দেশের অর্থনীতি ঠিক করতে চাই, প্রধানমন্ত্রী পদে লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ঋষি সুনকের
দেশের অর্থনীতি ঠিক করতে চাই, প্রধানমন্ত্রী পদে লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ঋষি সুনকের
লিজ ট্রাসের পদত্যাগের পর ব্রিটেনের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য লড়াই করবেন। বর্তমানে কনজারভেটিভ দলের মধ্যে পরবর্তী নেতা ও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ঋষি সুনক। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনে বরিস জনসন অংশ নিতে পারেন বলে জানা গিয়েছে।
কী বললেন ঋষি সুনক
টুইটি ব্রিটেনের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনক বলেন, আমি ব্রিটেনের অর্থনীতি ঠিক করতে চাই। আমি দলকে আরও ঐক্যবদ্ধ করতে চাই। তবেই ব্রিটিশ সরকার দেশের জনগণের জন্য কাজ করতে পারবে। উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। পাশাপাশি তিনি মন্তব্য করেন, ব্রিটিশদের জন্য কিছু করার সুযোগ আমাকে দেওয়া হবে কি না, সেই বিষয়ে দল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
সুনকের প্রতিদ্বন্দ্বী বরিস জনসন!
৪২ বছরের ঋষি সুনক আগের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের থেকে এখন অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী। ইতিমধ্যে ১২৮জন কনজারভেটিভ টোরি সাংসদ তাঁকে সমর্থন করেছেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, বরিসের অনুগামীরা জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় ১০০ জন টোরি সাংসদের সমর্থন রয়েছে তাঁদের। যদিও প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এখনওভাবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেননি প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য। তবে তিনি ক্যারাবিয়ানে ছুটি বাতিল করে ব্রিটেনে ফিরে এসেছেন। বরিসের অনুগামীরা দাবি করছেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর লড়াইয়ে অংশ নিতে জনসন ব্রিটেনে ফিরে এসেছেন।
লিজ ট্রাসের পদত্যাগ
মাত্র ৪৫ দিনের মাথায় ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন লিজ ট্রাস। তবে ইস্তফা দেওয়ার কিছুদিন আগে থেকেই এই নিয়ে ব্রিটেন জুড়ে জল্পনা তৈরি হয়। ইস্তফা দেওয়ার পর লিজ ট্রাস বলেন, 'বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, আমি আমার দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখতে পারব না। আমি দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট দূর করার জন্য লড়াই করেছিলাম। আমি যখন দেশের দায়িত্ব নিয়েছিল, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির স্থিতাবস্থা ছিল না। এত খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও আমরা কর কমানোর স্বপ্ন দেখেছিলাম। একটি শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেছিলাম। কিন্তু আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েও প্রতিশ্রুতি রাখতে পারিনি। তাই আমি পদত্যাগ করছি।'
প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ
লিজ ট্রাস প্রধানমন্ত্রী থাকা কালীন সম্প্রতি সংসদে মিনি বাজেট পেশ করেছিলেন। সেই বাজেটে ব্রিটেনে কর বৃদ্ধি ও মূল্যবৃদ্ধি রোধে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়িত করার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাহার করা হয়। নির্বাচনের প্রচারের সময় তিনি কর কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু কর কমানোর সিদ্ধান্তের প্রত্যাহারের পরেই তিনি দলের অভ্যন্তরেই বিক্ষোভের মুখে পড়েন। লিজ ট্রাসের পদত্যাগের পরেই বিরোধী নেতা কিয়ার স্টারমার নির্বাচনের দাবি তোলেন। তবে বর্তমানে কনজারভেটিভ পার্টি নতুন নেতা খুঁজতেই ব্যস্ত। লিজ ট্রাসের পদত্যাগের পর ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচনের কোনও সম্ভাবনা দেখা যায়নি।
সুনকের বিরুদ্ধে অভিযোগ
গত প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জনপ্রিয়তার দিক থেকে হেরে গিয়েছিলেন সুনক। কনজারভেটিভ দলের নেতা ও দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন লিজ ট্রাস। সেই সময় সুনকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ উঠে এসেছি। অর্থমন্ত্রী থাকার সময় তিনি কর বাড়িয়ে দিয়েছিল। পাশাপাশি করোনা বিধি লঙ্ঘন করে তিনি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে পার্টি করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, চলতি বছর ব্রিটেনের মানুষ প্রবল দাবদাহে দিন কাটাচ্ছেন, সেই সময় তিনি ব্যস্ত ছিলেন বিলাসবহুল সুইমিং পুল তৈরি করতে। তবে বর্তমানে কনজারভেটিভ দলের সদস্যরা সুনকের ওপরেই ভরসা করছেন।