লকডাউনে কাজ হারিয়ে অভাবের তাড়নায় তিন হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রি করল দম্পতি
পেটের
জ্বালায়
এক
মহিলা
তাঁর
আড়াই
মাসের
শিশুকন্যাকে
তিনহাজার
টাকার
বিনিময়ে
বিক্রি
করে
দিল।
ঘটনাটি
ঘটেছে
ঘাটালে।
জানা
গিয়েছে,
ওই
মহিলা
পরিচারিকার
কাজ
করতেন
এবং
কোভিড–১৯
সংক্রমণের
কারণে
তাঁর
নিয়োগকর্তা
তাঁকে
কাজে
আসতে
নিষেধ
করে
দেয়।
গত
তিনমাস
ধরে
ওই
মহিলার
কাছে
কোনও
চাকরি
নেই
এবং
তাঁর
দিনমজুর
স্বামীও
পশ্চিম
মেদিনীপুরে।
বাধ্য
হয়েই
মহিলা
তাঁর
সন্তানকে
বেচে
দেন।
বেকার দম্পতির হৃদয় বিদারক কাহিনী প্রকাশ্যে আসে বৃহস্পতিবার। পুলিশ ও চাইল্ডলাইনের আধিকারিকরা ওই শিশুকে হাওড়ার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। শিশুটিকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং তার মা–বাও সেখানে রয়েছে।
ঘাটালের উপ–মহকুমা পুলিশ থানার আধিকারিক অগ্নীশ্বর চৌধুরি জানিয়েছেন যে শিশুটির আসল অভিভাবকের দূর সম্পর্কীয় আত্মীয়ের হাওড়ার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় শিশুটি। তিনি বলেন, 'তদন্তে উঠে আসে যে শিশুটিকে ৩০০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল।’ প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, বাপন ধারা ও তাঁর স্ত্রী তাপসী ঘাচালের বাসিন্দা এবং লকডাউনের কারণে দু’জনেই বেকার হয়ে যান। পুলিশ অফিসার বলেন, 'দম্পতির প্রতিবেশী আমাদের জানিয়েছেন যে তাপসী পরিচারিকার কাজ করেন। কিন্তু করোনার দাপটে অধিকাংশ পরিবারই পরিচারিকাদের আসতে বারণ করে দিয়েছে। তাপসী তাঁর কাজ হারায়। বাপনও দিন মজুর এবং তিনিও এই লকডাউনে কাজ হারিয়ে ফেলে। আমরা জানতে পেরেছি যে তাঁদের সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য তাঁদের সংগ্রাম করতে হয়েছে।’ পুলিশ প্রতিবেশীর কাছ থেকেই জানতে পারে যে তাঁদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় হাওড়ায় থাকে।
পুলিশ অফিসার বলেন, 'প্রথম সূত্র পাই আমরা বাপনের প্রতিবেশির থেকে যে শিশুটিকে কোথাও দেখতে পাচ্ছিল না। তারা শিশুটির কান্নার শব্দ শুনতে পাচ্ছিল না। আমরা যখন বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামি, তখন বাপনের ওই আত্মীয়ের সম্পর্কে জানতে পারি, যাঁরা নিঃসন্তান দম্পতি।’ জেলা শিশু সুরক্ষা অফিসার সন্দীপ কুমার বোস জানান যে শিশুটিকে হাসপাতালে তিন–চারদিন রাখা হবে এরপর তাকে পাঠানো হবে সরকারি হোমে।
ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দলুই জানিয়েছেন যে তিনি এটা কখনই মেনে নেবেন না যে দম্পতি আর্থিক অনটনের জন্য নিজের সন্তানকে বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, 'রাজ্য সরকার দরিদ্রদের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে এসেছে। চাল দেওয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। এছাড়াও অন্য প্রকল্প রয়েছে। এরপরও যদি দম্পতি তাদের সন্তান বিক্রি করে সেটা অভাবনীয়।’