দেশে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা! পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকা
দেশে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আজ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির জন্য নতুন নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণ রোধে বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ।
|
কেন্দ্রের নির্দেশিকা
কেন্দ্রের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অবিলম্বে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরি করে শয্যাসংখ্যা বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে কন্ট্রোল রুমও বানাতে হবে। জেলা, ব্লক বা ওয়ার্ড স্তরেও কন্ট্রোল রুম যেমন রাখতে হবে, তেমনই শুধু করোনার চিকিৎসা হবে এমন স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরিরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মৃদু উপসর্গ থাকা রোগীদের আইসোলেশনে রাখার জন্য প্রয়োজনে হোটেল রুম ব্যবহার করা যাবে বলেও নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা, অ্যাম্বুল্যান্স ও হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যা সংখ্যা রাখার উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যেন কোনও ব্যক্তি ফোন করেই অ্যাম্বুল্যান্স পান এবং শয্যার ব্যবস্থাপনাতেও যেন স্বচ্ছতা বজায় থাকে।

অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরিতে জোর
বিগত কয়েক দিন ধরেই আচমকাই উদ্বেগজনক হারে দেশজুড়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে অস্থায়ী হাসপাতাল তৈরির যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে ডিআরডিও ও সিএসআইআরের সঙ্গে সংযোগরক্ষা করার পাশাপাশি বেসরকারি ক্ষেত্র, কর্পোরেশন, এনজিও ইত্যাদির সঙ্গে হাত মিলিয়েও এই ব্যবস্থা করা যেতে পারে। ফিল্ড হাসপাতাল বা অস্থায়ী হাসপাতাল থাকলে চিকিৎসা পরিকাঠামো নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

কী কী নির্দেশ?
আগেরবারের মতো হোটেল বা অন্য কোনও থাকার জায়গা নিয়ে সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে সেখানে কোভিড-১৯ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে বলেও নির্দেশিকায় জানিয়েছে কেন্দ্র। গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি শিশুদের চিকিৎসাব্যবস্থার দিকেও বিশেষ গুরুত্ব আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব। অক্সিজেন, ওষুধ-সহ করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুর জোগান ঠিক রয়েছে কিনা তা নিয়মিত পর্যালোচনা করতেও বলা হয়েছে।

লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ
উল্লেখ্য, গতকালই দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়ায় ১৬,৬৭৪। বিগত ৭০ দিনে যা সর্বাধিক দৈনিক সংক্রমণ। বাংলায় আজই নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন সাড়ে চার হাজারের উপর ব্যক্তি। প্রতিদিনই এক হাজারের বেশি করে বাড়ছে দৈনিক করোনা সংক্রমণ। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশিরভাগই উপসর্গহীন। উপসর্গহীন রোগীদের বেশিরভাগেরই চিকিৎসা হচ্ছে বাড়িতে। হাসপাতালে ৩ শতাংশের মতো রোগী ভর্তি। করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ নেওয়ার ফলে কেউ গুরুতর অসুস্থ হচ্ছেন না বা মৃতের সংখ্যা এখনও উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছায়নি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে আটটি রাজ্যে করোনা সংক্রমণ সর্বাধিক সেখানে টেস্টিং, হাসপাতালের পরিকাঠামো বৃদ্ধির পাশাপাশি ভ্যাকসিনেশনেও জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।