
চিনে নতুন করে মহামারীর আশঙ্কা! দৈনিক করোনা সংক্রমণ ৪০,০০০ ছাড়াল
নতুন করে চিনে সংক্রমণ বাড়ছে। সোমবার চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা সংক্রমণ ৪০,০০০ হাজারের বেশি। শুধু বেজিংয়ে নতুন করে চার হাজার জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। নতুন করে করোনা ঢেউ চিনে আছড়ে পড়ছে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করতে শুরু করেছেন। চিনের বিভিন্ন জায়গায় কঠোর করোনা বিধি, লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

চিনে নতুন করে করোনা ঢেউয়ের আশঙ্কা
চিনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, সোমবারের রিপোর্ট অনুযায়ী নতুন করে আক্রান্তদের মধ্যে ৩৯,৪৫২ জনের শরীরে কোনও উপসর্গ দেখতে পাওয়া যায়নি। চিনের নতুন করে করোনা সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চিনের কঠোর করোনা বিধির বিরোধিতা করে স্লোগান উঠতে থাকে। শনিবার সন্ধের সময় মোমবাতি দেশের বাণিজ্যের রাজধানী সাংহাউতে নতুন করে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ধীরে ধীরে সেই বিক্ষোভ চিনের বিভিন্ন শহরে ছড়িয়ে যেতে শুরু করে।

করোনা বিধির জেরে অগ্নিদগ্ধ ১০
চিনের জিনজিয়াং প্রদেশের উরুমকিতে একটি বহুতলে বৃহস্পতিবার ভয়াবহ আগুন লাগে। সেই অগ্নিকাণ্ডের জেরে ১০ জনের মৃত্যু হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, করোনা আক্রান্তরা যাতে ঘরের বাইরে বের হতে না পারে, সেই কারণেই একাধিক বাড়িতে প্রশাসনের তরফে তালাবন্ধ করে রাখা হয়। বাইরে বের হতে না পেরে তাঁদের অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। এরপরেই চিনের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়তে থাকে। প্রথমে সাংহাইয়ের মানুষ প্রথম বিক্ষোভ দেখান। তারপর সেই বিক্ষোভ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে।

অটল চিনা প্রশাসন
চিনের বিভিন্ন শহর সব তিব্বতের প্রাদেশিক রাজধানীতে বিক্ষোভ দেখা যায়। দীর্ঘ লকডাউন ও করোনা পরীক্ষার বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ দেখান সাধারণ মানুষ। তবে, চিনা দৈনিকগুলো দাবি করেছে, প্রশাসন কঠোর হাতে বিদ্রোহ দমন করবে। শূন্য কোভিড নীতি থেকে কোনও ভাবেই চিনের প্রশাসন সরে আসবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে পুলিশ আটক করে বলে জানা গিয়েছে। তবে আটকের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে আটক অবস্থায় চিনা পুলিশ বিক্ষোভকারীদের মারধর করে বলে অভিযোগ।

উহানে চিনের বিক্ষোভ
তিন বছর আগে চিনের উহান প্রদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। তারপর থেকে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। করোনা মহামারীর প্রকোপকে সামলে বিশ্ব ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরলেও, চিন এখনও ছন্দে ফিরতে পারেনি। চিনে এখনও করোনা বিধি কঠোর ভাবে মেনে চলতে হয়। করোনা সংক্রমণ একটু বাড়লে এখনও লকডাউন হয়। আর্থিকভাবে চিনের বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। উহান প্রদেশের বাসিন্দারাও চিনের কঠোর করোনা বিধির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেন। উহানে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পড়ুয়ারাও বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। সোমবার ভোরবেলা বেজিংয়ের লিয়াংমা নদীর কাছে তৃতীয় রিং রোডে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী জমা হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। যার ফলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে থাকেন, 'আমরা মাস্ক চাই না, আমরা স্বাধীনতা চাই, আমরা করোনা পরীক্ষা চাই না, আমরা স্বাধীনতা চাই।'
চিনে করোনা বিরোধী বিক্ষোভের মাত্রা বাড়ছে, সাংহাইয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বিক্ষোভকারীর