হোয়াইট হাউজের দৌড়ে এগিয়ে কে? ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও ফলাফলের নিষ্পত্তি হবে না সুপ্রিম কোর্টে
মার্কিন মুলুকে নির্বাচনী ফল প্রকাশ শুরু হতেই এগিয়ে যেতে শুরু করে ততই এগিয়ে যেতে থাকেন জো বাইডেন। আর হোয়াইট হাউজের থেকে ট্রাম্পের বিদায় ঘণ্টা বাজতে শুরু করতেই প্রতি আক্রমণে নামেন রিবাপলিকান রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ট্রাম্প। এমনকী হোয়াইট হাউজে দাঁড়িয়ে তিনি সুপ্রিমকোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন।
উইসকনসিন এবং মিশিগানে ফের ভোট গণনার দাবি
ইতিমধ্যেই উইসকনসিন এবং মিশিগানে ফের ভোট গণনার দাবি জানিয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্যে এগিয়েছে ট্রাম্পের টিম। এছাড়াও জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়াতেও নির্বাচন সংক্রান্ত আইনি লড়াইতে নেমে পড়েছেন ট্রাম্প। তবে শেষ কয়েকটি রাজ্যে ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে যান বাইডেন। যদিও মনে করা হচ্ছিল যে মার্কিন নির্বাচনী লড়াই গড়াতে চলেছে সেদেশের ফেডারাল সুপ্রিমকোর্টে। তবে যা পরিস্থিতি তাতে ট্রাম্পের ইচ্ছা অনুসারে হয়ত ভোটের লড়াই গড়াবে না সুপ্রিমকোর্টে।
মেইল-ইন ব্যালট সংক্রান্ত আইনি লড়াই
এর আগেও একবার আগাম ভোট এবং মেইল-ইন ব্যালট সংক্রান্ত কেস করে নিজের পক্ষে ফল পাননি ট্রাম্প। তবে হোয়াইট হাউজে টিকে থাকার মরিয়া চেষ্টায় যে ট্রাম্প ফের সেই পথেই এগোবেন তা বলাই বাহুল্য। যদিও বিশেষজ্ঞদের মত, বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে ফলাফল প্রায় স্পষ্ট বাইডেনের দিকে ঝুঁকে, সেখানে ট্রাম্পের এই দাবির ফিরিস্তি উড়িয়ে দেবে সেদেশের ফেডারেল সুপ্রিমকোর্ট।
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি
বুধবার হোয়াইট হাউজে দাঁড়িয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বললেন, নির্বাচনের ফলাফল অসাধারণ। আমরা নির্বাচনে জিতে গিয়েছি। তবে মার্কিন নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, মিশিগান, পেনসেলভেনিয়া, এই সব রাজ্য়ে জিতে গিয়েছি আমরা। প্রয়োজনে আমি সুপ্রিমকোর্টে যাব। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের কথায় উঠে আসা রাজ্যগুলির মধ্যে জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং পেনসেলভেনিয়া এখনও ভোট গণনা জারি রয়েছে।
পেনসিলভেনিয়াকে পাখির চোখ করেছেন ট্রাম্প
বর্তমান পরিস্থিতিতে পেনসিলভেনিয়াকে পাখির চোখ করেছেন ট্রাম্প। এখনও পর্যন্ত ২০ কলেজ বিশিষ্ট পেনসিলভিনিয়াতে এগিয়ে ট্রাম্প, তবে এখানে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা হতে সময় লাগবে। কারণ ডাক যোগে সব ভোট এসে পৌঁছাতে এই রাজ্যে শুক্রবার পর্যন্ত সময় লাগবে। এবং মনে করা হচ্ছে বেশিরভাগ ডেমোক্র্যাটই ডাক যোগে ভোট দিয়েছেন। এই কারণেই পেনসিলভেনিয়ার ভোট গণনা থামিয়ে সেখানে ফলাফল ঘোষণা করারনোর দাবিতে সরব ট্রাম্প।
মেইল-ইন ভোট পদ্ধতি নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন ট্রাম্প
মেইল-ইন ভোট পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ট্রাম্প একটি আগাম আভাস দিয়ে রেখেছিলেন যে তিনি নির্বাচনে হারলে তা নিয়ে সাংবিধানিক আইনি লড়াইতে নামবেন তিনি। তাই আগেভাগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্টে রক্ষণশীল বিচারপতিদের বসিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে সমস্যাটা হল, ট্রাম্পের কাছে তাঁর দাবির স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ নেই।
আইনি পথে আসবে ট্রাম্পের জয়?
আইনি পথে ট্রাম্পের একমাত্র জয়ের পথে হতে পারে যদি তিনি প্রমাণ করতে পারেন যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ব্যালট গণনা চালিয়ে যআও হচ্ছে রাজ্যগুলিতে। যদিও মার্কিন সাংবিধানিক আইন অনুযায়ী, এই ধরণের নির্বাচন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য। তাছাড়া এবছর করোনার জেরে মেইল-ইন ভোটের রেকর্ড ভাঙায় ভোট গণনা শেষ হতে সময় লাগবে, তা স্বাভাবিক। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের দাবি অনুযায়ী তাই সুপ্রিম কোর্টের এই বিষয়ে হস্তক্ষেপের কোনও ইঙ্গিত নেই।
আইনি লড়াইয়ের জন্যে প্রস্তুত ডেমোক্র্যাটরাও৭
তবে আইনি লড়াইয়ের জন্যে প্রস্তুত ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকান, দুই পক্ষই। মার্কিন মুলুকের শ্রেষ্ট আইনজীবীদের নিয়ে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত দুই পক্ষেই। তবে দুই পক্ষেই মোটামুটি জানে যে আদালতে গিয়ে জমা পড়া ভোট বাতিলের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। এবং যদি তা না হয়, তা হলে ট্রাম্পের পক্ষে নির্বাচনে জেতা প্রায় অসম্ভব ঠেকছে এই মুহূর্তে।
কোথায় লুকিয়ে হোয়াইট হাউজের চাবিকাটি?
এই মুহূর্তে সুপ্রিমকোর্টে পেনসিলভেনিয়া সংক্রান্ত একটি মামলা ঝুলছে। নির্বাচনী তারিখের পরে আসা মেইল ইন ব্যালট বাতিল সংক্রান্ত সেই মামলায় এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি আদালতের তরফে। তবে সেপ্টেম্বরে পেনসিলভেনিয়ার আদালত বর্তমান নিয়মের পক্ষে রায় দিয়ে ট্রাম্পের দাবি খারিজ করেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে ফেডারাল সুপ্রিমকোর্টেও এই রায়ই বহাল থাকবে। আর যদি তা হয়, তাহলে ট্রাম্পের ইচ্ছা মতো হোয়াইট হাউজের চাবিকাঠি আর আইনি লড়াইয়ের পথে মিলবে না। সেই ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ভরসা বাকি পাঁচ রাজ্যের ভোটে জিতে বাইডেনকে হারানো।
ট্রাম্পের উদ্দেশে বাইডেনের রাজনৈতিক বুমেরাং, এক ইঞ্চিও জমি না ছাড়ার সাফ বার্তা