তালিবান ও হক্কানিদের আশ্রয়দাতা পাকিস্তান US কংগ্রেসে বললেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন
তালিবান ও হক্কানিদের আশ্রয়দাতা পাকিস্তান US কংগ্রেসে বললেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন
আফগানিস্তানে তালিবানের পুনরুত্থানের পেছনে যে পাকিস্তানের হাত সবচেয়ে বড় এটা প্রায় গোটা বিশ্ব জানে৷ সম্প্রতি মার্কিন কংগ্রেসে এই বিষয়ে মুখ খুললেন ইউএসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেন৷ সঙ্গেই তিনি আমেরিকার কংগ্রেসে বলেন সারা বিশ্ব তালিবানের আগামী কার্যকলাপের দিকে তাকিয়ে আছে৷ ওদের যদি সরকার হিসেবে বৈধতা পেতে হয় তাহলে বিশ্বের শান্তিকামী দেশগুলির ওদের (তালিবান) কাছে যা দাবি রয়েছে তা পূরণ করতে হবে।
কী বললেন ব্লিংকেন?
আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করেই নিজেদের সাধু প্রমাণ করতে উদ্যোগী হয়েছে তালিবানরা৷ যদিও তা মিডিয়ায় অন ক্যামেরা। অফ ক্যামেরা সেই একই নৃশংসতা বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে তারা৷ এ নিয়েই ব্লিংকেন বলেন ওরা (তালিবান) যদি সরকার হিসেবে মান্যতা চাই তাহলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ওদেরও কিছু দাবি পুরণ করতে হবে৷ যদিও মার্কিন কংগ্রেসের বড় অংশ তালিবান বিষয়ে পাকিস্তানের উপর কড়া হওয়ার কথা বলেছে।
আরও কী বললেন ব্লিংকেন?
ব্লিংকেন আরও বলেন, আফগানিস্তান ত্যাগ করতে চায় এরকম মানুষ, আফগানিস্তানে থাকা নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে তালিবানদের৷ এবং সেই সঙ্গে তালিবানদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে যে আগামীদিনে আফগানিস্তান 'সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হবে না।' পাশপাশি তিনি যোগ করেন পাকিস্তানকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। এ ব্যাপারে সমস্ত আন্তর্জাতিক কমিউনিটিগুলির সঙ্গে যোগাযোগা করে তালিবান ও তাদের মধ্যে সৎ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে হবে পাকিস্তানকে৷ অনেক সময় পাকিস্তানের নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্ত আমাদের স্বার্থের পরিপন্থী হয়ে ওঠে আবার কখনও তা আমাদের স্বার্থের পক্ষে থাকে। আফগানিস্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পাকিস্তানকে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিতে হবে৷
পাকিস্তান তালিবানের আশ্রয়দাতা!
এরপরই ব্লিংকেন বলেন অনেকদিন থেকেই তালিবান ও হক্কানিদের মদতদাতা হিসেবে কাজ করে আসছে পাকিস্তান। অবিলম্বে যেটার পরিবর্তন প্রয়োজন। মার্কিন কংগ্রেসে গণতান্ত্রিক প্রতিনিধি জোয়াকুইন কাস্ত্রো এবং পাকিস্তানের সমালোচনাকারী বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে নন-ন্যাটো মিত্র হিসেবে পাকিস্তানের মর্যাদা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বিবেচনা করতে বলেন। এই নন-ন্যাটো মিত্রতায় ইসলামাবাদকে মার্কিন অস্ত্রশস্ত্র কেনার সুবিধা প্রদান করে আসছে৷
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে' সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পাকিস্তান
প্রসঙ্গত, ১৯৯০ এর দশকে ইসলামপন্থী গেরিলাদের উত্থানের সময় থেকে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের তালিবানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং পাকিস্তান মাত্র তিনটি দেশের মধ্যে একটি যার ১৯৯৬ থেকে ২০০১ এর আফগানিস্তানে তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এই তালিবান শাসন ছিল অতিমাত্রায় কঠোর, নৃশংস হনারীর অধিকার দমন করার জন্য কুখ্যাত। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 'ঠান্ডা যুদ্ধে'র সময়কার বন্ধু পাকিস্তান, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের হামলার পর মার্কিন নেতৃত্বাধীন 'সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে' সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পাকিস্তান।