রাজস্থান আর একটা পাঞ্জাব হবে না তো? কংগ্রেসে বেনজির বিদ্রোহের মুখে সাবধানী সোনিয়া
কংগ্রেসে শিখ-বিদ্রোহের পর মরু-ঝড় উঠেছে। আরও একটা চ্যালেঞ্জের মুখে রাহুল-সোনিয়ার নেতৃত্ব। ২০২১-এ পাঞ্জাব কংগ্রেসে বিদ্রোহের খেসারত দিতে হয়েছে। আপের কাছে হারাতে হয়েছে শিখ মসনদ।
কংগ্রেসে শিখ-বিদ্রোহের পর মরু-ঝড় উঠেছে। আরও একটা চ্যালেঞ্জের মুখে রাহুল-সোনিয়ার নেতৃত্ব। ২০২১-এ পাঞ্জাব কংগ্রেসে বিদ্রোহের খেসারত দিতে হয়েছে। আপের কাছে হারাতে হয়েছে শিখ মসনদ। ২০২৩-এ নির্বাচনের আগে রাজস্থানেও সেই একইরকম বিদ্রোহের মুখ পড়েছে কংগ্রেস। গেহলট বনাম পাইলট লড়াইয়ে কূল খোঁজার চেষ্টা করছেন সোনিয়া।
সাবধানী পদক্ষেপ নিতে চাইছেন সোনিয়া
কংগ্রেসে সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজস্থানে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে ধীরে চলো নীতি নিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। বলা চলে তিনি সাবধানী পদক্ষেপ নিতে চাইছেন। কেননা তিনি চাইছেন না কোনও কড়া ব্যবস্থা নিতে গিয়ে আরও একটা পাঞ্জাব হয়ে যাক রাজস্থান।
অশোকের পাল্টা চাপ সোনিয়াকে
সোনিয়া জানেন বিজেপি ওঁত পেতে বসে আছে। একটা ভুল চাল হলেই কংগ্রেসকে ভাঙিয়ে বিজেপি সরকার গড়ে ফেলবে। সম্প্রতি কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে গান্ধীদের ঘনিষ্ঠ গেহলট শিবির থেকে বিদ্রোহ এসেছে। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পর অশোক গেহলট জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না। আর রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁকে রাখা হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নেবেন সোনিয়াজি।
শচীন পাইলট কুর্সিতে বসলে...
অশোক গেহলটকে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী করা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হতেই রাজস্থানের কু্র্সি নিয়ে শুরু হয়েছিল টানাপোড়েন। পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট বসবেন এই আশঙ্কা করে রাজস্থানে গেহলট শিবির বিদ্রোহ শুরু করেছিল। ৮২ বিধায়ক বিদ্রোহী বলে দাবি করা হয়েছি গেহলট শিবিরের পক্ষ থেকে। শচীন পাইলট মুখ্যমন্ত্রী হলে কংগ্রেসের সরকার টিকবে না, এমন আবহ তৈরি করা হয়েছিল।
বিধায়কদের মন বুঝতে চাইছেন সোনিয়া
সোনিয়া গান্ধী অশোক গেহলট ও শচীন পাইলটের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তখন বলেছিলেন রাজস্থানে নিয়ে দুদিনের মধ্যে হাইকম্যান্ড সিদ্ধান্ত জানাবে। তারপর সোনিয়া কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণার পথে না হেঁটে সাবধানী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি জয়পুরে এআইসিসি-র প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রত্যেক বিধায়কের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে চাইছেন তিনি। বিধায়কদের মন বুঝতে চাইছেন।
ঘরের লোক বলে পরিচিতরাই বিদ্রোহে
অশোক গেহলট নাম তুলে নেওয়ার পর কংগ্রেস সভাপতি পদের লড়াইয়ে গান্ধী পরিবার ঘনিষ্ঠ প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উঠে এসেছে মল্লিকার্জুন খাড়গে। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী শশী থারুর। সভাপতি নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের অবসান হলেও রাজস্থান নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে। সভাপতি নির্বাচনের আবহেই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে ঘরের লোক বলে পরিচিত অশোক গেহলটের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের লড়াই।
নির্বাচন আসন্ন, দুজনকেই দরকার কংগ্রেসের
গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বর্তমানে গেহলট ও পাইলট দুজনেই। গেহলটের সঙ্গে গান্ধী পরিবারের যেমন ঘরোয়া সম্পর্ক, তেমনই পাইলটের সঙ্গে রাহুল-প্রিয়াঙ্কার সম্পর্ক খুব কাছের। সোনিয়ারও স্নেহভাজন শচীন পাইলট। তার থেকেও বড় কথা আসন্ন বিধানসভা ও লোকসভা নির্বাচনের আগে দুজনকেই দরকার কংগ্রেসের।
রাজস্থান আরও একটা পাঞ্জাব হয়ে উঠতে পারে
২০১৮-র নির্বাচন শেষে পাইলট বনাম গেহলট যুদ্ধ বেঁধেছিল, তা সামলেছিলেন রাহুল। আবার ২০২০ সালে শচীন পাইলট বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন, তা সামলেছিলেন প্রিয়াঙ্কা। এবার গেহলট শিবিরের বিদ্রোহের সামাল দিলেন সোনিয়া। কিন্তু এত বিদ্রোহ রাজস্থানকে নিয়ে ভাবিয়ে তুলেছে। রাজস্থান কংগ্রেসের আরও একটা পাঞ্জাব হয়ে উঠতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।