করোনা লকডাউন : দেশের হাইওয়েগুললিতে এখন পায়ে হাঁটা গরিব মানুষের ঢল!
পরিবহণের কোনও সাধন না পেয়ে হেঁটেই ১০০ কিমি, ২০০ কিমি পাড়ি দিচ্ছেন তাঁরা। জানা গিয়েছে, সোমবার ১২টা অবধি পাওয়া হিসেবে দেশে সংক্রমণের সংখ্যা ১১০০ ছাড়িয়েছে। মৃত ২৯। এই অবস্থায় লকডাউন আরও বাড়তে পারে বলে গুজ ছড়াতেই বড় শহরে থাকা দিনমজুররা নিজেদের গ্রামের দিকে পা বাড়ান। তবে অসুবিধাটা হল ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আর তাই কোনও উপায় না পেয়ে পা ও হাঁটা স্থির করেন অনেকে।
দেশজুড়ে ২১ দিনে লকডাউন
করোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে ২১ দিনে লকডাউন চলছে। বন্ধ রয়েছে রেল পরিষেবা। দিল্লি মেট্রো রেল করপোরেশন জানিয়েছে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে তাদের পরিষেবাও। বন্ধ কলকাতা মেট্রো। যাত্রীদের জন্য বিমান পরিষেবাও পুরোপুরি বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে যে যেখানে আছে সেখানেই থাকার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। তবে গরিব মানুষ কাজ না করে বড় শহরে কতদিন থাকতে পারে? আর তাই বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করেছেন তাঁরা।
দিল্লি সীমান্তে কয়েকশ দিনমজুরের জমায়েত
শনিবারই উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর ও দিল্লি সীমান্তে কয়েকশ দিনমজুর জমায়েত করেছে তাদের নিজেদের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। দেশজুড়ে লকডাউন জারি হওয়ার পর থেকেই দিল্লিতে আটকে পড়েছে উত্তরপ্রদেশ, বিহারের কয়েক হাজার দিনমজুর। এদের মধ্যে অনেকেই পায়ে হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টায় রয়েছে। পরে দিল্লি সরকার বহু মানুষের জন্য বাসের ব্যবস্থা করলেও তা যথেষ্ট ছিল না। বাকিরা ফের হাঁটা শুরু করেন ন্যাশনাল হাইওয়ে দিয়ে।
একই চিত্র দেশের বহু প্রান্তে
এদিকে এ ধরনের আরও এক ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রেও। যেখানে পুনের ২৬ বছরের দৈনিক শ্রমিক ১৩৫ কিমি হেঁটে তাঁর আদিবাড়ি নাগপুরের চন্দ্রপুর জেলার জাম্বে যান। তিনি পুনে থেকে নাগপুর ট্রেনেই এসেছেন, কিন্তু সরকারের লকডাউন ঘোষণার জন্য তিনি নাগপুরে আটকে পড়েন। এরপর ওই শ্রমিক কারোর থেকে সাহায্য না পেয়ে মঙ্গলবার থেকে তাঁর গ্রামের উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করেন। দু'দিন কোনও খাবার ছাড়াই তিনি হাঁটেন। এই সময় শুধু জল খেয়ে ছিলেন তিনি।
কী কারণে গ্রামে ফিরতে শুরু করেছে লোকে?
যে সমস্ত গরীব মানুষ অর্থের জন্য বড় শহরে এসে কাজ করেন, তাঁরা তাঁদের গ্রামে ফিরতে শুরু করে দিয়েছেন। রাস্তা একেবারে জনশূণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সরবরাহের দোকানগুলিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই পটভূমিতে, দৈনিক মজদুর ও দরিদ্র শ্রমিকরা প্রতিদিনের যোগান জোগাড় করতে সংগ্রাম করছে। কোনও সহযোগিতা কারোর থেকে না পেয়ে, হাজার হাজার শ্রমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তাঁরা তাঁদের বাড়িতে ফেরত যাবেন। শান্তি জানিয়েছে যে তার কাছে খাবার অল্প ছিল এবং বুধবার থেকে সে কিছু খায়নি।