রাশিয়া যুদ্ধের মাঝে মিসাইল নিয়ে ভারত পাক তর্ক, মধ্যস্থতায় চিন-আমেরিকা

একদিকে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের যুদ্ধ চলছে। এসবের মাঝেই ভারত আবার মিসাইল লঞ্চ করেছে যা নাকি পাকিস্তানে গিয়ে আঘাত হেনেছে। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে ভারতের হয়ে ব্যাট ধরেছে আমেরিকা। চিনও কথা বলতে চলে এসেছে এই ঘটনা নিয়ে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে ভারত থেকে সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্রের ছোঁড়া হয়েছে যা দুর্ঘটনাবশত পাকিস্তানে অবতরণ করেছে।

শুক্রবার ভারত বলেছে যে দুর্ঘটনাক্রমে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে যা পাকিস্তানে অবতরণ করেছে এবং "গভীর দুঃখজনক" ঘটনাটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের সময় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ঘটেছে বলে জানিয়েছে ভারত।

সোমবার তার দৈনিক সংবাদ সম্মেলনে স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাংবাদিকদের বলেন, "আমাদের কোনো ইঙ্গিত নেই কারণ আপনি আমাদের ভারতীয় অংশীদারদের কাছ থেকে শুনেছেন যে এই ঘটনাটি দুর্ঘটনা ছাড়া অন্য কিছু ছিল না। কোনও ফলোআপের জন্য আমরা অবশ্যই আপনাকে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে রেফার করি। তারা ৯ মার্চ একটি বিবৃতি জারি করেছে যাতে সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, এর বাইরে আমাদের কোনও মন্তব্য নেই,"।

এদিকে, সোমবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেছেন যে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্রের "দুর্ঘটনাজনিত গুলিবর্ষণের" ব্যাখ্যাটি একটি "গুরুতর বিষয়" যা নয়াদিল্লির দেওয়া "সরল ব্যাখ্যা" দিয়ে সমাধান করা যাবে না এবং আবারও একটি যৌথ আলোচনার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে।

এখানে পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোরেশি তার জার্মান প্রতিপক্ষ আনালেনা বেয়ারবকের সাথে টেলিফোনে কথোপকথনের সময় এই মন্তব্য করেছেন। কোরেশি ৯ মার্চ একটি ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের বিষয়ে বেয়ারবককে অবহিত করেছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে ভারত ক্ষেপণাস্ত্রের "দুর্ঘটনাজনিত" নিক্ষেপের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে। তিনি অবশ্য বলেছেন, এই ধরনের একটি "গুরুতর বিষয়" ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া "সরল ব্যাখ্যা" দিয়ে সমাধান করা যাবে না।

এ নিয়ে পাকিস্তান একটি যৌথ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একটি পারমাণবিক পরিবেশে গুরুতর প্রকৃতির এই ঘটনার গুরুত্ব সহকারে নোটিশ নিতে এবং এই অঞ্চলে কৌশলগত স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং প্রচারে যথাযথ ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছে।

শুক্রবার, ভারত সরকার বলেছে যে এটি দুর্ঘটনাক্রমে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে যা পাকিস্তানে অবতরণ করেছে এবং "গভীর দুঃখজনক" ঘটনাটি তার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের সময় একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে হয়েছিল।ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে যে সরকার ঘটনাটিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেছে এবং এটির জন্য একটি 'কোর্ট অফ ইনকোয়ারি' করার নির্দেশ দিয়েছে।

পাকিস্তান বলেছিল যে ভারত থেকে উৎক্ষেপণ করা একটি উচ্চ-গতির ক্ষেপণাস্ত্র তার আকাশসীমায় প্রবেশ করে খানেওয়াল জেলার মিয়া চান্নুর কাছে পড়েছিল। পাঞ্জাব প্রদেশের। শনিবার, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর (এফও) বলেছে যে তারা ক্ষেপণাস্ত্রের "দুর্ঘটনাজনিত গুলিবর্ষণ" সম্পর্কে ভারতের "সরল ব্যাখ্যা" নিয়ে সন্তুষ্ট নয় এবং ঘটনার আশেপাশের তথ্যগুলি সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটি যৌথ তদন্তের দাবি করেছে। জার্মান সমকক্ষের সাথে তার কথোপকথনে কোরেশি জোর দিয়েছিলেন যে পাকিস্তান পারস্পরিক সুবিধার সমস্ত ক্ষেত্রে জার্মানির সাথে তার সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে বদ্ধপরিকর।

চিন সোমবার বলেছে যে ভারত ও পাকিস্তানের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংলাপ করা উচিত এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে অবতরণ করা ভারত থেকে একটি ক্ষেপণাস্ত্রের সাম্প্রতিক "দুর্ঘটনাজনিত গুলিবর্ষণের" বিষয়ে "পুঙ্খানুপুঙ্খ" তদন্ত শুরু করা উচিত। চিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান, একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ের সময় বলেছেন, পাকিস্তান ও ভারত উভয়ই দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং তারা আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার দায়িত্ব ভাগ করে নেয়।

ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রের "দুর্ঘটনাজনিত গুলিবর্ষণ" সম্পর্কে চীনের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে একজন পাকিস্তানি সাংবাদিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন: "আমরা প্রাসঙ্গিক তথ্য নোট করেছি"। তিনি বলেন, "পাকিস্তান এবং ভারত উভয়ই দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ দেশ, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার দায়িত্ব বহন করছে।"

তিনি চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা সংশোধিত মন্তব্যে বলেছেন।, "চিন দেশগুলিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সংলাপ এবং যোগাযোগের জন্য আহ্বান জানিয়েছে, এবং ঘটনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখতে, তথ্য ভাগ করে নেওয়ার জন্য এবং অবিলম্বে একটি রিপোর্টিং ব্যবস্থা স্থাপন করার জন্য যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে এবং ভুল বোঝাবুঝি এবং ভুল ধারণা এড়ানো যায়। " মজার বিষয় হল, ঝাও-এর মন্তব্য এই ঘটনার "যৌথ তদন্ত" করার জন্য পাকিস্তানের দাবিকে সমর্থন করেনি।

শুক্রবার, ভারত সরকার বলেছে যে এটি দুর্ঘটনাক্রমে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে যা পাকিস্তানে অবতরণ করেছে এবং "গভীর দুঃখজনক" ঘটনাটি তার নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের সময় একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে হয়েছিল। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বলেছে যে সরকার ঘটনাটিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেছে এবং এটির জন্য একটি 'কোর্ট অফ ইনকোয়ারি' করার নির্দেশ দিয়েছে, পাকিস্তান বলেছিল যে ভারত থেকে উৎক্ষেপণ করা একটি উচ্চ-গতির ক্ষেপণাস্ত্র তার আকাশসীমায় প্রবেশ করে খানেওয়াল জেলার মিয়া চান্নুর কাছে পড়েছিল। পাঞ্জাব প্রদেশের।

"৯মার্চ, একটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের সময়, একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে একটি ক্ষেপণাস্ত্রের দুর্ঘটনাজনিত গুলি চালানো হয়েছিল। ভারত সরকার একটি গুরুতর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছে এবং একটি উচ্চ-স্তরের আদালতের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।" প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, "এটি জানা গেছে যে ক্ষেপণাস্ত্রটি পাকিস্তানের একটি এলাকায় অবতরণ করেছে।

ঘটনাটি গভীরভাবে দুঃখজনক হলেও এটি একটি স্বস্তির বিষয় যে দুর্ঘটনার কারণে কোনো প্রাণহানি হয়নি," শনিবার, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর (এফও) বলেছে যে তারা ক্ষেপণাস্ত্রের "দুর্ঘটনাজনিত গুলিবর্ষণ" সম্পর্কে ভারতের "সরল ব্যাখ্যা" নিয়ে সন্তুষ্ট নয় এবং ঘটনার আশেপাশের তথ্যগুলি সঠিকভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটি যৌথ তদন্তের দাবি করেছে। এফও ভারতীয় চার্জ ডি'অ্যাফেয়ার্সকে তলব করেছিল এবং তার আকাশসীমার "বিনা প্ররোচনা" লঙ্ঘনের জন্য তার প্রতিবাদ নথিভুক্ত করেছিল এবং বলেছিল যে এই ধরনের "দায়িত্বহীন ঘটনা" বিমান নিরাপত্তার প্রতি ভারতের "অবহেলা" প্রতিফলিত করে।

পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একটি পারমাণবিক পরিবেশে গুরুতর প্রকৃতির এই ঘটনার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার এবং এই অঞ্চলে কৌশলগত স্থিতিশীলতার প্রচারে যথাযথ ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছে। যদিও ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে বর্ণনা দিয়েছে তাতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে এটি একটি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র হতে পারে।

২০১৬ সালে পাঠানকোট বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে প্রতিবেশী দেশ ভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলির দ্বারা সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক নাক ডাকে। উরিতে ভারতীয় সেনা শিবিরে একটি সহ পরবর্তী আক্রমণগুলি সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটায়। ভারত ২০১৯ সালের আগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ ক্ষমতা প্রত্যাহার এবং রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করার ঘোষণা করার পরে সম্পর্কের অবনতি ঘটে।

২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার জন্য ভারতের পদক্ষেপ পাকিস্তানকে ক্ষুব্ধ করেছে, যা কূটনৈতিক সম্পর্ককে নিম্নমানের করেছে এবং ইসলামাবাদে ভারতীয় হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করেছে। এটি ভারতের সাথে সমস্ত আকাশ ও স্থল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে এবং বাণিজ্য ও রেল পরিষেবা স্থগিত করেছে। ভারত বলেছে যে তারা সন্ত্রাস, শত্রুতা ও সহিংসতামুক্ত পরিবেশে পাকিস্তানের সাথে স্বাভাবিক প্রতিবেশী সম্পর্ক চায়।ভারত বলেছে সন্ত্রাস ও শত্রুতামুক্ত পরিবেশ তৈরি করার দায়িত্ব পাকিস্তানের।

English summary

indias launched a missile which accidentally launched in pakistan