মহামারীর মাঝেই নতুন আশা যোগাচ্ছে ব্রিটেনের অ্যান্টিবডি টেস্ট, প্রথম ট্রায়ালেই সাফল্যের হার ৯৮.৬%
করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারের মাঝেই নতুন আশা যোগাচ্ছে অ্যান্টিবডি টেস্ট। ব্রিটেনে করোনা অ্যান্টিবডির প্রথম বড়ো ট্রায়ালের সফলতার পরে ব্রিটিশ মন্ত্রীরা জনগণের জন্য বিনামূল্যে এই পরীক্ষা করানোর কথা ভাবছেন বলে জানা যাচ্ছে। শুক্রবার এমন খবর পাওয়া গেল ব্রিটেনের এক সংবাদপত্রের বিবৃতিতে।
ফিঙ্গারপ্রিক টেস্টের সফলতার হার ৯৮.৬%
ইতিপূর্বে আমেরিকার এফডিএর পক্ষ থেকে ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষায় নির্ভুলভাবে করোনা শনাক্তকরণের হার প্রায় ৯৮.৮% জানানো হলেও তা নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে সন্দিহান হন বিজ্ঞানীরা। তবে শুক্রবারে ব্রিটেনের খবরে স্বস্তি পেয়েছেন অনেকেই। সূত্রের খবর অনুযায়ী, জুনে গোপনীয়তা বজায় রেখে করা ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষার মানব ট্রায়ালে সফলতার হার প্রায় ৯৮.৬%। ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষায় মূলত মানুষের আঙুলের ডগা থেকে নামমাত্র রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ব্রিটিশ গবেষকদের মতে, রক্তের নমুনা এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা করলে মাত্র ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে নির্ভুলভাবে বলা সম্ভব যে ওই ব্যক্তি কখনও করোনায় সামান্যতম আক্রান্ত হয়েছিলেন কি না।
ব্রিটেনের গবেষণায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা
ব্রিটেনের সংবাদপত্র অনুযায়ী, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল ও ব্রিটেনের খ্যাতনামা ঔষধ প্ৰস্তুতকারী সংস্থা যৌথ উদ্যোগে এই গবেষণা চালায়। ইউকে র্যাপিড টেস্ট কনসর্টিয়াম(ইউকে-আরটিসি) নামক ওই দল ভিন্ন ভিন্ন রক্তের নমুনা পরীক্ষা করার পরে দেশের বিভিন্ন গবেষণাগারে পাঠায় সর্বশেষ তথ্য যাচাইয়ের জন্যে। ইতিপূর্বে ফিঙ্গারপ্রিক সংক্রান্ত এমন বহু পরীক্ষা হয়েছে এবং সে সম্বন্ধে ভ্রান্ত ধারণাও ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। তাই এবারে এই গবেষক দল সম্পূর্ণভাবে নির্ভুল হয়েই এই ব্যাপারে সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
ব্রিটেনের মন্ত্রীরা ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আশাবাদী
ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষার এই সাফল্যের পর এর সরকারি স্বীকৃতির দিকে তাকিয়ে আছেন গবেষকরা। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ব্রিটেনের ভিন্ন ভিন্ন ওষুধ প্ৰস্তুতকারীরা ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষার জন্য দরকারি প্রোটোটাইপ বানাতে শুরু করে দিয়েছেন। অন্যদিকে সংবাদপত্রের বিবৃতি অনুযায়ী, ব্রিটেনের মন্ত্রীরাও এবিসি-১৯ নামক এই ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষা নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী এবং সরকারি স্বীকৃতি পাওয়ার পরই জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে এই পরীক্ষা করানোর পরিকল্পনা করছেন সরকারি আধিকারিকরা।
সরকারি স্তরে আলোচনা শুরু ইউকে-আরটিসি-র সাথে
ইউকে-আরটিসি প্রধান ক্রিস হ্যান্ড জানিয়েছেন, "এই পরীক্ষায় নির্ভুলভাবে করোনা ধরা পড়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৮.৬%। ফলত আমরা যথেষ্ট আশাবাদী এবং এক্ষেত্রে আমরা আমাদের সহযোগীদের সাথে একযোগে আরও বেশি পরিমাণে পরীক্ষার কিট বানানোর পরিকল্পনা করছি।" ইউকে-আরটিসির এক আধিকারিকের কথায়, ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে ইউকে-আরটিসির সাথে আলোচনা করে লক্ষাধিক কিট কেনার কথা আলোচনা করছে।
বাড়িতে বসে সম্ভব হবে ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষা
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষা সম্ভবত বিনামূল্যে সরকারি তরফে করানো হবে। এছাড়াও বাড়িতে বসে অনলাইনেও কিট কেনা সম্ভব হবে অদূর ভবিষ্যতে। স্বাস্থ্য-দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, "আমরা এই কিট নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী হলেও আমরা এখনও জানি না দেশে করোনার এই বাড়বাড়ন্তের কারণ কি। এছাড়াও সরাসরি সংক্রমণের পরিষ্কার পথ কি সে বিষয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। ফলে ফিঙ্গারপ্রিক পরীক্ষার কিট নিয়ে এখনও আলোচনার দরকার রয়েছে।"