২০২১-এ দশ লক্ষের বেশি 'রিফিউজি' ফিরেছে আফগানিস্তানে, দাবি রিপোর্টে
তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের চিত্র প্রায় সকলেরই মনে আছে। অগাস্টের মাঝামাঝি জঙ্গিগোষ্ঠীটি কাবুল দখল করার পরই অস্থির হয়ে উঠেছিল গোটা দেশ। 'চল পালাই কোথা, দেশে আর থাকা চলে না' বলে অন্যান্য দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন আফগানরা৷ এবার জানা গেল, ২০২১ সালে ১.১৪৬ মিলিয়নের বেশি শরনার্থী ফিরেছে আফগানিস্তানে।
অগাস্টের মাঝামাঝি তালিবান কাবুলের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হিড়িক পড়েছিল দেশ ছাড়ার। মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমানে চড়ে সেই দেশে পাড়ি দেওয়ার কাকুতিমিনতি জানিয়েছিলেন আফগানরা। কাবুল বিমানবন্দরে ভিড় জমিয়েছিলেন লক্ষ লক্ষ নাগরিক৷ বহু আফগান সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, অভিনেতা,অভিনেত্রী পাড়ি দিয়েছিলেন ইরান, আমেরিকা, পাকিস্তান, ভারত, ইংল্যান্ডে। এবার দেখা যাচ্ছে তাদের অনেকেই ফিরে এসেছেন। মূলত ইরান এবং পাকিস্তান থেকে ফিরে এসেছেন অধিকাংশ শরনার্থী৷
শরনার্থীদের জন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের আন্তর্জাতিক সংগঠন আইওএম জানিয়েছিল, তালিবান শাসনে বিরাট অনিশ্চয়তায় ভুগছিলেন সাধারণ মানুষ। তাই তাঁরা দেশ ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলেন। এই কারণেই চলতি বছরে প্রায় আধা মিলিয়ন মানুষ দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পাড়ি দিয়েছেন৷ হিসেব বলছে, চলতি বছরের ১লা জানুয়ারি থেকে ২১ নভেম্বর অবধি ৬,৬৭,৯০০ জন আফগান নাগরিক নিজেদের বাসস্থান বদলে নিয়েছেন। একইসঙ্গে উঠে এসেছে দেশে ফেরত শরনার্থীদের কথাও। প্রতিবেশী দেশ ইরান এবং পাকিস্তান থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষ আফগানিস্তানে ফিরেও এসেছেন।
এমনিতেই যথেষ্ট দরিদ্র দেশ আফগানিস্তান। তালিবানরা সেই দেশের ক্ষমতা দখলের পর বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘের আর্থিক মদত তথা দেশের উন্নয়ন। অগাস্টেই দেখা গিয়েছিল, অর্থনীতি একেবারে গোল্লায় গিয়েছে৷ দেশে দারিদ্র্য বাড়ার তথ্যও প্রকাশ্যে এসেছে। তালিবান রাজত্বে যা কিনা বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ৷ অবস্থা এতটাই সঙ্গীন যে, পরিবার প্রতিপালনের দায়ে ছোট্ট মেয়েকে বিক্রি করে দিতে হচ্ছে পিতাকে৷ দেশের মোট জনসংখ্যার ৯৫ শতাংশই বসবাস করছেন দারিদ্রসীমার নীচে।