশগুলির থেকে ক্ষতিপূরণের কথা বলেছে ভারত। দেশের পরিবেশমন্ত্রকের আধিকারিক রামেশ্বর প্রসাদ গুপ্ত এর আগে জানিয়েছিলেন পরিবেশগত ক্ষতিগুলির জন্য ক্ষতিপূরণের প্রয়োজন৷ এবং উন্নত শীর্ষ নির্গমণকারী দেশগুলির এই ক্ষতিপূরন বহন করা উচিৎ। তিনি আরও দাবি করেছিলেন, ভারত এই বিষয়ে অন্যান্য নিম্ন-আয়ের এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির পাশে দাঁড়াবে এবং পরিবেশের স্বার্থে কথা বলবে। প্রথম থেকেই সিওপিডি২৬ সম্মেলনকে জলবায়ু বিপর্যয়ের জন্য ক্ষতিপূরণ আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে দেখছে ভারত৷ এই সম্মেলনের আগেও মার্কিন জলবায়ু দূত জন কেরির কাছে এই বিষয়টি উত্থাপন করা হয়েছিল ভারতের পক্ষ থেকে। মূলত ধনী এবং উন্নত দেশগুলি গ্রীনহাউস গ্যাসের সবচেয়ে বড় অংশ পরিবেশে যোগ করেছে যা প্রতিদিন পৃথিবীর উষ্ণতা একটু করে বাড়াচ্ছে৷
কী আলোচনা হয়েছে আগের সম্মেলনগুলিতে?
এর আগে ২০১৫ প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে 'ক্ষতি এবং ধ্বংস' শব্দদুটি ব্যবহার করা হয়েছিল, কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি রুখতে না পারলে তার দায়বদ্ধতা এবং প্রতিকার সম্পর্কে বেশ অনেকগুলি প্রশ্নগুলির কোনও সঠিক উত্তর ওই সম্মেলনে সামনে আসেনি৷ তারও আগে ওয়ারশতে পরিবেশ সংক্রান্ত শীর্ষ সম্মেলনে (২০১৩ সালে) ক্ষতিপূরণের বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ক্ষতিপূরণে পাওয়া অর্থ কিভাবে কারা পাবেন এবং কি উপায়ে তা পরিবেশের উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে সে বিষয়ে নির্দিট কোন রাস্তা দেখানো হয়নি। তবে সম্প্রতি নিয়ম রয়েছে এই অর্থ বন্য, ভূমিকম্প, ঝড়, সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে বিধ্বস্ত এলাকাগুলি মেরামত ও ত্রানের জন্য ব্যবহার করা যাবে৷