দাবদাহ চরমে, জ্বলছে এথেন্স,পুড়ছে তুরস্ক! দশকের ভয়াবহ তাপপ্রবাহের মুখে গোটা দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ
দাবদাহ চরমে, জ্বলছে এথেন্স,পুড়ছে তুরস্ক! দশকের ভয়াবহ তাপপ্রবাহের মুখে গোটা দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ
একদিন আগেই গ্রীসে তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল ৪৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাত্রা। বুধবার সেই তাপপ্রবাহের সঙ্গে যুক্ত হল দাবানলের আতঙ্ক! সূত্রের খবর, গত কয়েক দশকের মধ্যে ভয়াবহতম তাপপ্রবাহ প্রত্যক্ষ করছে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপ। অরণ্যে দাবানলের লেলিহান শিখা গ্রাস করেছে একের পর এক গ্রাম। স্বভাবতই ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে গ্রামগুলি। মাঝ দুপুরে সরাসরি রোদে বেরোনোর ক্ষেত্রে জারি হয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা।
দাবানলের বাড়বাড়ন্তে পুড়ছে তুরস্ক
আন্তর্জাতিক আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, আফ্রিকা থেকে ধেয়ে আসা গরম বাতাসে সৃষ্ট হচ্ছে এহেন তাপপ্রবাহ। আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস (১০৪ ফারেনহাইট), মত আবহাওয়াবিদদের। গ্রীস, তুরস্ক, সার্বিয়া সহ বুলগেরিয়া ও আশপাশের অঞ্চলে দিবালোকে প্রকাশ্য সূর্যালোকে বেড়ানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। যদিও এহেন গরমের মাঝেই দাবানলকে কাবু করার চেষ্টায় দমকলকর্মীরা! কয়েক ডজন দাবানলে তুরস্কে আহত ৫০-এরও বেশি সংখ্যক মানুষ, মৃত বেশ কিছু নাগরিক।
তুরস্কের পাশে আজারবাইজান
উপগ্রহ চিত্রে স্পষ্ট দক্ষিণ ইউরোপে দাবানলের ধ্বংসলীলা। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তুরস্কে মৃত দের মধ্যে এক বিবাহিত দম্পতি, ৮২ বছর বয়সী একজন বৃদ্ধ রয়েছে। দমকল কর্মীদের সহায়তা করার সময়ে মারা গেছেন বছর পঁচিশের এক স্বেচ্ছাসেবী যুবক। ইতিমধ্যেই সকল বিপদসঙ্কুল গ্রাম ও সৈকত সংলগ্ন রিসর্ট থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের। সম্প্রতি আজারবাইজান সরকার বিশেষ, হেলিকপ্টার এবং নয়া সরঞ্জাম সহ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বেচ্ছাসেবীদের পাঠানোর কথা জানিয়েছে।
জ্বলছে এথেন্স!
এথেন্সে তাপমাত্রার পারদ ছুঁয়েছে ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াস বা ১০৪ ফারেনহাইটের মাত্রা। স্বভাবতই অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বেরোনোর ক্ষেত্রে সাফ না করেছে গ্রিস সরকার। জানা যাচ্ছে, ইউরোপে রেকর্ড করা সর্বকালের অধিক তাপমাত্রার রেকর্ড এথেন্সেই। ১৯৭৭ সালের ১০ জুলাই এথেন্সের উষ্ণতা রেকর্ড ৪৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছিল। জার্মানি ও বেলজিয়ামে সাম্প্রতিক মারাত্মক বন্যা এবং কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে চরমতম তাপপ্রবাহের নিদর্শনে খুব একটা চমকিত নন বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া পরিবর্তনের এমন ঘটনা যে আগামীতে আরও হবে, সে বিষয়ে নিশ্চিত গবেষকরা।
দ্রুত পাল্টাচ্ছে বিশ্বের জলবায়ু মানচিত্র?
সম্প্রতি জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া বিভাগের অভিজ্ঞ জলবায়ু গবেষক মাইক কেনডন জানান, "বিশ্বব্যাপী আবহাওয়াজনিত বদলে চোখ রাখলে কিছু অতি গুরুতর ঘটনা নজরে আসে। যেমন, কানাডায় ৪৯.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস (১২১.২৮ ফারেনহাইট) তাপমাত্রা, যা তাপমাত্রার সর্বকালীন রেকর্ডের খুবই কাছাকাছি!" জাতিসংঘের তরফে এও জানানো হয় যে, ২০২১ এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা তিনটি উষ্ণতম বছরের মধ্যে একটি এবং ইউরোপের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ উষ্ণতম বছর এটিই।