চিনের 'ধসে যাওয়া' শেয়ার মার্কেট করোনা হানার পর চাঙ্গা কী করে! রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে
চিনের 'ধসে যাওয়া' শেয়ার মার্কেট করোনা হানার পর চাঙ্গা কী করে! রহস্য ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে
ক্রমাগতই চিনকে ঘিরে রহস্য দানা বাঁধছে করোনা ভাইরাসের জেরে। করোনা ভাইরাস আদৌ কোনও দেশের জৈব অস্ত্র কী না তা নিয়ে জল্পনা উঠতেই যদিও বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে এটি কোনও ল্যাবে তৈরি হয়নি। এই ভাইরাস থেকে সেরকম প্রমাণ এখনও মেলেনি। তবে, এই ভাইরাসের হানায় যেখানে বিশ্বের একের পর এক দেশের অর্থনীতির পতন হচ্ছে ও শেয়ার মার্কেট ধসে যাচ্ছে, সেই পরিস্থিতিতে চিন নিজের ধসে যাওয়া শেয়ার মার্কেটকে চাঙ্গা করে তুলেছে করোনা হানার পরই। এটা কীভাবে সম্ভব হল, তা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে।
চিনের শেয়ার মার্কেটের উত্থান পতন
করোনা আতঙ্কের জেরে গোটা বিশ্বের একাধিক শেয়ার মার্কেট ধরাশায়ী। সেখানে চিনের মার্কেটের পরিসংখ্যান বাক করার মতো! ২০১৯ সালে ১২ ডিসেম্বরে চিনের সাংহাই কম্পোসিট ইনডেক্স ২,৯১৫ পয়েন্টে ছিল। তখনও চিন করোনা ভাইরাসের হানার খবর প্রকাশ্যে আনেনি সেভাবে। এরপর করোনা আতঙ্ক দানা বাঁধতে থাকে। পরবর্তীকালে ১৩ জানুয়ারি সাংহাই কম্পোসিট ইনডেক্স পৌঁছে যায় ৩,১১৫ পয়েন্টে। এরপর চিনের করোনা হানা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে ত্রাস ছাড়ায়। যারপর অল্প পরিসরে ৩,০৯৫ পয়েন্ট পড়ে যায় সাংহাই কম্পোসিট ইনডেক্স । চিন গত মঙ্গলবারই শেয়ার মার্কেট চাঙ্গা করে সাংহাই কম্পোসিট ইনডেক্সকে রাখতে পেরেছে ২,৭২২ পয়েন্টে। নিঃসন্দেহে যা চিনের অর্থনীতিতে বড় দিক। অন্তত করোনা আক্রমণে সমস্ত অর্থনীতি যখন ধসে যাচ্ছে, তখন এমন পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে বড় দিক।
চিনের বাজারে বড় বিনিয়োগ
এমন বহু অধ্যায়ের পর গত কয়েকদিন আগেই চিন জানিয়েছেন তারা তাদের বাজারে ১৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (লিকুইডিটি ওয়ার্থ) বিনিয়োগ করতে পেরেছে। যা বুঝিয়ে দিচ্ছে যে চিনের শেয়ার মার্কেট উত্থান পতনের মধ্যে দিয়েও পোক্ত জায়গায় রয়েছে। যেখানে ভারতীয় মুদ্রা ক্রমাগত পতনের দিকে যাচ্ছে , সেখানে চিনের মুদ্রা ইউয়ান বা রেইনমিনবি ক্রমাগত পোক্ত জায়গায় পৌঁচে যাচ্ছে। এমনকি পশ্চিমী দেশগুলির তুলনাতে চিনের শেয়ার বাজার এতটাই পোক্ত জায়গায় গিয়েছে যা বিনিয়োগ কারীদের স্বর্গ হিসাবে চিনতে তুলে ধরছে।
বিশ্বজুড়ে কর্মী ছাঁটাইয়ের আলোচনা!
এক সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলেই দিয়েছে যে বিশ্বজুড়ে প্রায় ২৫ বিলিয়ন মানুষ কর্মহীন হতে পারেন করোনা হানার জেরে। বহু জায়গা লক ডাউন রয়েছে। ফলে বন্ধ রয়েছে বহু পরিষেবা সংস্থা। এমন পরিস্থিতিতে চিনকে ঘিরে ব্যবসায়িক বিনিয়োগের সম্ভবনা দেখা যাচ্ছে। আর এই সম্ভাবনাই গোটা বিশ্বের তীক্ষ্ণ নজর চিনের দিকে টেনেছে।
২০০৮ .. এমনকি ১৯৩০ এর পর বড়সড় বিপর্যয়!
সাম্প্রতিককালে বিশ্ব বড়সড় বিপর্যয় দেখেছে ২০০৮ সালে। সেই সময় প্রবল অর্থনৈতিক ক্ষতি দেখা দেয় গোটা বিশ্বে। একের পর এক ব্যাঙ্ক দেউলিয়া হয়। সংস্থা বিপর্যস্ত হয়। কর্মহীন হন বহু মানুষ। তারও আগে ১৯২৯-৩০ সালে ব্যাপক ক্ষতির শিকার হন বিশ্বজুড়ে বহু মানুষ। এরপর আবার ২০২০ সাল থেকে করোনা হানার জের সমস্ত দেশের অর্থনীতি ধসের দিকে।
মার্কিন মুলুক থেকে জার্মানিতে আতঙ্ক, কিন্তু চিন...!
যেভাবে বাজার খোলার পর মার্কিন অর্থনীতিতে ১৫ মিনিটের স্তব্ধতা 'পজ ট্রেডিং' লাগু হয়েছে, তাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক সমস্যা কাটিয়ে উঠবে বলে সেদেশের অর্থনীতিবিদরা আসা করছেন। অর্থনীতি ঘিরে আতঙ্ক জার্মানি থেকে জাপানে। ফ্রান্সেও প্রবল সংকট অর্থনৈতিক দিক থেকে। এশিয়ার শেয়ার মার্কেট গুলিতে কার্যত রক্তস্নান চলছে, তেমন পরিস্থিতিতে চিনের বহাল তবিয়তে থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। উল্লেখ্য, যে দেশ করোনার আঁতুর গর হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে, সেই দেশ কীভাবে এণন বড় সংকটেও অর্থনীতি আরও পোক্ত করে ফেলল? যেখানে বাকি দেশগুলি এমন সংকটে ক্রমাগত ধরাশায়ী।