মহাকাশ থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নজর রাখার অভিযোগ, নির্দোষ প্রমাণিত হলেন মহাকাশচারিণী
অপরাধ হয়েছে বটে। কিন্তু তা নাকি হয়েছে মহাকাশে! অভিযোগ জমা পড়েছে খোদ নাসার দফতরে। অভিযোগ যে সে নয়। একেবারে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির। মহাকাশ কেন্দ্রে বসে নাকি প্রাক্তন সঙ্গিনীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়েছেন এক মহাকাশচারী। এমন গুরুতর অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে নাসা। চমকে উঠেছে সারা বিশ্বও। যদিও সেই অভিযোগ সত্য নয় বলে জানা গিয়েছে।
নাসার মহাকাশচারিণী অ্যানে ম্যাকক্লেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মহাকাশকেন্দ্র থেকে তাঁর সঙ্গিনী সামার ওয়র্ডেন–এর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করেছেন। অভিযোগ সামারের ব্যক্তিগত তথ্য হাতানোর চেষ্টা করেন তিনি এবং তা নাকি ২০১৯ সালে দু’বার জানুয়ারি মাসে মহাকাশে বসেই। এমন আজব অভিযোগ পাওয়ার পরই নাসা তদন্ত শুরু করে দেয়। যদিও সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন যে সামার ওয়ার্ডেন ফেডারেল কর্তৃপক্ষের কাছে মিথ্যা কথা বলেছেন। ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে মিথ্যা বলার জন্য ওয়ার্ডেনের বিরুদ্ধে চার্জ আনা হয়েছে। এই তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন অ্যাটর্নি রায়ান প্যাট্রিক।
২০১৯ সালের আগস্ট মাসে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে জানা যায় যে ম্যাকক্লেন তদন্তকারীদের জানিয়েছিল যে ছ’মাস আগে আইএসএস মিশনের সময় সঙ্গিনীর অ্যাকাউন্ট তিনি দেখেছিলেন ঠিকই কিন্তু অসৎ উদ্দেশ্যে নয়। বরং যে শিশুকে তাঁরা যৌথভাবে বড় করে তোলার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তাকে প্রতিপালন করার জন্য সামারের অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা–পয়সা রয়েছে কিনা সেটাই খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। প্রাক্তন বায়ুসেনার গোয়েন্দা বিভাগের অফিসার ওয়ার্ডেন ২০১৯ সালের মার্চ মাসে ফেডারেল ট্রেড কমিশনের কাছে ম্যাকক্লেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে, তাঁকে চোর হিসাবে ওয়ার্ডেন তাঁর অভিযোগে ব্যাখা করলেও অ্যাকাউন্ট থেকে কোনও অর্থ সরানোর প্রমাণ তিনি দিতে পারেননি।
গত বছর ৩ ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক মহাকাশকেন্দ্রে যান অ্যানে ম্যাকক্লেন। এ বছর মার্চ মাসে তাঁর প্রথম 'স্পেস ওয়াক’ও সম্পন্ন করেছিলেন তিনি। এই সময়ের মধ্যেই নাসার বিশেষ কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সামারের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছিলেন অ্যানে। পুরোটাই আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে বসে। জানা গিয়েছে, পেশায় বায়ুসেনার গোয়েন্দা অফিসার সামার একজন সিঙ্গল মাদার। অ্যানের সঙ্গে পরিচয়ের পর ২০১৪ সালে বিয়ে করেন তাঁরা। তবে গত বছর বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও করেছেন অ্যানে এবং সামার। ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি অবশেষে বিবাহ বিচ্ছেদ চূড়ান্ত হয় এই দম্পতির।
ওয়ার্ডেন প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের বলেছিলেন যে তিনি ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করেছেন এবং তার ব্যাঙ্ক লগইন তথ্য পুনরায় সেট করেছেন যাতে অন্য কেউ তা খুলতে না পারে। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, ওয়ার্ডেন ২০১৮ সালের এপ্রিলে অ্যাকাউন্টটি তৈরি করেছিলেন এবং ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তার পাসওয়ার্ড বদল এবং লগইন করেননি। ওয়ার্ডেন পরপর দু’বার মিথ্যা কথা বলেছেন ফেডারেল কর্তৃপক্ষকে।