চিনের আস্ফালন বাংলাদেশে বাড়তেই ভারতকে সঙ্গে নিয়ে সতর্ক চাল আমেরিকার! কূটনীতি তুঙ্গে
চিনের চেনা বিদেশনীতির ছাঁচেই এবার বাংলাদেশকেও নিজের নাগপাশে বাঁধতে চাইছে বেজিং। ক্রমেই গ্রাসের ফাঁস শক্ত করে বাংলাদেশে বহু প্রকল্পে টাকা ঢালতে শুরু করে চিন। আর তার হাত ধরেই লাদাখ আবহে দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত করে বেজিংয়ের তরফে দিল্লিকে প্রচ্ছন্ন বার্তা দিতে চেয়েছিল জিনপিংয়ের প্রশাসন। তবে পাশার চাল ঘুরিয়ে দিয়েছে ভারত! এবার ময়দানে আমেরিকা।
আমেরিকা-বাংলাদেশ সম্পর্ক
মার্কিন ডেপুটি সেক্রেটারি স্টিফেন বেগান জানিয়েছেন ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের উন্নতিতে ভারতের সঙ্গে শলা পরামর্শ করবে আমেরিকা। আর সেই মর্মে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের উন্নতিতে দিল্লির পরামর্শ গুরুত্বপূর্ম। এদিকে, খবর আর একবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের উন্নতি সাধনের বিষয়ে সচেষ্ট ওয়াশিংটন।
মার্কিন সচিবের ঢাকা সফর
প্রসঙ্গত, মার্কিন সচিব বেগান এর আগে ভারতের বিদেশসচিব হর্ষ স্রিংলার সঙ্গে এক বৈঠক করেন। মার্কিন সচিবের ভারত সফরের পরই বাংলাদেশ সফরসূচি রয়েছে। তার আগে, বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, এই প্রথম, আমেরিকার কোনও উচ্চপদস্থ সচিব বাংলাদেশের সফরে যাচ্ছেন। ফলে বাংলাদেশে চিনের আস্ফালন পড়ার পর বেগানের এই সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ আমেরিকার কাছে?
প্রসঙ্গত, বহু মুসলিম দেশের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কে ইদানিংকালে একটু অবনতি দেখা গিয়েছে। ইরানের সেনা প্রধানকে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বারা হত্যার পর সৌদি বাদে বহু মুসলিম দেশই ট্রাম্পকে ভালোভাবে নিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি আমেরিকার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এদিকে, বাংলাদেশের মাটিতে চিন একের পর এক প্রকল্পে কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করছে। এছাড়াও চিনের কোভিড উদ্যোগেও তারা বাংলাদেশকে শামিল করেছে। এম পরিস্থিতিতে ঢাকা, বেজিংয়ের দিকে ঝুকতে শুরু করেছে বলে আঁচ আমেরিকার।
কেন স্রিংলার কাছে বাংলাদেশের সম্পর্কে খোঁজ নিলেন বেগান?
ভারতের বর্তমান বিদেশ সচিব হর্ষ স্রিংলার সঙ্গে বৈদেশিক নানান নীতি নিয়ে বেগান আলোচনা করেন। বিদেশ সচিব হওয়ার দরুণ হর্ষ স্রিংলাই এই আলোচনার জন্য ভারতের উপযুক্ত প্রতিনিধি হিসাবে বিবেচিত হন। তবে এছাড়াও বাংলাদেশের সঙ্গে হর্ষের সম্পর্ক বহুদিনের। এককালে সেদেশে ভারতের বিদেশ সচিব হয়ে পৌঁছন হর্ষ স্রিংলা । ফলে তাঁর কাছ থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে তাৎপর্য পূর্ণ তথ্য তিনি পাবেন, সেবিষয়ে নিশ্চিত ছিলেন মার্কিন সচিব।
বাংলাদেশ, চিন ও ভারতের চাল
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ থেকে চিন ৮০ শতাংশ মিলিটারি হার্ডওয়্যার কিনছে। সেনার বহু অস্ত্র বাংলাদেশ থেকে কিনতে শুরু করেছে চিন। এমন পরিস্থিতিতে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্রেডিট বাংলাদেশকে দিতে চেয়েছে ভারত। প্রতিরক্ষা খাতেই এই বিনিয়োগ ভারতের। ফলে চিনের বেছানো চালে বেজিংয়ের পায়ের তলার মাটি সরিয়ে নিয়েছে ভারত। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নজর এবার বাংলাদেশে পড়াতে , ভারতের তরফে বাংলাদেশ কূটনীতির রাস্তা অনেকটাই মসৃণ হয়েছে।