চিনা ‘গুপ্তচর’ জাহাজ পৌঁছল শ্রীলঙ্কার বন্দরে, পরমাণু কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ নয়াদিল্লির
চিনা ‘গুপ্তচর’ জাহাজ পৌঁছল শ্রীলঙ্কার বন্দরে, পরমাণু কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ নয়াদিল্লির
মঙ্গলবার চিনের জাহাজ ইউয়ান ওয়াং ৫ শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে পৌঁছেছে। একেই শ্রীলঙ্কার অর্থিক পরিস্থিতি মোটেই ভালো নয়। তারপর চিনের ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজ নিয়ে কূটনৈতিক সমস্যায় পড়েছে কলম্বো। ইতিমধ্যে চিনের ইউয়ান ওয়াং ৫ জাহাজের হাম্বানটোটা বন্দর ব্যবহার নিয়ে ভারত ও আমেরিকার অন্যান্য মিত্র দেশগুলগুলো আপত্তি জানিয়েছে। অন্যদিকে, চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতির হুমকি দিয়েছে।
ভারতের উদ্বেগের কারন
শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে ভারত মহাসাগরের ওপর নজর রাখা যায়। ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কা চিনের পরমাণু চালিত একটি সাবমেরিনকে তাদের বন্দর ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছিল। ঘটনায় ভারত তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল। আট বছর পরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। ফের শ্রীলঙ্কা চিনের জাহাজকে প্রবেশের অনুমতি দিল। ভারতের তরফে আশঙ্কা করা হচ্ছে, চিনের এই গুপ্তচর জাহাজটি কুদানকুলাম ও কালপাক্কাম পারমাণবিক চুল্লির পাশাপাশি চেন্নাইয়ের থুথুকুড়ি বন্দরের নিরাপত্তার জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দর থেকে ভারতের ওপর নজর রাখা অনেকটা সহজ।
উদ্বেগ প্রকাশ আমেরিকার
যদিও চিনের তরফে দাবি করা হচ্ছে ইউয়ান ওয়ান ৫ জাহাজটি গবেষণার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। মূলত মহাকাশ গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে এবং জ্বালানি ভরার জন্য শ্রীলঙ্কার বন্দরে পৌঁচেছে। আমেরিকা চিনের এই দাবি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। আমেরিকার সামরিক বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, ইউয়ান ওয়াং সিরিজের জাহাজগুলো উন্নতমানের অ্যান্টেনা থাকে। এছাড়াও জাহাজগুলো ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি। ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে, রেকটগুলোকে ট্র্যাক করতে সাহায্য করে। শ্রীলঙ্কায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত জুলি চুং ও চিনা জাহাহের হাম্বানটোটায় প্রবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু সব কিছুর পরেও শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রনিল বিক্রমাসিংহে চিনা জাহাজকে হাম্বানটোটায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছিল।
চাপের মুখে শ্রীলঙ্কা
চিনা জাহাজ নিয়ে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করে। এরপরেই শ্রীলঙ্কার চিনা জাহাজের বন্দরে প্রবেশ পিছিয়ে দিতে চায়। সেই সময় চিনা রাষ্ট্রদূতের হুমকির মুখে পড়তে হয় শ্রীলঙ্কাকে। চিনা রাষ্ট্রদূত জানান, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে তাদের সম্পর্কের আরও অবনতি হবে। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কা চিনের থেকে ব্যাপক অঙ্কের ঋণ নিয়েছিল। তার অনেকটাই এখনও পরিশোধ হয়নি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এখনও বেলআউটের অনুমোদন করেনি। এই পরিস্থিতি একপ্রকার বাধ্য হয়েই শ্রীলঙ্কা চিনের জাহাজকে হাম্বানটোটা বন্দর ব্যবহারে অনুমতি দিয়েছে।
ছবি সৌ:এএনআই
চিনা গুপ্তচর জাহাজে রয়েছে উচ্চ প্রযুক্তি, শ্রীলঙ্কার বন্দর থেকে ভারত মহাসাগরে চালাতে পারে সমীক্ষা