সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ভাণ্ডারে হামলা, আমেরিকা ও ব্রিটেন, ফ্রান্সের মিলিত আক্রমণ, কড়া প্রতিক্রিয়া
সিরিয়ার কেমিক্যাল অস্ত্র ভাণ্ডারে এবার একযোগে ধ্বংস করে দেবে আমেরিকা। এই হামলায় তাদের সঙ্গে সহযোগী দেশ হিসাবে অংশ নিচ্ছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স।
সিরিয়ার কেমিক্যাল অস্ত্র ভাণ্ডারে এবার একযোগে ধ্বংস করে দেবে আমেরিকা। এই হামলায় তাদের সঙ্গে সহযোগী দেশ হিসাবে অংশ নিচ্ছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। শুক্রবার সিরিয়ায় হামলার কথা ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, 'আমি সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ভাণ্ডারে হামলাকে অনুমোদন দিয়েছি।' এই হামলায় ব্রিটেন ও ফ্রান্স আমেরিকার সঙ্গে আছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
[আরও পড়ুন- সিরিয়ায় মৃত্যু মিছিল! রাসায়নিক হামলায় মৃত বহু শিশু]
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে এই হামলার কথা স্বীকার করেছেন। সপ্তাহখানেক আগে সিরিয়ার ডৌমা শহরে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করে প্রেসিডেন্ট আল বাসার আল-আসাদ-এর বাহিনী। এতে বহু শিশুর মৃত্যু হয়। সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদ-এর উৎখাতের দাবিতে চার বছরেরও বেশি সময় ধরে গৃহযুদ্ধ চলছে। এই গৃহযুদ্ধ সামলাতে বারবার বাসার বাহিনীর বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। এই রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগে সিরিয়ায় অন্তত কয়েক হাজার শিশুর মত্যু ঘটেছে। এই নিয়ে সারা বিশ্বই সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর দমন-পীড়ন নীতিকে প্রশ্ন তুলেছে। আমেরিকা-সহ ব্রিটেন, ফ্রান্স বারবারই সিরিয়ার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিয়ে এসেছে। কিন্তু, রাশিয়া ও চিন সিরিয়ার সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন করে আসছে। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার এই চরম পদক্ষেপ স্বাভাবিকভাবেই এক নয়া যুদ্ধের আবহ তৈরি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, 'ফ্রান্স ও আমেরিকার সঙ্গে মিলে সশস্ত্র বাহিনীর হামলা করতে নেমে পড়েছে। এতে শুধুমাত্র রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডারগুলিকেই ধ্বংস করার উদ্দেশ্য।'
[আরও পড়ুন- ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সিরিয়ায়, সন্দেহজনক রাসায়নিক হামলার শিকার ৭০ জন]
ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর পরই অবশ্য সিরিয়ার দামাস্কাসের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গিয়েছে। তবে, এই বিস্ফোরণের পিছনে আমেরিকা ও তার মিত্র বাহিনীর হাত আছে কি না তা জানা যায়নি।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসে মে জানিয়েছেন, 'এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি তাতে বাহিনী নামানো ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা ছিল না।' তবে এই হামলা যে সিরিয়ার ক্ষমতাসীন সরকারবদলের জন্য নয় তাও নিশ্চিত করেছেন মে। 'রাসায়নিক অস্ত্র ভাণ্ডারগুলিতেই শুধুমাত্র হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে', জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, 'যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে মারাত্মকভাবে অকাতরে অস্ত্র প্রয়োগ ও তৈরির বিরুদ্ধে একটা কড়া প্রতিরোধ তৈরি হওয়া দরকার ছিল। ' ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি, 'সিরিয়ায় যা চলছে তা কোনও মানুষের কীর্তি নয়, এগুলো শয়তানের অপরাধ।'
সিরিয়া অবশ্য আমেরিকার এমন হামলার কথা অস্বীকার করেছে। তবে, তাদের মিত্রশক্তি রাশিয়া কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। রাশিয়া জানিয়েছে, সিরিয়ার উপরে এমন হামলা যুদ্ধের সম্ভাবনাকে উস্কে দেবে।