পাকিস্তানের নাম না করেই বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ দমনে সমস্ত রাষ্ট্রকে জোরদার লড়াইয়ের ডাক চিনের
দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসবাদীদের মদত এবং অর্থসাহায্যের অভিযোগ আগেই উঠেছিলো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপুঞ্জের বারবার হুঁশিয়ারির মুখে পড়লেও সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তান যে কোনও কড়া পদক্ষেপই নেয়নি, তা আগেই জানিয়েছিল ফিন্যন্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা এফএটিএফ।
চলতি সপ্তাহেই প্যারিসে আয়োজিত পাঁচ দিনের অধিবেশনের শেষে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপে অর্থ যোগানের উপর নজরদারি চালানো এই আন্তর্জাতিক সংস্থাটিকে পাকিস্তানকে হুঁশিয়ারি দিতে দেখা যায়। ধমকের সুরে এদিন তারা জানায়, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মধ্যে পাকিস্তান যদি দেশের অভ্যন্তরে সন্ত্রাস-দমনে অর্থ সাহায্য বন্ধ না করে, তাহলে তাদের 'কালো তালিকা’ ভুক্ত করা হবে।
প্রসঙ্গত সন্ত্রাসবাদীদের প্রশ্রয় এবং অর্থ যোগানের অভিযোগে গত বছর জুনেই পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভুক্ত করেছিল এফএটিএফ। কিন্তু এত কিছুর পরেও ইমরান সরকারের যে হুঁশ ফেরেনি, তা এদিন এফএটিএফের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয়।
প্যারিসে আয়োজিত পাঁচ দিনের অধিবেশন শেষে এফএটিএফ-র সভাপতি জিয়ানমিং লিউ শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, " পাকিস্তানকে দ্রুত ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সন্ত্রাস দমনে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ সাহায্যও বন্ধ করতে হবে। যদি তা না করে তাহলে এই দেশকে কালো তালিকা ভুক্ত করা হতে পারে।" এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, " পাকিস্তান চাইলে এখনও কালো তালিকাভুক্তির হাত থেকে বাঁচতে পারে। তারা যদি দেশের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদকে সমূলে উপরে ফেলতে না পারে এবং অর্থ যোগান বন্ধ না করে, তাহলে ভবিষ্যতে সমস্যা আরও বাড়বে।"
প্যারিসে আয়োজিত এফএটিএফ এর পাঁচদিনের এই বৈঠকে হাজির ছিলেন বিশ্বের ২০৫ টি দেশের প্রতিনিধিরা। বৈঠকে উপস্থিত সদস্যদের মধ্যে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও বিশ্ব ব্যাংকের সদস্যরাও ছিলেন। এই বৈঠকে পাকিস্তানকে অন্যতম বাধা বলে চিহ্নিত করে ভারত।
সীমান্তে পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা করায় বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। পাকিস্তানে প্রকাশ্যে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদী দলগুলির বিবরণ প্রকাশের পাশাপাশি পুলওয়ামা, ও উড়িতে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী হামলার কথাও এই বৈঠকে তুলে ধরে ভারত।
সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে হওয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি-জিনফিং এর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর ভারতের চীনা রাষ্ট্রদূত সান-উইডং সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে জানান, " ভারত এবং চীন উভয়ই সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সংঘবদ্ধ লড়াইয়ে বদ্ধপরিকর। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও বাড়াতে আমারা সব দেশকে আহ্বান জানাচ্ছি।" যদিও চীন প্রশাসনও বর্তমানে জিনজিয়াং প্রদেশে সন্ত্রাসবাদ সমস্যার দ্বারা জর্জরিত।