শি জিনপিংয়ের নামাঙ্কিত কূটনৈতিক চর্চা কেন্দ্রের উদ্বোধন চিনে, মাও-র সঙ্গে তুলনা চিনা রাষ্ট্রপতির
শি জিনপিংয়ের নামাঙ্কিত কূটনৈতিক চর্চা কেন্দ্রের উদ্বোধন চিনে, মাও-র সঙ্গে তুলনা চিনা রাষ্ট্রপতির
একদিকে করোনা সঙ্কট অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সীমান্তের জেরে গোটা বিশ্বেই ক্রমেই একঘরে হয়ে পড়েছে চিনের কমিউনিস্ট সরকার। কিন্তু এতসবের মধ্যেও চিনের রাষ্ট্রপতি তথা পিপলস লিবারেশন আর্মির প্রধান শি জিনপিং নিত্য নতুন নতুন চাল দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশ তার বিদেশ নীতি দেখে ইতিমধ্যেই তার সঙ্গে মাও সে-তুংয়ের তুলনা করছেন।
৪০ বছর আগেও বিশ্বের প্রধান গরীব দেশ গুলির তালিকায় ছিল চিন
এদিকে অর্থনীতির দিক দিয়ে চিন বর্তমান পৃথিবীর দ্বিতীয় সমৃদ্ধিশালী দেশ। কিন্তু মাত্র ৪০ বছর আগেও চরম দারিদ্রসীমার নীচে বাস করে চিনের একটা বড় অংশের মানুষ। চিনের স্থান ছিল গরীব দেশ গুলির তালিকায়। ষাটের দশকে চিন আফ্রিকান অনেক দেশের চেয়েও গরীব ছিল। কিন্তু শেষ এই ৪০ বছরে দেশটি তার অর্থনীতিকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। এদিকে চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবং পিএলএ-র কমান্ডার-ইন-চিফ শি জিনপিং ২০১২ সালে মধ্য-কিংডমের প্রধান নেতা হন।
বৈদেশিক নীতির উপর বিশেষ জোর জিনপিংয়ের
২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পরেই চিনের বৈদেশিক নীতির উপর বিশেষ ভাবে জোর দিতে দেখা যায় তাকে। এদিকে সোমবারই চিনের বিদেশমন্ত্রকের হাত ধরে কূটনৈতিক চর্চার জন্য শি জিনপিং রিসার্চ সেন্টারের উদ্বোধন করা হয়। বর্তমান চিন প্রশাসনের এই বিশেষ পদক্ষেপের পর শি জিমপিংয়ের দূরদর্শিতাকে অনেকেই চিনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মাও সে-তুং এবং অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণবাদী দেং জিয়াওপিংয়ের সঙ্গে তুলনা করছেন।
মাও সে-তুংয়ের আমলে কেমন ছিল চিনের শাসনকাল ?
এদিকে চিনের গৃহযুদ্ধ চলে ১৯২৭ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত। সেই সময় যুদ্ধ শুরু হয় চাইনিজ ন্যাশনালিস্ট পার্টি এবং কমিউনিস্ট পার্টি অফ চায়নার মধ্যে। শেষ পর্যন্ত এই যুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টি জয়লাভ করে এবং গঠিত হয় পিপলস রিপাবলিক অফ চায়না। সেই কমিউনিস্ট পার্টিরই প্রধান দলনেতা ছিলেন মাও সে-তুং। ১৯৪৯ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত তিনি ক্ষমতায় ছিলেন। তার শাসনামলে চিনের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল বেশ ভঙ্গুর ছিল বলেই মনে করেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একটা বড় অংশ।
সোমবার জিনপিং গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই
এরপর ১৯৭৮ সালে চিনের মসনদে বসেন দেং জিয়াওপিং। তিনি ক্ষমতায় এসে চিনের ভঙ্গুর অর্থনীতির হাল ধরেন। ভুল অর্থনৈতিক নীতিগুলি শুধরে গোটা ব্যবস্থাকেই ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করেন তিনি। অনেকেই বলেন বর্তমান চিনের যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আমরা দেখি, সেটি শুরু হয় দেং জিয়াওপিং-এর হাত ধরেই। তিনিই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য 'এক দম্পতি এক সন্তান' নীতির প্রথম প্রয়োগ করেন। সোমবার বেইজিংয়ে শি জিনপিং গবেষণা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
জিনপিং ক্ষমতায় আসার পরেই রপ্তানিতে জোয়ার
এদিকে বর্তমানে চিনে বর্তমানে ৭৮ কোটির বেশি দক্ষ জনশক্তি রয়েছে বলে জানা যায়। পাশাপাশি চিনের বৃহৎ শিল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন, অপরিশোধিত তেল উৎপাদন, অটোমোবাইল, সিমেন্ট, আয়রন, স্টিল, শিল্প প্রভৃতি। উল্লেখ্য, পৃথিবীর প্রায় ৬০% সিমেন্ট একাই তৈরি করে চিন। এছাড়াও পৃথিবীর এক নাম্বার রপ্তানিকারক দেশ হিসাবেও স্বীকৃতি রয়েছে চিনের। বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা ২০১৭ সালের পর থেকে এই প্রতিটা ক্ষেত্রেই রপ্তানিতে জোয়ার আসে শি জিনপিংয়ের হাত ধরে।
২৩ শতাংশেরও বেশি মানুষের শরীরে তৈরি হয়ে গিয়েছে করোনা অ্যান্টিবডি, আশার দিশা দেখাল সেরো সার্ভে