কৃষক অসন্তোষ ঘিরে পারদ চড়েছে মহারাষ্ট্র -ওড়িশায়, নেপথ্যে কোন ইস্যু, কী দাবি, জানুন
'সুজলা সুফলা' ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এভাবে কৃষক অসন্তোষের মূল কারণ কী? কোথায় রয়েছে সমস্যা দেখে নেওয়া যাক। দেশ জুড়ে ক্রমেই বেড়ে চলা কৃষক অসন্তোষের ছবিটা দেখে নেওয়া যাক।
মহারাষ্ট্রে কৃষক অসন্তোষ, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি প্রাসঙ্গিক দিক। মহারাষ্ট্রে বিজেপি শাসিত সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক দাবি দাওয়া নিয়ে সেরাজ্যের ৩৫ হাজার কৃষকের প্রতিবাদ মিছিল সংগঠিত করে সিপিএমএর সংগঠন 'অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভা'। এযাবৎকালে গেরুয়া রাজনীতির দাপটের মধ্যে বামপন্থী কোনও সংগঠনের এতবড় মিছিল তথা জমায়েত দেখা যায়নি। যে মিছিল মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে শুরু করে মুম্বই পর্যন্ত পৌঁছয় ।
তবে, শুধু বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রেই নয়, ওড়িশার নবীন পট্টনায়ক সরকারের বিরুদ্ধেও চাষিদের একই রকমের ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে। গর্জে উঠছেন হরিয়ানার কৃষকরাও। সেখানে বিজেপি-র মনোহর লাল খট্টর সরকারের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ রয়েছে কৃষকদের। 'সুজলা সুফলা' ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এভাবে কৃষক অসন্তোষের মূল কারণ কী? কোথায় রয়েছে সমস্যা দেখে নেওয়া যাক। দেশ জুড়ে ক্রমেই বেড়ে চলা কৃষক অসন্তোষের ছবিটা দেখে নেওয়া যাক।
মহারাষ্ট্রে কৃষকদের দাবি
মহারাষ্ট্রে কৃষকদের মূল দাবি ছিল, বিনা শর্তে মুকুব করতে হবে ঋণ। এজন্য ২০০৮ সালের ঋণ মুকুব সংক্রন্ত সুবিধার আওতায় যে সমস্ত কৃষক নেই, তাঁদের সেই সুবিধা দিতে হবে। এজন্য 'ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ ক্ষেতকারী সম্মান যোজনা'-র আওতায় চাষিদের আনতে হবে, বলেও দাবি ওঠে। এছাড়াও, দিতে হবে বিদ্যুতের খরচ। শুধু তাই নয়, কৃষকদের দাবি মহারাষ্ট্রে চালু করতে হবে কৃষকদের পেনশন স্কিম।
মহারাষ্ট্রের কৃষকজের দাবি ও সরকারের অবস্থান
মহারাষ্ট্রের কৃষকদের আরও দাবি ছিল। তাঁরা জানিয়েছেন, সঞয় গান্ধী জালাধার যোজনার মতো জল প্রকল্পের সুষ্ঠু রূপায়ণ। পাশাপাশি, দুধের দাম নির্দিষ্টকরণ, গরীবদের জন্য ন্যায্য মূল্যে রেশন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বহু দাবি জানানো হয়। এছাড়াও ফসলের ন্যূনতম দাম নির্ধারণের ঘোষণারও দাবি করা হয়। যদিও সমস্ত দাবি মেনে নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার।
ওড়িশায় কৃষক অসন্তোষ
মহারাষ্ট্র ছাড়াও ওড়িশায় ১৫০০০ কৃষকের একটি মিছিল সেরাজ্যের বিধানসভার উদ্দেশে এগোতে থাকে। ওড়িশা বিধানসভার কাছে গিয়ে তাঁরা জমায়েত করেন। মহারাষ্ট্রের মতো ওড়িশার চাষিদেরও দাবি দাওয়া খানিকটা একই ।
ওড়িশার চাষিদের দাবি
ওড়িশার চাষিদের মূল দাবি ছিল, কৃষকদের খাতে যাতে সরকার ২১,৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। পেনশন স্কিম হিসাবে চাষিরা প্রতি মাসে ৫০০০ টাকার পেনশন দাবি করেছেন। ফসলের নূ্যতম দাম ৩০০০ টাকা প্রতি কুইন্টাল হিসাবেও ধার্য করার দাবি জানানো হয় ওডি়শাতে।
হরিয়ানার পরিস্থিতি
কিছুদিন
আগে
হরিয়ানার
কৃষকরাও
'দিল্লি
ঘেরাও'
-এর
ডাক
দিয়েছিলেন।
সেখানেও
ঋণ
মুকুব
সমেত
ফসলের
সঠিক
মূল্যের
দাবি
তোলা
হয়।
তবে
এই
আন্দোলনের
আগেই,
একাধিক
কৃষকনেতার
বাডি়তে
তল্লাশি
চালায়
হরিয়ানা
পুলিশ।
গ্রেফতার
করা
হয়
বহু
কৃষক
নেতাকে।
ফলে
,
হরিয়ানার
কৃষকদের
সেই
আন্দোলন
চূড়ান্ত
রূপ
পায়নি।
কৃষক আন্দোলন
বর্তমানে দেশের আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির সাপেক্ষে বিভিন্ন প্রান্তের কৃষক অসন্তোষ একটি বড় ঘটনা। শুধুমাত্র ১৮০ কিলোমিটার পার করে আসা মহারাষ্ট্রের কৃষকদের ইস্যু নয়, এই সমস্যা ক্রমেই চাগার দিচ্ছে অন্যান্য রাজ্যতেও। বহু কৃষক মৃত্য়ুর ঘটনা পেরিয়ে এই বিক্ষোভ, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যা একটি বড় সতর্কবাণী বলে দাবি বহু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞের।