ইরাকে সাদ্দাম জামানার বাড়িতেই সরকারবিরোধী আন্দলোন ঘনীভূত
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইরাকে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এখন তুঙ্গে। সেদেশের বর্তমান সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে সংস্কারের দাবি তুলেছে সেখানকার জনগণ।
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইরাকে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এখন তুঙ্গে। সেদেশের বর্তমান সরকারের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে সংস্কারের দাবি তুলেছে সেখানকার জনগণ। ইরাক সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা মেধার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ না দিয়ে জাতিগত ও অন্যান্য বিবেচনাকে মাথায় রেখে নিয়োগ করছে। জনগণের টাকা নষ্ট করে নেতারা এবং তাদের অনুসারীরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের জীবনে সরকারি কোষাগারের অর্থ কোনও কাজে আসছে না। সরকারের এই বৈষম্য নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষেরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের এই আন্দোলনে গুলিয়ে চালিয়ে অর্ধশতাধিক মানুষ হত্যা করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
এত কিছুর পরও থেমে যাননি বিক্ষোভকারীরা। আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। সর্বশেষ তারা বাগদাদের একটি পরিত্যক্ত বাড়ি দখল করে নিয়েছেন। সেই বাড়ির ছাদে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের ফেস্টুন। বাড়িটির সামনে জড়ো হয়েছেন হাজার হাজার আন্দোলনকারী। তাদের মধ্যে কেউ বাড়ির ছাদে উঠে বসে আছেন, কেউ আবার ছাদ থেকে গান বাজাচ্ছেন।
সারা শহর ঘুমিয়ে পড়লেও জেগে থাকেন বাড়িটির ছাদে অবস্থান করা আন্দোলনকারীরা। বাড়িটির সামনে অবস্থান করা আন্দোলনকারীদের দিকে আলো জ্বেলে বসে থাকেন তারা। অনেক সময় আবার আলো জ্বেলে নাড়া-ছাড়া করেন। এখানেই শেষ নয়, তারা সবাই এক সঙ্গে খাওয়া-দাওয়াও করেন। মাঝে মধ্যে তারা বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায়ও মন বসান। অনেক সময় তারা সকাল হওয়ার আগ পর্যন্ত দেশাত্মবোধক গানও গান। ওই বাড়ির ছাদ থেকে তারা অনেক ধরনের সুবিধা পান। তার মধ্যে অন্যতম, তারা ছাদে ওঠে নিরাপত্তা বাহিনীর গতিবিধি লক্ষ্য রাখেন।
১৪ তলাবিশিষ্ট ওই বাড়িটি নির্মাণ করা হয় সাদ্দাম হোসেনের আমলে। বাড়িটি ইরাকের টাইগ্রিস নদীর পাশেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। ২০০৩ সালের পর থেকে ওই বাড়িটি পরিত্যক্ত। কিন্তু এবার সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যাপক সহযোগিতা করছে বাড়িটি। গত মাসের ২৫ তারিখের পর থেকে আন্দোলনকারীরা এই বাড়িটির দখল করে রেখেছেন। তারা প্রতিজ্ঞা করেছেন আন্দোলন সফল না হওয়ার আগ পর্যন্ত বাড়িটি তারা ছেড়ে যাবেন না।
এই বিল্ডিংটি এক সময় কমার্শিয়াল বিল্ডিং হিসেবে পরিচিত ছিল। এটির ডাক নাম ছিল টার্কিশ রেস্টুরেন্ট। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে বদলেছে বাড়িটির নাম। কখনো বাগদাদের স্তালিনগ্রাদ, কখনও বা হ্যাঙ্গিং গার্ডেন্স নামে পরিচিতি পায়।