বিদেশি পড়ুয়াদের তাড়াতে ফতোয়া জারি, তারমাঝেই ট্রাম্পের ২০১৫ সালের টুইটে তোলপাড় সোশ্যাল মিডিয়া
ইতিমধ্যেই বিদেশি পড়ুয়াদের দেশ ছাড়ার জন্য ফতোয়া জারি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। কোনও রকম পূর্বাভাস ছাড়াই সম্প্রতি একটি বিবৃতি দিয়ে মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক দফতর স্পষ্ট করে দিয়েছে, ''এফ-১ কিংবা এম-১ ভিসা নিয়ে এ দেশে থেকে সম্পূর্ণ অনলাইন কোর্স করা যাবে না।’’ যার জেরে ফাঁপড়ে পড়ছেন আমেরিকায় থাকা লক্ষ লক্ষ প্রবাসী পড়ুয়ার দল। এদিকে মার্কিন প্রশাসনের এই ঘোষণার পরেই ২০১৫ সালে স্বয়ং ট্রাম্পেরই করা এই টুইট নিয়ে তোলপাড় হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
এদিকে করোনা মহামারীর জেরে আমেরিকায় এখন প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাই প্রায় অনলাইনে পঠন পাঠন শুরু করেছে। আর এখানেই বাধ সাধতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি ক্লাস যখন অনলাইনেই হবে তখন আর ওই সমস্ত পড়ুয়াকে নিজেদের দেশে থাকতে দিতে নারাজ আমেরিকা। আমেরিকার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এমফোর্সমেন্ট ৬ই জুলাই একটি বিবৃতি দয়ে এই কথা জানায়।
এদিকে এই সিদ্ধান্তের পড়েই ৫ বছর আগের একটি ট্রাম্পের করা একটি টুইট নিয়ে শুরু হয়ে তরজা। পাশাপাশি আমেরিকার অভিবাসী নীতি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর সে দেশে অনেক পুরনো। অনেকে আমেরিকানও এই ক্ষেত্রে দেশীয় অর্থনীতির 'স্বার্থে’ প্রবাসী বোঝা কমানোর পক্ষে রয়েছেন বলেও জানা যায়। সম্প্রতি করকোনা লকডাউনের সময় দেশের ছেলে মেয়েদের বেকার্তব কমাতে এইচ১-বি ভিসা বাতিলের পথে হাঁটতে দেখা যায় ট্রাম্প প্রশাসনকে। যার জেরে ভারত সহ একাধিক দেশের লক্ষাধিক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী সহ গবেষক, পড়ুয়ারা বিপাকে পড়েন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার প্রায় এক বছর আগে একটি টুইট করে ট্রাম্পকে বলতে দেখা যায়, “বিদেশিরা যখন আমাদের দুর্দান্ত কলেজগুলিতে পড়ে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকতে চায়, তখন তাদের আমাদের দেশের বাইরে ফেলে দেওয়া উচিত নয়।” ২০১৫ সালের ১৮ই অগাস্ট ট্রাম্পকে এই টুইট করতে দেখা যায়। এদিকে ২০১৬ সালেও আমেরিকার রাজনৈতিক মহলে জে-১ ভিসা বাতিল নিয়ে জোর গুঞ্জনও শোনা যায়। এই ভিসার দ্বারা ৩ লক্ষ পড়ুয়া প্রতিবছর আমেরিকায় পড়তে আসেন। শোনা যায়, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভের ক্ষেত্রে এই ভিসাটিকে বড় ইস্যু বানাতে পারেন ট্রাম্প।
এদিকে আমেরিকার পুরনো অভিবাসী নীতি গুলিকে সর্বদাই জাতীয়বাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প। অনেকেরই ধারণা তিনি বরাবরই এইচ-১বি ভিসা বাতিলের পক্ষেই সওয়াল করেছেন। অক্টোবর থেকে তা বাস্তবায়িতও হতে যাচ্ছে। এদিকে ১৮ই অগাষ্ট ২০১৫ সালের ওই টুইটে ট্রাম্প লেখেন “আমি চাই কঠোর পরিশ্রম করার জন্য এবং নাগরিক হওয়ার জন্য প্রতিভাবান লোকেরা আমাদের দেশে আসুক। । সিলিকন ভ্যালিতেও অনেক ইঞ্জিনিয়ার সহ বিভিন্ন পেশার লোকের প্রয়োজন রয়েছে।” ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা মুখে এক কথা বললেও এই ক্ষেত্রে বরাবরই ভিন্ন কাজ করে গেছেন ট্রাম্প। তাই এফ-১ কিংবা এম-১ ভিসা রদের সিদ্ধান্ত ট্রাম্পের সেই কৌশলেরই অংশ।