চিনা গুপ্তচর জাহাজে রয়েছে উচ্চ প্রযুক্তি, শ্রীলঙ্কার বন্দর থেকে ভারত মহাসাগরে চালাতে পারে সমীক্ষা
চিনা গুপ্তচর জাহাজে রয়েছে উচ্চ প্রযুক্তি, শ্রীলঙ্কার বন্দর থেকে ভারত মহাসাগরে চালাতে পারে সমীক্ষা
ভারতের উদ্বেগ বাড়িয়ে চিনের একটি জাহাজ শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে প্রবেশ করেছে। চিনের তরফে যদিও দাবি করা হচ্ছে, এই জাহাজটি মহাকাশ গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু তা মানতে মোটেই রাজি নয় ভারত। ভারত চিনের এই জাহাটিকে গুপ্তচর বৃত্তির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে। ভারত শ্রীলঙ্কাকে এই চিনা জাহাজের বন্দরে নোঙর করানোর বিষয়ে নিজেদের উদ্বেগ জানিয়েছিল। কিন্তু পারিপার্শ্বিক চাপে, শ্রীলঙ্কা বাধ্য হয়ে চিনা জাহাজকে তাদের বন্দরে প্রবেশের অনুমতি দেয়। চিনা জাহাজে শ্রীলঙ্কার বন্দরে পৌঁছনোর বিষয়ে ভারতের উদ্বেগের একাধিক কারণ রয়েছে।
চিনা জাহাজটি রয়েছে উন্নত প্রযুক্তি
চিনের ইউয়ন ওয়াং ৫ জাহাজটিতে সেন্সর বসানো রয়েছে। এরফলে ভারত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করলে তা চিনা জাহাজটি ট্র্যাক করতে পারবে। ওড়িশার আবদুল কালাম দ্বীপে ভারত ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করেছে। চিনের ওই জাহাজটিতে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে ভারত কোথা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করছে, ক্ষেপণাস্ত্রের শক্তির পরিমাণ কত, তা নির্ভুল পরিমাপ করতে পারবে। যা ভারতের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিনের জাহাজটি ২২ অগস্ট পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে থাকবে। জ্বালানি ভরতে আসার নাম করে ভারতের ওপর নজরদারি করবে বলেই নয়াদিল্লি মনে করছে। ১৪ জুলাই জাহাজ চিন থেকে জাহাজটি ছাড়ে। এক মাসের বেশি সময় সমুদ্রে অবস্থান করছিল জাহাজটি। কোনও বন্দরে নোঙর করেনি।
২০১৪ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি
ইউয়ান ওয়াং৫ ভারত মহাসাগরের ওপর সমীক্ষা চালাতে পারে বলে নয়াদিল্লি মনে করছে। যা চিনের ভারত মহাসাগরে সাবমেরিরন অপারেশনকে সহজ করবে। ২০২১ সালে চিনের সরকারি জাহাজ জিয়াং ইয়াং হং ০৩ ভারত মহাসাগরের একই অঞ্চলে এই কাজ করেছিল। সুমাত্রার পশ্চিমে একটি অনুসন্ধান চালাচ্ছিল বলে জানা যায়। ২০১৪ সালে চিনের পরমাণু চালিত একটি চিনা সাবমেরিন শ্রীলঙ্কার বন্দরে নোঙর করার অনুমতি দেয় কলম্বো। তারপরেই ভারত ও শ্রীলঙ্কার সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়।
চাপের মুখে শ্রীলঙ্কা
চিনা জাহাজ নিয়ে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করে। এরপরেই শ্রীলঙ্কার চিনা জাহাজের বন্দরে প্রবেশ পিছিয়ে দিতে চায়। সেই সময় চিনা রাষ্ট্রদূতের হুমকির মুখে পড়তে হয় শ্রীলঙ্কাকে। চিনা রাষ্ট্রদূত জানান, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তাদের সম্পর্কের আরও অবনতি হবে। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কা চিনের থেকে ব্যাপক অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। তার অনেকটাই এখনও পরিশোধ হয়নি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এখনও বেলআউটের অনুমোদন করেনি। এই পরিস্থিতি একপ্রকার বাধ্য হয়েই শ্রীলঙ্কা চিনের জাহাজকে হাম্বানটোটা বন্দর ব্যবহারে অনুমতি দিয়েছে। অন্যদিকে, আর্থিক সঙ্কটে ভারত শ্রীলঙ্কাকে সব থেকে বেশি সাহায্য করছে। বর্তমানে শ্রীলঙ্কা যে চিনা জাহাজকে নিয়ে সাঁড়াশি চাপে রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
চিনা 'গুপ্তচর’ জাহাজ পৌঁছল শ্রীলঙ্কার বন্দরে, পরমাণু কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ নয়াদিল্লির